1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০১:১৯ অপরাহ্ন

পোস্তগোলা – লোহারপুল সরু রাস্তায় মরনাতঙ্ক ভারী ট্রাক ও লরি

মুস্তাকিম নিবিড়
  • আপডেট : বৃহস্পতিবার, ২২ জুন, ২০২৩

ঢাকা-পাগলা-নারায়নগঞ্জ ভারী ট্রাক চলাচলে প্রতিনিয়ত যে রাস্তাটি ব্যবহৃত হয়, সেটি নিছক লোকালয় বললেও ভুল হবে না। রাজধানীর পোস্তগোলার পর থেকে সূত্রাপুর লোহারপুল পর্যন্ত দীর্ঘ ৪ কিলোমিটার সরু রাস্তার আশপাশে ঘনবসতি। রাস্তার পাশেই প্রতিটি বাড়ির সম্মুখ দরজা।জনসাধারণ চলাচলে এ রাস্তাটি ব্যবহৃত হয়। সারাদিন রিক্সা সহ ছোট এবং মাঝারি ব্যক্তিগত যানবাহন চলে কেবি রোড, হরিচরণ রায় রোড, আইজি গেট, আরসিন গেট, করিমুল্লার বাগ এর মাঝামাঝি অবস্থিত এই সরু রাস্তাটিতে। স্থানীয় জনগণের চলাচলের জন্য এই সরু রাস্তাটিই একমাত্র ভরসা।

কিন্তু যুগের পর যুগ ধরে এই রাস্তাটি ব্যবহৃত হচ্ছে ঢাকা হতে পোস্তগোলা পাগলা নারায়ণগঞ্জ মুন্সিগঞ্জ গামী ভারী ট্রাক চলাচলে। লোকালয় দিয়ে চলমান এ রাস্তাটিতে প্রতিনিয়তই প্রাণহানির মত দুর্ঘটনা ঘটে। তাছাড়া ছোটখাটো দুর্ঘটনা তো নিত্যনৈমত্তিক ঘটনা।  রাতের সাড়ে দশটা থেকে এগারো টার পর ট্রাক চলাচলের বিধি থাকলেও-আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখে ফাঁকি দিয়েই সারাদিনই কমবেশি চলাচল করছে ভারী  ট্রাক ও লরি।

 

রাত হলে লোকালয়ের এই সরু রাস্তায় ট্রাক চলাচল করে বেপরোয়া গতিতে। ওভার টেকিং করে – একে অপরের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে উচ্চ গতিতে ছুটে বেড়ায় ভারী ট্রাক ও লরি। সে সময় এলাকাবাসী রাস্তায় নামতেও ভয় পায়। দিন দুপুরে কিংবা সন্ধ্যাবেলায় কোমলমতি শিশু বৃদ্ধ অসুস্থরা যেন এ রাস্তায় বের হলেই বেপরোয়া গতির ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হওয়ার আতঙ্কে থাকে। বিগত মাস দুয়েক আগেও হরিচরণ রায় রোডস্থ উক্ত রাস্তায় ভারী ট্রাক চাপায় নির্মমভাবে প্রাণহানি ঘটে একজন মোটরসাইকেল আরোহীর। প্রায়শই এমন পৃথক পৃথক ঘটনা ঘটে বলে জানানযায়। বেপরোয়া একটি ট্রাক কিছুদিন আগে ৪৬ নং কে,বি রোড এর একটি বাড়ি ভেঙে ভেতরে ঢুকে যায়, আর গতকাল মধ্যরাতেও একই কাণ্ড করে বসে আরেকটি ট্রাক। বেপরোয়া গতিতে ৪৫ নং হোল্ডিং এর একটি বাড়ির দেয়াল ভেঙ্গে ঢুকে পড়ে, বাহ্যিক ক্ষয়ক্ষতি হলেও একটুর জন্য  প্রাণহানি থেকে রেহাই পায় সেই বাড়ির বাসিন্দারা।  আর প্রায় সময় ট্রাকগুলো ছোট যানবাহন গুলোকে পিষ্ট করে বেপরোয়া চলাচল করে, বিভিন্ন সূত্রে জানা যায় নিয়ন্ত্রণহীন গতিতে ট্রাকগুলো ঢুকে পড়ে কারো না কারো বাড়ির দেয়াল ভেঙে। এ সময় বাসা বাড়ির ঘুমন্ত লোকজনরাও থাকে ট্রাক চাপায় পিষ্ঠ হওয়ার আতঙ্কে।

বেপরোয়া গতিতে লোকালয়ের সরু রাস্তায় ট্রাকগুলো চলাচল করে, এবং নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রায় সময় কারো দোকান ভেঙে ঢুকে পড়ছে, দেয়াল ভেঙে ঢুকে পড়ছে কারো না কারো বাসায়। রিক্সা ভ্যান সিএনজি হরহামেশাই চাপা পড়ছে এসব দানবীয় ট্রাক ও লরির কাছে।

লোকালয়ে ঢুকে পড়া বেপরোয়া এসব ট্রাক ও লরির আক্রমণ দুর্ঘটনা হতে নিস্তার পেতে অতীতে কয়েকবার এলাকাবাসীর সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে সিটি কর্পোরেশন সহ সংশ্লিষ্ট দফতর গুলোতে লোকালয়ের সরু রাস্তায় ভারী ট্রাকজান চলাচল বন্ধের জন্য অভিযোগ করে। যদিও তাদের এই যৌক্তিক দাবি কখনো আলোর মুখ দেখেনি। তাই হরহামেশাই কেউ না কেউ পিষ্ট হচ্ছে ট্রাক চাপায়, রাস্তা পারাপারে জীবন ঝুঁকিতে রয়েছে শিশু, বৃদ্ধ সহ সকল শ্রেণী পেশার স্থানীয় জনগণ এবং পথচারী।

ভারী ট্রাক যান ও লরি চলাচলের জন্য বিকল্প অনেক সড়ক থাকলেও সেই ব্রিটিশ আমল থেকে লোকালয়ের এই সরু রাস্তা দিয়েই চলছে ঢাকা – নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সীগঞ্জগামী ট্রাক ও লরিগুলো। জনগণের জান ও মালের নিরাপত্তার স্বার্থে কবে বন্ধ হবে লোকালয়ের এই সরু রাস্তার ভারী ট্রাক যান ও লরি চলাচল বন্ধ, এ প্রশ্ন করছে স্থানীয় জনগণ? মর্মান্তিক এ ব্যাপারটি সম্পর্কে অবগত রয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ওয়ার্ড কাউন্সিলরগণ সহ রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর সহ সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থা। তবুও ট্রাক মালিক সমিতির সাথে যেন প্যারেই উঠছে না তারা। জনগণের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে পোস্তগোলা থেকে লোহারপুল লোকালয়ের এই সরু রাস্তায় ভারী ট্রাক চলাচল বন্ধের যৌক্তিক দাবি কি আদৌ আলোর মুখ দেখবে? দাবির আলোকে সংশ্লিষ্টজনদের পদক্ষেপ এবং মন্তব্য থাকবে ধারাবাহিক প্রতিবেদনে পরবর্তী পর্বে।

 

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি