নিজস্ব প্রতিবেদক
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী সৌদি প্রবাসীদের আকামা ও ফিরতি টিকিট নিয়ে সৃষ্ট সংকট নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন ।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেছেন, ঘরে না থেকে সৌদি বাদশাহর সঙ্গে দেখা করা উচিত। তাদের বুঝিয়ে বলা উচিত আমাদের সমস্যার কথাগুলো। প্রধানমন্ত্রী মুসলিম রাষ্ট্রের একমাত্র নারী নেত্রী। তার একটা গুরুত্ব আছে। ফোনালাপে এই সমস্যার সমাধান হবে না। একইসাথে প্রধানমন্ত্রী সৌদি গেলে সমস্যাগুলো সমাধানের পাশাপাশি অ্যাম্বাসিতে যে সমস্যাগুলো রয়েছে, সেগুলোও তিনি দেখে আসতে পারবেন।
মঙ্গলবার সৌদি আরব, মধ্যপ্রাচ্য, মালয়েশিয়া ও ইউরোপসহ প্রবাসে বাংলাদেশি শ্রমিকদের কর্মস্থলে আকামা, ভিসা সমস্যা সমাধানে করণীয় শীর্ষক এক সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সভায় প্রবাসীদের সঙ্গে সরকারের আচরণ ও পুলিশের লাঠিচার্জকে জঘন্য অপরাধ বলেও মন্তব্য করেন ডা. জাফরুল্লাহ। তিনি বলেন, প্রবাসীদের প্রতি এমন ব্যবহারের পরিবর্তে সরকারের উচিত প্রত্যেক প্রবাসীকে সরকারি অর্থে হোটেলে রাখা এবং ভিসা ও আকামার সমস্যার সমাধান করা। দেশের উন্নয়নের ভিত্তি গড়েছেন আমাদের দেশের প্রবাসীরা। তাদের প্রতি আমরা সম্প্রতি যে ব্যবহার করছি, তা উদ্বেগের। তাদের প্রতি পুলিশের লাঠিচার্জ জঘন্য অপরাধ।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রেস উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টুর সঞ্চালনায় এসময় আরও কথা বলেন চট্টগ্রামের সৌদি প্রবাসী জয়নাল আবেদিন বাকের।
ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, দেড় কোটি প্রবাসী ফিরে এলে বাংলাদেশের অবস্থা খুব একটা ভালো হবে না। এমনিতেই অসংখ্য রোহিঙ্গা আমাদের দেশে অবস্থান করছেন। একই সঙ্গে প্রবাসীরা দেশে ফিরে এলে তাদের জমানো অর্থ ফুরিয়ে যাবে। তখন আরও একটা সংকট সৃষ্টি হবে। আর বর্তমানে এমনিতেই ঢাকায় হাঁটার জায়গা নেই। দেড় কোটি মানুষ অতিরিক্ত আসলে এই অবস্থা আরও শোচনীয় হবে।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের এই ট্রাস্টি আরও বলেন, সমস্যা সমাধানে মন্ত্রী বা সরকারি আমলাদের পাঠিয়ে কিছু হবে না। সরকারি কর্মকর্তারা বিদেশে গিয়ে লাটসাহেব হয়ে যান। প্রধানমন্ত্রীকেই এ ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। শেখ হাসিনা সেখানে গেলে সৌজন্যবোধ এবং তার সম্মানে ও শিষ্টাচারে এই সমস্যাটার সমাধান হয়ে যাবে। একইসঙ্গে আমাদের প্রবাসীদের সম্মান দেখানো হবে।
ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে ভালো পরামর্শ গ্রহণ করা কঠিন। কেননা তাকে ঘিরে রয়েছে ভারতীয় র, ইসরায়েল, দেশের গোয়েন্দা এবং বিভিন্ন আমলা। তবুও উন্নয়নের স্বার্থে তার এই পদক্ষেপ নেয়া জরুরি। কেননা প্রবাসীরাই আমাদের সুন্দর জীবনযাপনের মূল চাবিকাঠি।
করোনা পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি বলেন, এখন যে শিক্ষা পরতিষ্ঠান বন্ধ, এটা ভুল সিদ্ধান্ত। প্রয়োজনে দুই শিফটে ক্লাস পরিচালনা করা যেতে পারে। কিন্তু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেয়া উচিত।
সভায় সৌদি প্রবাসী জয়নাল আবেদীন বাকের প্রবাসীদের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে কথা বলেন এবং সরকারের প্রতি এগুলো সমাধানের আহ্বান জানান।
প্রসঙ্গত, কয়েকদিন ধরেই ফিরতি টিকিটের জন্য সৌদি এয়ারলাইনসের সোনারগাঁ হোটেল কার্যালয়ের সামনে ধরনা দিচ্ছেন প্রবাসীরা। ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে টিকিট দেয়া হলেও নানা জটিলতায় পড়ছেন তারা। এ নিয়ে সেখানে হট্টগোল, বিক্ষোভের ঘটনাও ঘটছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ লাঠিচার্জও করেছে প্রবাসীদের।
এম এ হালিম