একজন তৃতীয় শ্রেণীর সরকারি কর্মচারী। কিন্তু সোনারগাঁওসহ নামীদামি সব হোটেলে তার নিয়মিত যাতায়াত। ভ্রমণ করেছেন অস্ট্রেলিয়াসহ ৫টি দেশ।
নোয়াখালী জেলা আদালতের নাজির আলমগীর এবং পেশকার স্ত্রীর এমন অবিশ্বাস্য জীবনযাত্রার কথা উঠে এসেছে তাদের বিরুদ্ধে দেওয়া অভিযোগপত্রে। এই দম্পতির বিরুদ্ধে বিদেশে ২৭ কোটি টাকা পাচারের প্রাথমিক প্রমাণও পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন।
দুদক আইনজীবী জানান, দেশেই ৭ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের মালিক আলমগীর ও নাজমুন্নাহার দম্পতি।কথিত আছে, আদালতের ইটও নাকি ঘুষ খায়। এবার যেন তার জলজ্যান্ত প্রমাণ মিলল। ২৩ বছর আগে নোয়াখালী আদালতের স্ট্রেনোগ্রাফার হিসেবে চাকরিতে যোগদান করেন আলমগীর হোসেন। সেসময় পৈতৃক বাড়ি ছাড়া তার কিছুই ছিল না। কিন্তু হঠাৎ যেন আলাদীনের জাদুর চেরাগ হাতে পান আলমগীর। মাত্র কয়েক বছরে হয়েছেন কোটি কোটি টাকার মালিক।
গ্রামের বাড়ি থেকে ঢাকা এলেই আলমগীর থাকেন সোনারগাঁওসহ ৫ তারকা মানের হোটেলে। তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী হয়েও আনন্দ ভ্রমণে গেছেন অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশ।দুদকের দেওয়া চার্জশিটে দেখা যায়, আলমগীর আর তার পেশকার স্ত্রী নাজমুন্নাহারের নামে আছে ৭ কোটি টাকার অবৈধ সম্পত্তি। আর বিভিন্ন সময় দেশের বাইরে পাচার করেছেন প্রায় ২৭ কোটি টাকা।
দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, প্রতিমাসে ডিপিএস রাখেন ৫১ হাজার টাকা। চার-পাঁচটা দেশ-বিদেশ ভ্রমণ করেন। গ্রামের বাড়ি থেকে ঢাকা এলেই আলমগীর থাকেন সোনারগাঁওসহ ৫ তারকা মানের হোটেলে।দুদকের জালে যখন রাঘব বোয়ালরা ধরাশায়ী তখন এ মামলার ন্যায়বিচার পাওয়া নিয়ে শঙ্কা তৈরি হওয়ায় হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে হয়েছে দুদককে।বিচার বিভাগের দুর্নীতি বন্ধে বিচারক ও আইনজীবী উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, আইনজীবীরা কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের দুর্নীতিগ্রস্ত করতে না চান। তাহলে সেখানে দুর্নীতি হতে পারে না। সেখানকার বিচারপতিকে সব দিকে নজর দিতে হবে।
শুধু এই দম্পতিই নয়, আদালত অঙ্গনে ঘাপটি মেরে থাকা এমন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের খুঁজে বের করার দাবি জানিয়েছেন তারা।