ফেনী :
ফেনীর ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলায় টানা বর্ষণ এবং পাহাড়ি ঢলে মুহুরী ও কহুয়া নদীর তিনটি স্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে গেছে। এতে উজানের পানি উপচে দুই উপজেলার নয়টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পাহাড়ি ঢলের পানিতে দুটি উপজেলায় প্রায় সাতশ পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
উপজেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় লোকজন জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে পাহাড়ি ঢল ও উজানের পানির চাপে ফুলগাজী সদর ইউনিয়নের উত্তর দৌলতপুর অংশে একটি ও জয়পুর অংশে একটি স্থানে মুহুরী নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। অন্যদিকে পরশুরাম উপজেলার কহুয়া নদীর সাতকুচিয়া অংশে একটি স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। এতে ফেনী-পরশুরাম আঞ্চলিক সড়কের এক অংশ পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় পরশুরাম উপজেলার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
প্লাবিত গ্রামগুলো হচ্ছে ফুলগাজী সদর ইউনিয়নের জয়পুর, ঘনিয়া মোড়া, পূর্ব ঘনিয়া মোড়া, কিসমত ঘনিয়া মোড়া, উত্তর দৌলতপুর, বৈরাগ পুর ও জগৎপুর এবং পরশুরাম উপজেলার সাতকুচিয়া ও চিথলিয়া।
খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ উল হাসান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জহির উদ্দিন, ফুলগাজী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল আলিম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফেরদৌসী বেগম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুলতানা নাসরিন, ফুলগাজী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএনএম নুরুজ্জামান ও সদর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম ভাঙন স্থান পরিদর্শন করেন।
বেড়িবাঁধ ভাঙন ও বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চাইলে ফুলগাজী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে সদর ইউনিয়নের উত্তর দৌলতপুর ও জয়পুর অংশে মুহুরী নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে জয়পুর, ঘনিয়া মোড়া, পূর্ব ঘনিয়া মোড়া, কিসমত ঘনিয়া মোড়া, উত্তর দৌলতপুর, বৈরাগ পুর ও জগৎপুর গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়া পরশুরাম উপজেলার কহুয়া নদীর সাতকুচিয়া অংশ বেড়িবাঁধ ভেঙে সাতকুচিয়া, চিথলিয়াসহ দুটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফেরদৌসী বেগম বলেন, মুহুরী নদীর দুটি স্থানে ভাঙনের ফলে সদর ইউনিয়নের সাতটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বন্যাকবলিত এলাকায় শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। পানিবন্দী মানুষের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ফেনীর পাউবো নির্বাহী প্রকৌশলী জহির উদ্দিন বলেন, সকালে পানির প্রবাহ বেশি ছিল। দুপুরে মহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ১৩ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। উজানে বৃষ্টি না হলে পানি দ্রুত নেমে যাবে।