মোঃ আফ্ফান হোসাইন আজমীর, রংপুর প্রতিনিধিঃ প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছেন, দেশের সংবিধান অনুযায়ী একজন নাগরিকের ন্যায্য বিচার প্রাপ্তি তার মৌলিক অধিকার।
২৩ মে বৃহস্পতিবার সকালে রংপুর জেলা জজ কোর্ট এলাকায় নবনির্মিত ন্যায়কুঞ্জ ভবন উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, সবাই যাতে সুষ্ঠুভাবে ন্যায্য বিচার পান, সে লক্ষ্যই কাজ করে যাচ্ছে বিচার বিভাগ। সারাদেশে জেলা জজ এলাকায় বিচার প্রার্থীদের সুষ্ঠুভাবে বিচার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য এবং বিচার প্রার্থীদের অপেক্ষা করার সুবিধার্থে এই ন্যায়কুঞ্জ তৈরি করা হয়েছে।
ন্যায়কুঞ্জ উদ্বোধনকালে হাইকোর্টের বিচারপতি এ কে এম সাইফুর রহমান, রংপুরের জেলা জজ এবং বিভিন্ন আদালতের বিচারকগণ উপস্থিত ছিলেন।
ন্যায়কুঞ্জ উদ্বোধনের পর প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান রংপুরের বিভিন্ন বিভাগের বিচারকদের সাথে মতবিনিময়ে মিলিত হন।
প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছেন, ন্যায়বিচার মানুষের মৌলিক অধিকার। প্রত্যেক নাগরিকের ন্যায়বিচার প্রাপ্তির অধিকার রয়েছে। ন্যায়বিচার প্রাপ্তির কাজটি করে বিচারক। অনেক সময় বিচার প্রার্থীকে ডেকে পান না। বিশ্রামের জায়গা না থাকায় বিচার প্রার্থীরা এদিক-ওদিক ঘোরাঘুরি করে। ন্যায়কুঞ্জ এ সমস্যার দূর করবে এবং বিচার কার্যে আরও গতি আসবে।
বৃহস্পতিবার সকালে রংপুর আদালত চত্বরে বিশ্রামাগার ‘ন্যায়কুঞ্জ’ এর উদ্বোধন শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, আমি রংপুরের বিচার বিভাগ কেমন চলছে তা এখানকার বিচারকদের সাথে কথা বলে জানবো। আমি আশা করবো বিচারকদের অক্লান্ত পরিশ্রমে বিচারের দীর্ঘসূত্রতাসহ অন্যান্য সমস্যা দূরীভূত হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা দেখেছি পুরাতন আদালতে বড়গাছের তলায় বিচারপ্রার্থীরা এসে অপেক্ষা করতো। নতুন আদালতগুলোতে তেমন গাছ নেই। বিচারপ্রার্থীদের বিশ্রামাগারের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে প্রস্তাব দিলে তিনি গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করেন। সারাদেশে ৬৪টি জেলায় ন্যায় কুঞ্জেরমত স্থাপনা নির্মাণ করা হবে। মামলার জামিনে থাকা আসামি, সাক্ষীসহ বিচার প্রার্থীরা ন্যায় কুঞ্জে বিশ্রাম নিতে পারবেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন রংপুর সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ ফজলে খোদা মো. নাজির, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান, জেলা পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলী চৌধুরী, আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল মালেকসহ রংপুরের বিচারকবৃন্দ।
উল্লেখ্য, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ৫৩ লাখ ২২ হাজার টাকা ব্যয়ে রংপুর আদালত চত্বরে একতলা বিশিষ্ট এক হাজার বর্গফুটের সেমিপাকা ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এতে অপেক্ষমাণ কক্ষ, মাতৃদুগ্ধ পানকক্ষ, পুরুষ ও নারীদের আলাদা টয়লেট, খাবার খাওয়ার জন্য ক্যান্টিন, সুপেয় পানি এবং অগ্নিনির্বাপকের ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া সার্বিক নিরাপত্তার জন্য কক্ষটিকে সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে।