সাদুল্লাপুর : গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে ভাঙা ঘরে মা প্রতিবন্ধী ছেলে অন্যের ঘরে।ভাঙা ঘরে শিয়াল কুকুরের ভয়ে কোন কিছু রাখতে পারেনা। অন্যের বাড়িতে চেয়ে নিয়ে সংসার চলে খেয়ে না খেয়ে নিরাপত্তাহীনতায়।প্রধানমন্ত্রী শেখের বেটি শেখ হাসিনা যদি হামাগো একটা ঘর দিতো।তার জন্য প্রাণ ভরে দোয়া করনু হয়।
কথা বলছিলাম, উপজেলার উত্তর দামোদরপুর গ্রামের মৃত্যু আব্দুল রশিদ মিয়ার শ্রবণপ্রতিবন্ধী স্ত্রী ছামছুন্নাহার বেওয়া(৭০) ও জন্ম থেকেই দুই পা ও এক হাত বিকলাঙ্গ জাহিদুল ইসলামের (৫০) সাথে। হঠাৎ তার ঘরটি দেখে মনে পড়ে যায় পল্লী কবি জসীম উদ্দিনের আসমানী কবিতার কথা। চোখে পরে তার চেয়েও করুন বাস্তবতা।
জাহিদুল জন্ম থেকে শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়া দাঁড়াতে, কাজকর্ম করতে পারে না। চলাচল করতে হয় হাতের উপর ভর করেই। জাহিদুলের নিজেস্ব ২/৩ শতক জায়গা থাকলেও ঘর না থাকায় আশ্রয় হয়েছে ভাইয়ের বাড়ির এক কোণে
তার শ্রবন প্রতিবন্ধী মা ছামছুন্নাহার (৭০) ৫ বছর পূর্বে স্বামীকে হারিয়ে ঘর না থাকায় তার রাত কাটে ভাঙা মরিচা ধরা জোড়াতালির টিন, পাটকাঠির, সুপারি গাছের ছোবলায় বেড়া দেয়া গোয়াল ঘরে।সে ঘর আবার তিন মাস আগে হঠাৎ ঝড়ো বাতাসে ভেঙে পড়ে। তার নিদারুণ কষ্টের কথা চিন্তা করে মেয়ে জমিলা বেগম চড়া সুদে দাদনের টাকা নিয়ে ঘরটি মেরামত করে দেয়। তবুুও ঘরের চারপাশের খুঁটি-বেড়া নড়েবড়ে। ভাঙা টিনের বেড়ায় ধরেছে মরিচা। কোথাও টিন খুলে গেছে; আবার কোথাও ভেঙেছে পাটকাঠির বেড়া। দরজা-জানালা একদম খোলামেলা। ভেঙে পড়ে আছে কাঠের পাল্লা। সামন্য ঝড় বাতাসে যেকোন সময় ভেঙে যেতে পারে। দাদনের টাকা পরিধোশ না করায় চিন্তায় নির্ঘুম রাত কাটে মা-মেয়ে ও প্রতিবন্ধীর।
সরকারের দেয়া বয়স্কভাতা আর প্রতিবন্ধী ভাতার টাকা ও অন্যের সাহায্যে সহযোগিতায় চলে সংসার।শেষ বয়সে প্রতিবন্ধী ছেলেকে নিয়ে নিরাপদ আশ্রয় চেয়ে শেখের মেয়ে হাসিনার নিকট শেষ আরজি করে বলেন, মা যদি ছেলে ও মায়ের জন্য একটা ঘরের ব্যবস্হা করে দিতো তাহলে খুবই ভালো হতো মরেও শান্তি পেতাম।কখনও কখনও মা- ছেলের দিন কাটে অর্ধাহারে, অনাহারে। তাই অর্থাভাবে দুই পা ও এক হাত বিকলাঙ্গ ছেলেকে কিনে দিতে পারেননি একটি হুইলচেয়ার তৈরি করতে পারেনি নিরাপদ আশ্রয় জানালেন প্রতিবেশীরা।
ছামছুন্নাহার বেগমের পুত্রবধূ হাসিনা বেগম বলেন, ‘শ্বশুর তো মারা গেছি অনেক আগে। শ্বউড়ি (শাশুড়ি) এনা মানষের বাত কাম-কাজ করি খায়। বেটাঘরে (ছেলেদের) তেমন কিছু নাই; তামরা কী দিবে, আরো একটা বেটার অসুখ; তাইও কাজ-কাম করবের পায় না। আরেকজন প্রতিবন্ধী। কীভাবে চলে। তার একনা ঘর আছিল সেকনাও তুফানে পড়ি গেছিলো। ননদ টা দাদনের টেকা নিয়ে পুরান টিন দিয়ে কোন রকম চাল কোনা করি দিছে। তার বেড়া-টাটি নাই; ভাঙা-চুড়ে। কুত্তা বিড়াল শিয়েল সানদায়।’
প্রতিবেশি সায়দার রহমান বলেন, ‘তিনটে বেটা। দুটে তো গরীব; একটা প্রতিবন্ধী। তার তো চলি খাওয়ার মতো বুদ্ধিই নাই। চাচিও তো ঠসা মানুষ। কষ্টের মধ্যে করি-মিলি খাচ্ছে।’
এ বিষয়ে সাদুল্লাপুর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও দামোদরপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এজেট এম সাজেদুল ইসলাম স্বাধীন বলেন তাকে ‘খ’ শ্রেণিভুক্ত ঘরের আওতায় আনা হবে।’
এ বিষয়ে সাদুল্লাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. নবীনেওয়াজ বলেন, ‘ইতোমধ্যে ছামছুন্নাহার ও তার ছেলের ভাতার কার্ড হয়েছে।দ্রুত তার বাড়ি পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।