প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রপতি সিরিল রামাফোসার আমন্ত্রণে ২২ থেকে ২৪ আগস্ট অনুষ্ঠেয় ১৫তম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে মঙ্গলবার রাতে জোহানেসবার্গ পৌঁছেছেন। প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি নিয়মিত ফ্লাইট (ইকে-৭৬৫) রাত ৮টা ৩৫ মিনিটে (স্থানীয় সময়) জোহানেসবার্গের ওআর টাম্বো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
দক্ষিণ আফ্রিকার সমবায় শাসন ও ঐতিহ্য বিষয়ক মন্ত্রী পার্ক টাউ এবং সেদেশে বাংলাদেশের হাইকমিশনার
নূর-ই হেলাল সাইফুর রহমান বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান। প্রধানমন্ত্রী বিমান থেকে নেমে আসার পর তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।
গতকাল (২২ আগস্ট) বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ফ্লাইটটি যাত্রা করে।
বিমানবন্দর থেকে তাকে রেডিসন ব্লু হোটেল স্যান্ডটনের প্যালেস অফ রেসিডেন্সে মোটর শোভাযাত্রার মাধ্যমে নিয়ে যাওয়া হয়। এসময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানা এবং প্রধানমন্ত্রীর কন্যা সায়মা ওয়াজেদ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন।
ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন এবং দক্ষিণ আফ্রিকা নিয়ে গঠিত ব্রিকস দেশগুলোর এই ঐতিহাসিক ১৫তম শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজক দেশ দক্ষিণ আফ্রিকা। কভিড-১৯ মহামারীর প্রাদুর্ভাব এবং পরবর্তীতে বিশ্বব্যাপী বিধিনিষেধের পর এটিই হবে সশরীরে অংশগ্রহনের মাধ্যমে প্রথম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই সম্মেলনে যোগ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী ২৩ আগস্ট বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)-র যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড বিজনেস সামিট’-এ প্রধান অতিথি হিসেবে ভাষণ দেবেন। আফ্রিকার দেশগুলোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতদের আয়োজিত ‘বাংলাদেশ দূত সম্মেলনে’ও যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। পরে হোটেল হিলটন স্যান্ডটনে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে তাঁর দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের কথা রয়েছে।
সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং ব্রিক্সের বর্তমান প্রধান এবং দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্টের দেয়া ‘রাষ্ট্রীয় ভোজসভায়’ যোগ দেবেন।
প্রধানমন্ত্রী ২৪ আগস্ট, ৭০টি দেশের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে ব্রিকস বন্ধু নেতৃবৃন্দ সংলাপ (ব্রিকস-আফ্রিকা আউটরিচ এবং ব্রিকস প্লাস ডায়ালগ) ‘ব্রিকসের নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক’ এর সদস্য হিসেবে বাংলাদেশের পক্ষে ভাষণ দেবেন।
প্রধানমন্ত্রী ব্রিকস সম্মেলনের ফাঁকে কয়েকটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন। ওইদিন সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী দক্ষিণ আফ্রিকায় বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে মিলিত হবেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন রোববার এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন, এ পর্যন্ত প্রায় ২২টি দেশ ব্রিকসের সদস্য হওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছে এবং পাঁচটি মূল সদস্য নতুন সদস্য নিতে তাদের মধ্যে ঐকমত্য গড়ে তোলার চেষ্টা করছে। তবে তিনি বলেন, ‘আমরা জানি না, কবে নতুন সদস্যরা যোগদান করবেন’।
প্রধানমন্ত্রী ২৬ আগস্ট ঢাকার উদ্দেশে জোহানেসবার্গ ত্যাগ করবেন এবং দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সংক্ষিপ্ত যাত্রা বিরতির পর ২৭ আগস্ট সকালে দেশে পৌঁছবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।