রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আবাসিক হলে নিম্নমানের খাবার বিক্রির প্রতিবাদ জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। রবিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে এই প্রতিবাদ জানান তারা। এসময় ১৭টি হলের খাবার নিয়ে রাস্তায় ঝুলিয়ে রাখা হয়।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, হলে যে খাবার পরিবেশন করা হয়, এতে শিক্ষার্থীদের ন্যূনতম সুষম খাদ্য চাহিদা পূরণ হয় না। প্রতিদিন একই ধরণের স্বাদহীন খবার পরিবেশন করা হয়। একজন শিক্ষার্থী ঠিকমতো খেতেই না পারলে, সে কিভাবে শিক্ষাগবেষণায় মনোযোগ দেবে। অথচ দিনের পর দিন এই খাবারের মান বৃদ্ধির দাবি জানানো হলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। তারা শুধু অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যস্ত। অথচ সেই উন্নয়নের নিচে বসে ঠিকমত খেতে পারছে না শিক্ষার্থীরা। এমনকি ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে কোন নোটিশ ছাড়াই কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় খাবার দাম বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু সেই দাম এখনো কমেনি। তাই খাবারের দাম কমিয়ে মান বাড়ানোর দাবি জানান তারা।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি শাকিল হোসেন সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইসামিনসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের ১১টা ও ছাত্রীদের জন্য ৬টা মিলে ১৭টি আবাসিক হল রয়েছে। হলের ডাইনিংয়ে দুপুরের খাবার ২৮ টাকা এবং রাতের খাবার ২২ টাকায় বিক্রি হয়। যেটা পূর্বে ছিল দুপুরে ২৪ টাকা ও রাতে ১৮ টাকা। গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে দুবেলা খাবারে ৮ টাকা বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু দাম বাড়লেও মান বৃদ্ধি না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এমনকি প্রতিবার খাবারের মান বৃদ্ধির আশ্বাস দিলেও কার্যকরী কোন পদক্ষেপ না দেখায় দীর্ঘদিন থেকেই প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন শিক্ষার্থীরা।
হলের ডাইনিং পরিচালকরা জানান, বাজারে সকল জিনিসের দাম বেশি। তাই এই টাকায় এরচেয়ে ভাল খাবার পরিবেশন করা সম্ভব নয়। এমনি এই খাবার পরিবেশন করতে গিয়েই লোকসানের মুখে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন অনেকে।
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, হলে খাবারের মান উন্নয়নে দ্রুতই প্রাধ্যক্ষ পরিশোধের সঙ্গে বসব। তবে দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত উর্ধ্বগতির ফলে এই দামে হলে খাবার পরিবেশন করাও কঠিন। তাই উভয় দিক সমন্বয় করে কিভাবে খাবারের মান বৃদ্ধি করা যায়, তা খুব শিগগিরই প্রাধ্যক্ষ পর্ষদ, ডাইনিং পরিচালক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বসে সমাধানের চেষ্টা করা হবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন থেকে যেহেতু খাবারে কোন ভর্তুকি নেই, সেহেতু এব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এখনি কিছু করা সম্ভব নয়।