পাবনার সাঁথিা উপজেলার ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে দেওয়া ঘর দিতে চাঁদা দাবি করার অভিযোগ উঠেছে আবু দাউদ নান্নু নামে এক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে।
অভিযুক্ত আবু দাউদ নান্নু উপজেলার করমজা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
এরই আলোকে মমতাজ বেগম নামে ওই গৃহহীন গৃহবধূ একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন উপজেলা নির্বাহী কার্যালয়ে। প্রাথমিক তদন্তে সেই অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
মুজিবশতবর্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে একটি ঘর বরাদ্দ পান সাঁথিয়া উপজেলার করমজা ইউনিয়নের হতদরিদ্র মমতাজ বেগম। এরই মধ্যে লটারির মাধ্যমে নির্ধারিত মল্লিকপাড়া প্রকল্পের পাঁচ নম্বর বাড়ির চাবি বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে মমতাজকে। কিন্তু করমজা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু দাউদ নান্নু ওই ঘর বাবদ তার কাছে ৫৫ হাজার টাকা দাবি করেছেন। এরই মধ্যে নান্নুর স্ত্রী নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে তার কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা নিয়েছেন। বাকি ৫০ হাজার টাকা আগামী সাতদিনের মধ্যে না দিলে তার ঘরের চাবি কেড়ে নেওয়া হবে বলেও হুমকি দেওয়া হচ্ছে। নিরুপায় হলে দরিদ্র মমতাজ গত ১১ এপ্রিল সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে এ বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন করেন।
সাঁথিয়া উপজেলার শেষ প্রাপ্ত আর বেড়া উপজেলার শুরুতে অবস্থিত এ ইউনিয়নে সরকারি খাঁস জামিতে পাশাপাশি দু’টি স্থানে গৃহহীনদের জন্য প্রায় ৫০টি ঘর নির্মাণ করে দিচ্ছে সরকার।
ভুক্তভোগী মমতাজ বেগম ও তার স্বামী ফজর মণ্ডল বলেন, অন্যের জায়গায় দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছি। প্রধানমন্ত্রী আমাগো জন্যি ঘর দিছেন। সেই ঘর লটারির মাধ্যমে পাইছি আমি। ঘরের চাবিও দিছে আমাক। কিন্তু ঘরে ওঠার আগে আমার কাছে টাকা চাইছে নেতা। কিছু টাকা যুগার করে দিছি আর বাকি টাকার জন্য আমাক খালি ফোন দেচ্ছে। পরে আমার বাড়ির পরেও আয়ছিলো। উপায়ন্ত না পায়ে পরে অভিযোগ করেছি। এখন আমার কাছে আসে ঘোরতেছে। নতুন ঘরের বিদ্যুৎ সংযোগ এখনো বসানে হয়নি। তাই ঘরের উঠতে পারতিছিনে।
অভিযোগ অস্বীকার করে আবু দাউদ নান্নু বলেন, এটি আমার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করছি। কখনো কারো সঙ্গে দুই নম্বরি করিনি। সামনে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ও দলীয় কাউন্সিল। আমার প্রতিপক্ষ আমাকে ঘায়েল করার জন্য ওই গৃহহীন নারীকে দিয়ে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করিয়েছে। এ ঘটনার সঠিক তদন্ত করলে প্রকৃত রহস্য বেরিয়ে আসবে।
সাঁথিয়া ইউএনও জামাল আহম্মেদ বলেন, এ বিষয়ে আমরা একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা কিছুটা পাওয়া গেছে। দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক প্রিন্স বলেন, দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় এমন কাজ থেকে দলের সব নেতাকর্মীকে সতর্ক থাকতে হবে। কোনো নেতাকর্মী প্রধানমন্ত্রীর একটি ভালো কাজকে প্রশ্নবিদ্ধ করলে, দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করলে- তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ঘটনার সঠিক তদন্ত করে অভিযোগ প্রমাণ হলে, তার বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সূত্র : বাংলা নিউজ