আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর বরাদ্দ পেলেও আজও বরাদ্দের ঘরে উঠতে পারেনি অসহায় মরিয়ম- শাহআলম দম্পতি। তাদের নামে দলিল মুলে যে ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সেই ঘরে রঞ্জু নামে একব্যক্তি ও প্রভাবশালী একটি চক্রের সহযোগীতায় এবং ম্যানেজ প্রক্রিয়ায় সেই ঘর রজিফা বেগম দখল করে থাকায় অসহায় এ দম্পতি কে ঘর ফিরে পেতে দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হচ্ছে। এঘটনায় গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক বরাবরে গত ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ইং তারিখে অভিযোগ প্রদান করেছে ভুক্তভোগী মরিয়ম বেগম।
জানা যায়, পলাশবাড়ী উপজেলার হোসেনপুর ইউনিয়নের বাহিরডাঙ্গা মৌজায় ১ নং খতিয়ানের ৩৩ নং দাগে জমিসহ দ্বি কক্ষ সেমি পাকা ঘর গত ৯/৮/২০২৩ ইং তারিখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনার পর জমির দলিল ও সনদপত্র এবং উক্ত দাগে থাকা ৭৮ নাম্বার ঘরটি মরিয়ম ও শাহআলম দম্পতিকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। এরপর উক্ত ঘরে অবস্থান করতে থাকাকালে গত ২০২২ সালে ১৮ জুলাই বরাদ্দ প্রাপ্ত রজিফা বেগম নামের ব্যক্তি নিজের বরাদ্দ প্রাপ্ত ঘরে না থেকে মরিয়ম – শাহআলম দম্পতি বরাদ্দের ঘর জোরপূর্বক দখল করে। এরপর হতে উক্ত বিষয়ে উপজেলা সহকারি কমিশনার ভূমি, উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নিকট মৌখিক অভিযোগ দিয়ে কোন সুরহা না পাওয়া জেলা প্রশাসকের প্রয়োজনীয় হস্তক্ষেপ কামনা করে অভিযোগ প্রদান করে ভুক্তভোগী এ পরিবারটি।
বর্তমান ভূমিহীন অসহায় পরিবারটি বরাদ্দের ঘর বুঝিয়ে না পাওয়ায় অন্যের বসতবাড়ীতে মানববেতর জীবন যাপন করছে। ভুক্তভোগী মরিয়ম – শাহআলম দম্পতি দাবী করেন, দীর্ঘদিন হলো দ্বারে দ্বারে ঘুরে কোথাও ন্যায় বিচার পেলাম না। এখনও নিজের বরাদ্দ ঘরে বুঝিয়ে না পেয়ে অন্যের বাড়ীতে চিরচেনা ভূমিহীনের মতো জীবন যাপন করছি৷ আমার ১ বছর আগে রজিফা বেগম ঘর বরাদ্দ পেয়েছে। তারা সেখানে একটি ঘরে বসবাস করে কিন্তু স্থানীয় একটি চক্রের সহযোগীতায় নিজেদের বরাদ্দের ঘরে না থেকে আমাদের বরাদ্দের ঘরে জোরপূর্বক দখল করে আছে। আমরা প্রকৃত ঘটনায় তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের মায়ের নিকট সহ আশ্রয়ণ প্রকল্পের সংশ্লিষ্টদের নিকট প্রয়োজনীয় হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এবিষয়ে পলাশবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুল হাসান জানান,এক প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, মরিয়ম শাহআলম দম্পতি বরাদ্দের ঘরে বসবাস না করায় বিগত সময়ে উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে রজিফা বেগম কে ঘরটি পরবর্তীতে দেওয়া হয়। এরপর হতে রজিফা নিজের মতো করে বসবাস করে আসছে।এখন মরিয়ম ও শাহআলম দম্পত্তিকে উক্ত দাগের মধ্যে অন্য ঘর দেওয়া হলেও তারা সেই ঘর না নিয়ে রজিফা বেগমের বর্তমান ঘরটিতে বসবাস করার জন্য ও ফিরে পেতে এ বিষয়ে বিভিন্ন অভিযোগ করছে৷ উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে একাধিকবার এ বিষয়টির সমাধান করার চেষ্টা করে হয়েছে এবং তা চলমান রয়েছে।
উল্লেখ্য, বিশেষ সূত্রে জানা যায় মরিয়ম শাহআলম দম্পতির ঘর দখলকারি রজিফা বেগম স্থানীয় এবং উক্ত এলাকায় তার সন্তানদের পাকা বাড়ী থাকলেও মাকে ভূমিহীন বানিয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পে মায়ের নামে ঘর নিয়েছে রজিফা বেগমের পুত্র রঞ্জু মিয়া। অথচ একাধিক ভূমিহীন পরিবার ঘর বরাদ্দ না পেয়ে এখানো উক্ত আশ্রয়ণ প্রকল্পে মানববেতর জীবন যাপন করছে।