মোঃ সাজেদুল ইসলাম, বেরোবি প্রতিনিধি:
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) অর্থনীতি বিভাগের প্রভাষক পদে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল বৃহস্পতিবার। তবে এই পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য আবেদন করলেও ডাক পাননি একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী স্বল্পনা রানী। স্বল্পনা রানী অর্থনীতি বিভাগের ২০০৮-০৯ সেশনের শিক্ষার্থী। তিনি ভালো ফলাফলের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে স্বর্ণপদক পেয়েছিলেন। অভিযোগ রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দিতে তাকে পরীক্ষার সুযোগ না দিয়ে ঈদের ছুটিতে তড়িঘড়ি করে পরীক্ষা নিচ্ছে।
তবে স্বল্পনা একাই নয় কিছুদিন আগে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের প্রধানমন্ত্রীর স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত আরেক প্রার্থী জোবেদা আক্তারকেও সুযোগ না দেওয়ার ঘটনা ঘটেছিল। এ ঘটনায় জোবেদা আক্তার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দেড় দশক হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত নিজ প্রতিষ্ঠানের মাত্র একজন শিক্ষার্থী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষোভ প্রকাশ করে নিয়োগে নিজেদের শিক্ষার্থীদের প্রাধান্য দেওয়ার দাবী জানিয়ে আসছিলেন শিক্ষার্থীরা। যদিও নিজ শিক্ষার্থীদের নিয়োগের ক্ষেত্রে বরাবরই উদাসীন বেরোবি প্রশাসন।
জানা যায়, ৩ এপ্রিল থেকে ঈদের ছুটির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিস আগামী ৭ এপ্রিল থেকে বন্ধ হওয়ার কথা থাকলেও কার্যত আজ বুধবার থেকে বন্ধ হয়ে গেছে। কেনোনা দীর্ঘদিন ধরে সাপ্তাহিক দুদিন ছুটির পাশাপাশি বৃহস্পতিবারও বন্ধ থাকে বেরোবি। ফলে বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার (৪,৫ ও ৬ এপ্রিল) ছুটির দিন হওয়ায় কার্যত আজ বুধবারই (৩ এপ্রিল) ছিল শেষ কার্য দিবস। ফলে প্রশ্ন উঠেছে ঈদের ছুটির মধ্যেও কেনো শিক্ষক নিয়োগের মতো একটা গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা নেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে বেরোবি প্রশাসন।
স্বল্পনা রানী অর্থনীতি বিভাগ থেকে স্নাতকে ৩.৭৫ ও স্নাতকোত্তরে ৩.৭৮ সিজিপিএ অর্জন করেছিলেন। এছাড়াও তিনি এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়েছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি বিভাগ থেকে প্রভাষক পদে বিঙ্গপ্তি প্রকাশ করলে তিনি আবেদনপত্র জমা দিয়ে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। যদিও তাকে নিয়োগ পরীক্ষার জন্য চিঠি দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বল্পনা রানী বলেন, আমি সব প্রক্রিয়া মেনে আবেদন করলেও বুধবার পর্যন্ত কোনো চিঠি বা ম্যাসেজ পাইনি। শুনেছি বৃহস্পতিবার প্রভাষক পদে পরীক্ষা নেবে প্রশাসন। আমাকে কেনো বা কী কারণে পরীক্ষার জন্য ডাকা হয়নি তা জানা নেই।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, স্বল্পনা রানী একটা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন। নিয়ম অনুযায়ী তিনি যথাযথ প্রক্রিয়ায় আবেদন করেননি তাই তাকে পরীক্ষার জন্য ডাকা হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী আলমগীর চৌধুরীকে কল দেওয়া হলে তিনি গাড়িতে আছেন বলে ফোন রেখে দেন।
স্বল্পনা রানীকে কেনো পরীক্ষার কার্ড দেওয়া হলো না এমন প্রশ্নে অর্থনীতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মোরশেদ হোসেন কোনো মন্তব্য করতে রাজী হননি।