ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তার দেশকে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র সরবরাহ করার বিষয়ে সম্প্রতি যে সমালোচনা করেছেন তাতে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে হোয়াইট হাউস। একই সঙ্গে নেতানিয়াহুর বিবৃতির নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পর্ষদের মুখপাত্র জন কিরবি গণমাধ্যমকে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘ওই মন্তব্যগুলো ছিল অত্যন্ত হতাশাব্যঞ্জক এবং আমরা যে পরিমাণ সমর্থন তাদের দিয়েছি এবং দেব তার প্রেক্ষাপটে এটা ছিল অত্যন্ত বিরক্তিকর বিবৃতি।’
কিরবি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র তার অসন্তুষ্টির কথা সরাসরি ইসরায়েলকে জানিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় ওই ভিডিওতে দেওয়া বিবৃতি এবং বিবৃতির শুদ্ধতা সম্পর্কে আমরা আমাদের হতাশার কথা নানান মাধ্যমে ইসরায়েলকে যথেষ্ট পরিস্কার করে জানিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই ধারণা যে আত্মরক্ষা ব্যাপারে ইসরায়েলকে সাহায্য করা আমরা কোনোভাবে বন্ধ করে দিয়েছি, তা কোনো মতেই ঠিক নয়।’
হোয়াইট হাউসের এ মন্তব্যগুলো এমন এক সময়ে এলো যখন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেইক সালিভান ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন গাজায় চলমান যুদ্ধ নিয়ে নেতানিয়াহুর দুজন শীর্ষ সহযোগীর সঙ্গে বৈঠক চলছে।
এর আগে মঙ্গলবার প্রকাশিত একটি ভিডিও বিবৃতিতে নেতানিয়াহু বলেছেন, হামাসের বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধে ইসরায়েলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে তিনি যদিও কৃতজ্ঞ। তবে এটা ধারণার বাইরে যে গত কয়েক মাস (যুক্তরাষ্ট্রের) প্রশাসন ইসরায়েলেকে অস্ত্রশস্ত্র এবং সাজসরঞ্জাম দিচ্ছে না।
যুক্তরাষ্ট্র অবশ্য বলেছে, ৯০০ কিলোগ্রাম ও ২০০ কিলোগ্রাম ওজনের বোমা সম্বলিত একটি মাত্র চালান এমন উদ্বেগের কারণে বিরতি দেওয়া হয়েছে যে এগুলো গাজার জন-অধ্যূষিত এলাকায় কিভাবে ব্যবহার করা হবে। যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ইসরাইল আরও কয়েক বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।
ইতোমধ্যেই বৃহস্পতিবার জাতিসঙ্ঘের ৩০ জন বিশেষজ্ঞ-সংবলিত একটি দল সতর্ক করে দিয়েছে যে অস্ত্রশস্ত্রের যে সব নির্মাতা ইসরায়েলকে অস্ত্র দেওয়া অব্যাহত রাখবে তারা মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক আইনলঙ্ঘনে যুক্ত বলে মনে করা হতে পারে।
গত ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামলা চালাল। ইসরায়েলের হিসাব অনুযায়ী, হামাসের ওই হামলায় এক হাজার ২০০ লোক নিহত হয় এবং আরও ২৫০ জনকে বন্দি করা হয়।
ইসরায়েলের পাল্টা আক্রমণে গাজার বেশিভাগ এলাকা ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়। হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, এই আক্রমণে ৩৭ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত এবং আরও ৮৫ হাজার ৬০০ জন আহত হয়।
খবর ডেইলি সাবাহ