1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২:১৭ পূর্বাহ্ন

প্লাস্টিক-পলিথিন জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ

রিপোর্টার
  • আপডেট : মঙ্গলবার, ১৪ মে, ২০২৪

কেফায়েতুল্লাহ কায়সার, চট্টগ্রাম : বর্ষাকালে চট্টগ্রাম শহরে জলাবদ্ধতা নগরবাসীর জন্য রীতিমত একটি আতঙ্ক বলা চলে।
এখনো বর্ষা শুরু হয়নি। গেল কয়েকদিন আগে কালবৈশাখের মাত্র একঘন্টার বৃষ্টিতে নগরির প্রাণকেন্দ্র, প্রবর্তক মোড়, দুই নং গেইট ও বহদ্দারহাটসহ বিভিন্ন এলাকা পানির নিচে তলিয়ে যায়। জলাবদ্ধতা থেকে নগরবাসীকে স্বস্তি দিতে ইতিমধ্যে চার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হলেও বর্ষার শুরুতেই ডুবে যায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এলাকা। এ নিয়ে এখন জনমনে চিন্তা ও আতঙ্ক বিরাজ করছে।
জলাবদ্ধতা নিরসনে ২০১৭ সালে একনেকে ৫ হাজার ৬১৬ কোটি ৫০ লাখ টাকার বাজেটে একটি প্রকল্প চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)কে দেয়া হয়। পরবর্তীতে তা বাড়িয়ে ৮ হাজারর ৬২৯ কোটি টাকা করা হয়।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিযারিং ব্রিগেডকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিযারিং ব্রিগেড নগরীর খাল সংস্কার, পরিষ্কার ও বৃদ্ধির কাজ করলেও সেই সুফল নগরবাসী ভোগ করবে কিনা সেটাই এখন জনমনে প্রশ্ন।
এ-নিয়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিযারিং ব্রিগেড নানান যুক্তি ও ব্যাখ্যা দিলেও বর্ষা শুরু না হতেই কালবৈশাখে নগর ডুবে যাওয়ায় বর্ষার জন্য এটা রেড সিগনাল বলে অনেকে মনে করেন। একই সাথে জলবদ্ধতা নিরসনে সরকারের এত বাজেটের কেন সুফল মিলছে না তা নিয়েও প্রশ্ন অনেকের।
তাই সব কিছু আমলে নিয়ে গতকাল জলাবদ্ধতা নিরসণে চসিক, সিডিএ, ওয়াসা, পাউবো, বন্দরসহ সংশ্লিষ্ট সংস্খাগুলো নিয়ে জরুরি মিটিং করে চসিক। এ সময় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, এ-জন্য আমাদেরকে একটি শক্তিশালী কুইক রেসপন্স টিম গঠন করতে হবে। এই বর্ষায় যখন যেখানে কোন সমস্যা দেখা দিবে সাথে সাথে সমাধানের উদ্যোগ নিবে কুইক রেসপন্স টিম।
নগরভবনে অনুষ্ঠিত সভায় মেয়র আরো বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে জলাবদ্ধতা এখন বিশ্বব্যাপী সাধারণ সমস্যায় পরিণত হয়েছে। এমনকি দুবাই, নিউ ইয়র্কের মতো আধুনিক শহরও ডুবে যাচ্ছে। এ-জন্য চট্টগ্রাম মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে চলমান প্রকল্প সমূহ দ্রুত শেষ করতে হবে এবং জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হলে তা দ্রুত নিরসণে চসিক, সিডিএ, ওয়াসা, পাউবো, বন্দরসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো নিয়ে একটি শক্তিশালী কুইক রেসপন্স টিম গঠন করতে হবে।
সভায় সিডিএ’র চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ইউনুছ বলেন, চসিক এবং সিডিএ’র মধ্যে আগে যে দূরত্ব ছিল এখন তা আর নেই। সিটি মেয়র এবং আমি মিলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য জলাবদ্ধতামুক্ত, বসবাসযোগ্য চট্টগ্রাম গড়তে একসাথে কাজ করব। আমি ইতোমধ্যে চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে নালাগুলোতে থাকা ওয়াসার পাইপসহ বিভিন্ন সমস্যা চিহ্নিত করতে সিডিএ’র প্রকৌশলীদের নির্দেশ দিয়েছি। আশা করি সবাই একসাথে কাজ করে চট্টগ্রামকে জলাবদ্ধতামুক্ত করতে পারব।
চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী একেএম ফজলুল্লাহ বলেন, সিডিএ খাল খননের প্রকল্প শেষ হওয়ার পর তা চসিককে বুঝিয়ে দিবে শুনেছি। কিন্তু এ প্রকল্প পরবর্তীতে ব্যবস্থাপনার জন্য চসিককে আলাদাভাবে ফাণ্ড দিতে হবে এবং কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। অন্যথায় এ প্রকল্পের সুফল পাওয়া যাবেনা।
সভায় চসিকের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোবারক আলী বলেন, প্লাস্টিক, পলিথিন, বোতলসহ বিভিন্ন অপচনশীল দ্রব্য খাল-নালায় গিয়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করছে। এজন্য বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান সমূহ যাতে প্লাস্টিক-পলিথিন ইত্যাদি রিসাইক্লিং-এ এগিয়ে আসে সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে হবে।
কাউন্সিলর আবুল হাসনাত মো. বেলাল জলাবদ্ধতা নিরসণে সংস্থাগুলোর মধ্যে কর্মবন্টন নিশ্চিত করার পাশাপাশি পরিকল্পিত নগরায়ণের উপর জোর দেন।
চসিকের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা লতিফুল হক কাজমি বলেন, প্লাস্টিক-পলিথিন এখন জলাবদ্ধতা নিরসনের ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ। আমরা বিভিন্ন খাল-নালা পরিস্কার করার পর দেখা যাচ্ছে ১০ দিনের মধ্যে আবারো প্লাস্টিক-পলিথিনে সে খাল ভরাট হয়ে যাচ্ছে। কর্ণফুলী নদীর নাব্যতাও এখন পলিথিনের কারণে হুমকির মুখে। এজন্য পলিথিন বন্ধে ব্যাপক অভিযান ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম প্রয়োজন।
চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় সভায় প্যানেল মেয়র গিয়াস উদ্দিন, আফরোজা কালামসহ জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন এবং জলাবদ্ধতা নিরসনে ফলপ্রসু উদ্যোগের ব্যপারে জোর দেন।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি