নিজস্ব প্রতিবেদক: ঝালকাঠি সদর উপজেলার রমজানকাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ও নির্মাণ কাজেও করা হয়েছে অনিয়ম এমন অভিযোগ সচেতন এলাকাবাসীর। নিয়ম অনুযায়ী নির্মাণ কাজের বিবরণ সম্বলিত সাইন বোর্ড দৃশ্যমান থাকার কথা থাকলেও তা টানানো হয়নি। ফলে এই কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা প্রকৌশলী বরাবর অভিযোগ করেছেন স্থানীয় আরিফুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ৯৮ লাখ টাকা ব্যয়ে উন্নয়ন প্রকল্প (এনবিআইডিজিপিএস) এর আওতায় রমজানকাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবনটি নির্মাণের দিন কাজ পায় বরিশালের উজিরপুর উপজেলার মেসার্স মীম এন্ড কোং। ওই প্রতিষ্ঠানটি প্রিন্স খান নামের এক ব্যাক্তিকে সাব-ঠিকাদার নিয়োগ করেন। সেই ঠিকাদার নিজে নিজেই ভবনের গ্রেগ বিমের ঢালাই দিয়ে সেখানে মাঠি ফেলে ভরাট করেন। কিন্তু গ্রেড বিম ঢালাইয়ের সময় উপজেলা প্রকৌশলী অফিসের প্রতিনিধিদের থাকা কথা রয়েছে এবং বিমের উপরের তলা পর্যন্ত বালি দিয়ে ভরাট করার নিয়ম রয়েছে। কাজে নিম্ন মানের খোয়া ব্যবহার করা হয়েছে।
এদিকে গত ১১ আগষ্ট বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করেন উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল্লা হেল বাকি চৌধুরী। পরিদর্শন শেষে এ সব অনিয়মের বিপক্ষে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে একটি নোটিশ পাঠিয়ে ৭ দিনের মধ্যে ত্রুটি সংশোধনের নির্দেশ দেন। তবে এখনো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ত্রুটি সংশোধনের কোন উদ্যোগ নেয়নি।সরেজমিনে দেখা যায়, নিম্নমানের ইট, খোয়া, বালি দিয়ে নির্মাণ কাজ চলছে। বিদ্যালয়ের ভবনের মূল স্থাপনার পিলারের ঢালাই হিসাবে ব্যবহার হচ্ছে দুই-তিন নম্বর ও নম্বরবিহীন নিম্নমানের ইট এবং ইটের খোয়া। পা দিয়ে একটু জোরে চাপ দিলেই গুঁড়ো হয়ে যাচ্ছে ইট ও ইটের খোয়াগুলো। অপর দিকে মূল স্থাপনার খুঁটি যেখানে ঢালাই হচ্ছে সেখানে বালির পরিবর্তে মাঠি ফেলা হয়েছে। এতে করে মূল স্থাপনা অনেক দুর্বল হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।স্থানীয়রা জানায়, সিডিউলে উন্নতমানের ইট, পাথর ও রড, সিমেন্ট দিয়ে কাজ করার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অসাধু কর্মকর্তা নিম্নমানের ইট, খোয়া, বালি এবং পরিমাণে কম সিমেন্ট ও অতিরিক্ত পরিমাণে বালি ব্যবহার করেছে বলে গ্রামবাসী অভিযোগ করেন।
ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম জানান, আমার বিদ্যালয়ের নতুন ভবনটি কত টাকা বাজেটে নির্মাণ হয়েছে তা কখনো জানতে পারিনি, এছাড়া কখনো কোনোদিন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে আমার চোখে পড়েনি আমি যতটুকু জেনেছি প্রিন্স নামের এক লেঅক এই নতুন ভবনটির কাজ করেছে, এই ভবনটির কাজে অনেক ত্রুটি রয়েছে।
নতুন ভবন নির্মাণাধীন মেসার্স মীম এন্ড কোং স্বত্বাধিকার জানান,
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল্লা হেল বাকি চৌধুরী জানান, আমি অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে ওই বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করে ঠিকাদারকে নোটিশ দিয়েছি। আপতত কাজ বন্ধ রয়েছে। সঠিক নিয়মে কাজ না করলে বিল দেয়া হবেনা।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার খোন্দকার জসিম আহমেদ জানান, অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরজমিন তদন্ত পূর্বক আমি প্রতিষ্ঠানের নির্মাণাধীন ভবনের কাজের অনেক ত্রুটি পেয়েছি। দ্রুত ত্রুটি সংশোধন না করে দিলে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।