এই চক্রের দুই মাস্টার এজেন্টসহ তিনজনকে গ্রেপ্তারের পর এসব তথ্য জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিরা হলেন মাস্টার এজেন্ট তরিকুল ইসলাম ওরফে বাবু ও রানা হামিদ এবং তাঁদের সহযোগী সুমন মিয়া। গত শনিবার রাজধানীর খিলক্ষেত থেকে ডিবির গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ তাঁদের গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে একটি প্রাইভেট কার (ঢাকা মেট্রো গ-৩৬-০৩৫১), ১১ লাখ ৮০ হাজার টাকা, চারটি মোবাইল ফোন, পাঁচটি সিম কার্ড উদ্ধার করা হয় এবং বিভিন্ন ব্যাংকের ১৩টি অ্যাকাউন্ট ও ২৩টি মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়। তাঁদের বিরুদ্ধে রমনা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে তাঁদের তিন দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন তদন্তকারীরা।
গতকাল বুধবার ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগে সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, দেশের বাইরে থেকে পরিচালিত বেটবাজ৩৬৫.লাইভ ও মাজাপবু.কম নামের বেটিং ওয়েবসাইটের সুপার এজেন্টরা বাংলাদেশে নিয়োগ করেন মাস্টার এজেন্ট। গ্রেপ্তার তরিকুল ও বাবু তাঁদের সহযোগী সুমন মিয়া ও পলাতক আসামি সাথী আক্তারসহ অজ্ঞাতপরিচয় ৫০ থেকে ৬০ জনের সহায়তায় ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করে অনলাইনে জুয়া খেলার সাইট চালিয়ে আসছেন।
তরিকুল ও বাবু দেশের বাইরে থাকা সুপার এজেন্টের কাছ থেকে প্রতিটি পিবিইউ ৬০ টাকার বিনিময়ে কিনতেন। পরে সাইটগুলোর ব্যবহারকারীদের কাছে প্রতিটি পিবিইউ ১৫০ টাকার বিনিময়ে এবং লোকাল এজেন্টের কাছে প্রতিটি পিবিইউ ১০০ টাকার বিনিময়ে বিক্রি করতেন। লোকাল এজেন্টরা ব্যবহারকারীদের কাছে ১৫০ টাকার বিনিময়ে বিক্রি করতেন। এই কাজে অবৈধ অর্থের লেনদেন মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে করা হয়। ব্যবহার করা হচ্ছে পিবিইউ সাইটের নিজস্ব ভার্চুয়াল কারেন্সি। ব্যবহারকারীরা সিয়াম (সিয়াম আহমেদ) ও আলী (আশি খান) নামের দুটি ফেক ফেসবুক আইডির মাধ্যমে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন।
ডিবিপ্রধান বলেন, এভাবে সাধারণ ব্যবহারকারীদের টাকা তরিকুল ও বাবুর মাধ্যমে দেশের বাইরে চলে যাচ্ছিল। এঁদের মাধ্যমে ৩০ থেকে ৩৫ কোটি টাকা দেশের বাইরে পাচার হয়ে গেছে। তাঁরা নিজেরাও জুয়া পরিচালনা করে হাতিয়ে নিয়েছেন প্রায় ২০ কোটি টাকা। প্রাথমিকভাবে তাঁদের বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও মোবাইল ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ২০ থেকে ২৫ কোটি টাকা লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। ডিবিপ্রধান বলেন, তরিকুল ও বাবুর প্রকাশ্য কোনো আয়ের উৎস নেই। তাঁরা বেটিং সাইট থেকে অর্জিত অর্থ দিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে জমি, গাড়িসহ বিভিন্ন অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন বলে জিজ্ঞাসাবাদে তথ্য মিলেছে।