প্রায় ২০ বছর আগে শেষ বিশ্বকাপ জিতেছে ব্রাজিল। মাঝে ২০১৪ সালে ঘরের মাঠে হওয়া আসরে সেমিফাইনাল খেলেছে সর্বোচ্চ পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নরা। ২০০২ সালে ব্রাজিলের শেষ শিরোপাজয়ী দলে ছিলেন তারকা ফুটবলার কাকা। এবার ২০২২ সালেও দলের ভালো সম্ভাবনা দেখছেন তিনি।
বেশ কয়েক বছর ধরেই ব্রাজিলের আশা-ভরসার প্রতীক নেইমার জুনিয়র। তার হাত ধরেই ২০১৩ সালের কনফেডারেশন্স কাপ ও ২০১৬ সালে অলিম্পিক জিতেছে ব্রাজিল। এছাড়া ২০১৯ সালের কোপা আমেরিকা জয়েও বড় অবদান রেখেছেন নেইমার।
তাই নিজের অনুজকে নিয়ে কোনো সন্দেহই নেই কাকার। বরং এবার দলে রাফিনহা, ভিনিসিয়াস জুনিয়র, অ্যান্টনিওর মতো তরুণরা থাকায় নেইমার আরও ভালো করবেন বলে আশাবাদী কাকা। ফিফা প্লাসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নেইমারকে নিয়ে খোলামেলা প্রশংসাই করেছেন তিনি।
কাকা বলেছেন, ‘(ব্রাজিলের) বর্তমান প্রজন্মটা সফল প্রজন্ম। এরই মধ্যে অলিম্পিক জিতেছে। তারা বেশ ভালোভাবেই এগোচ্ছে যা বিশ্বকাপের জন্য আদর্শ। আমি রাফিনহা, ভিনিসিয়াস জুনিয়র, অ্যান্টনিওর কথাই যদি বলি, তারা নিজ নিজ ক্লাবের হয়ে দারুণ ফর্মে রয়েছে এবং জাতীয় দলেও এর প্রতিফলন ঘটাচ্ছে।’
নেইমারের প্রসঙ্গ টেনে তিনি আরও যোগ করেন, ‘নেইমার… নেইমারের ব্যাপারে কিছু বলারই প্রয়োজন নেই। আমার মতে, দায়িত্ব ভাগ করে নেওয়ার জন্য অন্যরা থাকায় এখন নেইমারের জন্য ভালো করার সুযোগ অনেক বেড়েছে। শেষ ম্যাচগুলোতে আমরা দেখেছি, ব্রাজিল এখন আর নেইমারের একার ওপর নির্ভরশীল নয়।’
‘যা তার জন্য বেশ উপকারী। কারণ এখন সে শান্ত থেকে গোছানোভাবে নিজের খেলা এগিয়ে নিতে পারবে। সবাই যা চায়, সে সেটি করে দেখাতে পারবে। সে একজন ফল নির্ধারণী খেলোয়াড়। যখন খুশি ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দিতে পারে। তো আমার মতে, এটি (তরুণদের উপস্থিতি) খুব সাহায্য করবে।’
এসময় দলের হেড কোচ তিতেকে নিয়েও ইতিবাচক আশা প্রকাশ করেন কাকা। তার মতে, গত ছয় বছর ধরে ভালো একটা দল দাঁড় করাতে পেরেছেন তিতে। যা আসন্ন বিশ্বকাপে ব্রাজিলকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে। এছাড়া ২০১৮ বিশ্বকাপে ব্যর্থতার পরেও তিতেকে বহিষ্কার না করায় খুশি হয়েছেন কাকা।
তিনি বলেন, ‘২০১৮ বিশ্বকাপের পর তিতের অধীনে আমি মনে করি, বেশ ভালো হচ্ছে সবকিছু। ব্রাজিলে সাধারণত একজন কোচ একটি বিশ্বকাপ পর্যন্তই সময় পায়। তিতেকে দায়িত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছিল। বিশ্বকাপের দুই বছর আগে সে দায়িত্ব নিয়েছে।’
‘আর যেমনটা দেখা যায়, বিশ্বকাপে ভালো ফল না এলে কোচকে বিদায় বলে দেওয়া হয়। তিতের বেলায় সেটি হয়নি। যা আমার কাছে ইতিবাচক মনে হয়েছে। তো আমরা এখন ছয় বছরের চক্রের কথা বলছি। তিতে এখন ভিন্ন পরিকল্পনা ভিন্ন দল নিয়ে এগোতে পারবে। অনেক খেলোয়াড়কে সে নিজেই বেড়ে উঠতে দেখেছে। তো এসব প্রক্রিয়া মিলে ব্রাজিলের জন্য ভালো হয়েছে।’
‘পরিসংখ্যানও এ কথাই জানায়। চ্যাম্পিয়ন হয়ে বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করা। সব টুর্নামেন্টে শিরোপার দাবিদার হিসেবে যাওয়া, যদিও সবশেষ কোপা আমেরিকা জিততে পারেনি। তবে ফাইনাল খেলেছে। এছাড়া পেরুকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, আগেও একবার জিতেছে। তো এই পরিসংখ্যান আসলে এ বার্তাই দেয় যে, এর পেছনে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও পদক্ষেপ ছিল।’