দুই কার্যদিবস ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর শেয়ারবাজারে ফের টানা দরপতন দেখা দিয়েছে। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) মূল্যসূচক কমেছে। পাশাপাশি কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম। একই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। এর মাধ্যমে টানা তিন কার্যদিবস পতনের মধ্যে থাকলো শেয়ারবাজার।
এর আগে চলতি সপ্তাহের প্রথম দুই কার্যদিবস ঊর্ধ্বমুখী থাকে শেয়ারবাজার। এই দুই কার্যদিবসে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক বাড়ে ৫৫ পায়েন্ট। এতে শেয়ারবাজার ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফেরার স্বপ্ন দেখতে থাকেন বিনিয়োগকারীরা। কিন্তু গেল তিন কার্যদিবসের টানা দরপতনে আবার বিনিয়োগকারীদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। তিন কার্যদিবসের টানা পতনে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক কমেছে ১৩৩ পয়েন্ট।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, বৃহস্পতিবার ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেন শুরুর ছয় মিনিটের মাথায় ডিএসইর প্রধান সূচক ১৫ পয়েন্ট বেড়ে যায়। অবশ্য লেনদেনের সময় আধাঘণ্টা না গড়াতেই বড় পতনের মধ্যে পতিত হয় সূচক। লেনদেনের ২৭ মিনিটের মাথায় ডিএসইর প্রধান সূচক ৩৭ পয়েন্ট পড়ে যায়।
এরপর সূচক কয়েক দফায় ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফেরার ইঙ্গিত দিলেও লেনদেনের শেষ দুই ঘণ্টায় অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমে যায়। ফলে সূচকের বড় পতন দিয়েই শেষ হয় দিনের লেনদেন। এতে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ২৬ পয়েন্ট কমে ছয় হাজার ৫৬৫ পয়েন্টে নেমে গেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ১৩ পয়েন্ট কমে দুই হাজার ৪০৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় এক পয়েন্ট কমে এক হাজার ৪৩২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৯১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৪২টির। আর ৪৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৮২৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় এক হাজার ১৩৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ৩১২ কোটি ৩৪ লাখ টাকা।
ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে জেএমআই হাসপাতালের শেয়ার। কোম্পানিটির ৪৪ কোটি ৩৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা শাইনপুকুর সিরামিকসের ৪১ কোটি ২ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৩৩ কোটি ৪৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে এসিআই ফরমুলেশন।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- বেক্সিমকো, রংপুর ডেইরি অ্যান্ড ফুড প্রোডাক্ট, ওরিয়ন ফার্মা, স্যালভো কেমিক্যালস, আইপিডিসি ফাইন্যান্স, ইস্টার্ন হাউজিং এবং ইউনিক হোটেল।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৮১ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ২৯ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। লেনদেন অংশ নেওয়া ২৯২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬৮টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৯২টির এবং ৩২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।