তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, এখানে নির্বাচন পরিস্থিতি ভালো। নির্বাচনের পরিবেশ কেউ নষ্ট করছে কি না, সেটা এখন দেখার বিষয়। কেউ যদি নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা দেয়, সেটি নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করার সামিল। নির্বাচন যে কেউ বর্জন করতে পারে। কিন্তু নির্বাচন প্রতিহত করার অধিকার কারও নেই।
আজ সোমবার (২৪ জুলাই) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে তথ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বিএসআরএফের নবনির্বাচিত কমিটির সৌজন্য সাক্ষাৎ ও পরিচিতি সভা অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হকের সঞ্চালনায় এ সময় শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সভাপতি ফসিহ উদ্দীন মাহতাব।
বিএনপি থেকে বলা হচ্ছে, তারা বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না, আর সরকার বিএনপির নেতাদের নামে মামলা দিচ্ছে, এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা চাই বিএনপি পূর্ণ শক্তি নিয়ে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। ২০১৮ সালের মতো নয়, বরং পূর্ণ শক্তি নিয়ে অংশগ্রহণ করুক তারা। একদিকে তারা বলছে নির্বাচনে যাবে না, আবার বলছে আমাদের নির্বাচন থেকে বিরত রাখতে চাচ্ছে। আমরা কাউকে নির্বাচন থেকে বিরত রাখতে চাচ্ছি না। আমরা চাই, বিএনপি নির্বাচনে আসুক এবং সংবিধান মেনে যে নির্বাচন হবে সেখানে অংশ নিক।’
মন্ত্রী বলেন, বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্যের মধ্যেই স্পষ্ট, তারা নির্বাচনে অংশ নিতে চায়, কিন্ত কোনো অদৃশ্য শক্তির কারণে তারা নির্বাচনে আসতে পারছেন না। তাদের নেতৃত্বের কোনো অদৃশ্য শক্তির কারণে নির্বাচনে আসার সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না। এটি মির্জা ফখরুলের বক্তব্যে স্পষ্ট। আমি তাদের অনুরোধ জানাই, অদৃশ্য থাবা থেকে মুক্ত হয়ে বিএনপি দলটাকে জনগণের কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্য।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণ করে বিরোধীদলকে দমনের চেষ্টা করছে এবং জনগণের অধিকার হরণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে-এ বিষয়ের মতামত জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মির্জা ফখরুলকে অনুরোধ জানাব পেছনে ফিরে তাকানোর জন্য। তারা যখন ক্ষমতায় ছিলেন তখন ৫০ লাখ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করতেন। এখন বাংলাদেশে ১৩ কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে। এখন গ্রামের গৃহবধু, স্কুলের শিক্ষার্থী, রিকশাওয়ালা, খেতে কাজ করা ব্যক্তিও এখন ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। এ ইন্টারনেট সার্বজনীন করেছে বর্তমান সরকার।’
তিনি বলেন, ২০০৮ সালে আমাদের স্লোগানই ছিল ডিজিটাল বাংলাদেশ। কারণ ডিজিটাল বাংলাদেশের অন্যতম লক্ষ্য ছিল সবার কাছে ইন্টারনেট সহজলভ্য করা। গ্রামে গ্রামে ব্রডব্যান্ড সংযোগ দেওয়া। গ্রামে বসে ইন্টারনেটের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা ইনকাম করে এমন অনেক যুবক আছে। আমরা কোনোভাবে ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণ করি না বরং সহজলভ্যতার সুযোগ গ্রহণ করে বিএনপি সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী থেকে শুরু হরে সরকারদলীয় নেতাদের চরিত্র হনন করছে।
মন্ত্রী বলেন, যারা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বসে সরকারের বিরুদ্ধে সরকারের মন্ত্রীদের বা সরকারি দলের নেতাদের চরিত্র হনন করে তাদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করে তারেক রহমান। সেই বৈঠকের ছবিও আমাদের কাছে আছে। এটা কেবল ইন্টারনেট সহজলভ্য হওয়ার কারণে করতে পারছে, যা কখনো সমীচীন না। এগুলো ডিজিটাল অপরাধ। ডিজিটাল অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সারা পৃথিবীতে আইন আছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন সম্প্রতি একটি আইন পাস করেছে। সেখানে অনেক দেশ মত দিয়ে আইন পাস করেছে। আমরা এখনো করিনি।
তিনি বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ডিজিটাল অরাধীদের পক্ষে সাফাই গাওয়ার জন্য কাল সংবাদ সম্মেলন করছেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সরকারকে ধন্যবাদ জানানো দরকার। কারণ তিনি ভিডিও কনফারেন্সে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। দলের চেয়ারম্যানের সঙ্গে মিটিং করেন সেটা শেখ হাসিনার জন্য হয়েছে। এ জন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানানো দরকার৷
যুক্তরাষ্ট্র থেকে দ্বিতীয় আরও একটি পর্যবেক্ষক দল আগামী ২৮ জুলাই ঢাকায় আসবে, তারা নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে একটি প্রতিবেদনও দেবে, এ বিষয়ে আপনার বক্তব্য কি জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, প্রতিনিধি দল আসতেই পারে, আসলে ভালো। বাংলাদেশের নির্বাচন কেমন হবে সেটা দেখার আগ্রহ প্রকাশ করছে। আমরাও চাই তারা আসুক, নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করুক।