বঙ্গোপসাগর এবং সুন্দরবনের দুবলার চরের বিভিন্ন এলাকায় ১৮টি মাছ ধরা ট্রলারডুবিতে নিখোঁজ থাকা আরো দুই জেলের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে তল্লাশি টিমের সদস্যরা বঙ্গোপসাগর থেকে ভাসমান অবস্থায় ওই দুই জেলের মৃতদেহ উদ্ধার করেন। এ নিয়ে ৪ দিনে নিখোঁজ জেলেদের মধ্যে এ পর্যন্ত ৬ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হলো। এখনো ৮ জন জেলে নিখোঁজ রয়েছেন।
নিখোঁজ জেলেদের উদ্ধারে ৪র্থ দিনের মতো তল্লাশি চলছে।
আজ মঙ্গলবার সকালে উদ্ধার করা ওই দুই জেলের নামপরিচয় নিশ্চিত করতে পারেনি বনবিভাগ।
এর আগে সোমবার বঙ্গোপসাগর থেকে যে দুই জেলের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে তারা হলেন বাগেরহাট জেলার কচুয়া উপজেলার বগা গ্রামের সোনাম উদ্দিনের ছেল ইয়াকুব আলী বাওয়ালী এবং একই উপজেলার আন্দারমানিক গ্রামের সৈয়দ আলী হাওলাদারের ছেলে আনোয়ার হোসেন বাদল (৫০)।
আর শনিবার যে দুই জেলের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে তারা হলেন বাগেরহাট জেলার চিতলমারী উপজেলার কাালিগঞ্জ গ্রামের আনোয়ার শেখের ছেলে মামুন শেখ (৪০) এবং পিরোজপুর জেলার মটবাড়িয়া উপজেলার জানেরপাড় গ্রামের আজিজুল খানের ছেলে ইসমাইল খান (৩৬)।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের দুবলারচর ফরেস্ট ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রলাদ চন্দ্র রায় জানান, তল্লাশি টিমের সদস্যরা বঙ্গোপসাগরে ভাসতে থাকা অবস্থায় মঙ্গলবার সকালে দুজন জেলের মৃতদেহ উদ্ধার করেন। পরে ওই মৃতদেহ দুবলা ফরেস্ট ক্যাম্পে আনা হচ্ছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে ওই দুই জেলের নাম-পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ পর্যন্ত নিখোঁজ জেলেদের মধ্যে ৬ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হলো। এখনো ৮ জন জেলে নিখোঁজ রয়েছেন।
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রলাদ চন্দ্র রায় আরো জানান, নিখোঁজ জেলেদের উদ্ধারে কোস্টগার্ড, বনবিভাগ এবং স্থানীয় জেলেরা আজ সকাল ১০টা থেকে ৪র্থ দিনের মতো বঙ্গোপসাগর এবং দুবলারচরের বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি শুরু করেন। প্রায় তিন হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তল্লাশি চলছে। নিখোঁজ জেলেদের বাড়ি বাগেরহাট ও খুলনাসহ উপকূলের বিভিন্ন জেলায় বলে জানা গেছে।
দুবলা ফিশারম্যান গ্রুপের সভাপতি কামাল উদ্দিন জানান, কোস্টগার্ড এবং বনবিভাগের পাশাপাশি জেলেরা প্রায় ৫০টি ট্রলার নিয়ে নিখোঁজ জেলেদের উদ্ধার অভিযানে অংশ নিয়েছেন। শনিবার থেকে তারা ট্রলার নিয়ে বঙ্গোপসাগরসহ দুবলারচরের বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি করছেন।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার রাত ১০টার দিকে বঙ্গোপসাগর এবং সুন্দরবনের দুবলারচরের বিভিন্ন এলাকায় মৌসুমে ঝড়ের তাণ্ডবে দেড় শতাধিক জেলেকে নিয়ে ১৮টি মাছ ধরা ট্রলার ডুবে যায়। প্রায় দেড়শত জেলে সাঁতরিয়ে এবং অন্য ট্রলারের সাহায্যে তীরে উঠতে সক্ষম হলেও কমপক্ষে ১৪ জেলে নিখোঁজ থাকেন। শনিবার থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ৪ দিনে ৬ জেলের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।