শেরপুরঃ শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার গারো পাহাড় সীমান্ত এলাকায় বোরো ফসল রক্ষায় বন্যহাতির আতঙ্কে কয়েক দিন ধরে মশাল জ্বালিয়ে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন এলাকাবাসী। বাআজ ভোর রাতেও উপজেলার ডালুকোনা সীমান্ত পাহাড়ের টিলা থেকে একদল বন্যহাতি হামলা করে পাকা ধান খেতে। সন্ধ্যা হলেই বোরো ফসল রক্ষায় এলাকাবাসী হাতি তাড়াতে মশাল জ্বালিয়ে নিজের জমিতে অবস্থান করেন। এলাকাবাসী জানান, বর্তমানে পাহাড়ের সমতলে বোরো ধান পাকা শুরু হয়েছে। প্রতিবছরই ধান ও কাঁঠাল পাকার মৌসুমে হাতির পালটি সন্ধ্যার দিকে খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে চলে আসে। গত সপ্তাহ থেকে প্রতিদিন সন্ধ্যায় ৪০/৪৫টি বন্যহাতির পাল উপজেলার আন্ধারুপাড়া গ্রামের ডালুকোনা এলাকার পাহাড়ি সমতল ভূমির ধান ক্ষেতে নেমে আসে। এলাকাবাসী মশাল জ্বালিয়ে পটকা ফুটিয়ে হৈ হুল্লোর করে হাতি তাড়িয়ে দেয়। দিনের বেলা হাতিগুলো সীমান্তের শুন্য রেখায় জঙ্গলে অবস্থান করে সন্ধ্যা হলেই সমতলে ধান খেতে নেমে আসে। কয়েকদিনে হাতি ধান খেতে না পাড়লেও আন্ধারুপাড়া গ্রামের কৃষক আবুল হোসেন, শাহাব উদ্দিন, আনোয়ার হোসেন ও হাসু মিয়ার ধান ক্ষেত মাড়িয়ে পাকা ধানের ব্যাপক ক্ষতি করেছে।
জানা যায়, নালিতাবাড়ী উপজেলায় হাতিগুলো প্রায় ১৫ বছর আগে ভারতের পিক পাহাড় থেকে দলছুট হয়ে গারো পাহাড়ে চলে আসে। ভারত সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের বাধার কারণে হাতিগুলো পুনরায় তাদের আবাসস্থলে ফিরে যেতে পারেনি। প্রথম দিকে গারো পাহাড়ে অবস্থান নেওয়া ওই হাতির সংখ্যা ছিল ৪০/৪৫ টি। বর্তমানে এ সংখ্যা ৬০/৭০টির বেশি। এই দলটি সীমান্ত এলাকা চষে বেড়ায়। পোড়াগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজাদ মিয়া জানান, প্রায় ১৫ বছর আগে বন্যহাতির দল ভারতের মেঘালয়ের পিক পাহাড় থেকে দলছুট হয়ে বাংলাদেশের গারো পাহাড়ে চলে আসে। ভারত সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের বাঁধার কারণে হাতিগুলো পুনরায় তাদের আবাসস্থলে ফিরে যেতে পারেনি। প্রথম দিকে গারো পাহাড়ে অবস্থান নেওয়া ওই হাতির সংখ্যা ছিল ৪০/৪৫ টি। বর্তমানে এ সংখ্যা ৬০/৭০টির বেশি। এই দলটি সীমান্ত এলাকা চষে বেড়ায়। তিনি আরো বলেন, তিনদিন ধরে পাহাড়ী গ্রামের মানুষের ঘুম নাই। সন্ধ্যা হলে ফসল রক্ষার জন্য লোকজন নিয়ে মশাল জ্বালিয়ে ক্ষেতেই রাইত কাটাই। ধান পাকলেই প্রতিবছর আমগর এই ভাবেই ধান ক্ষেত রক্ষা করি। আমরা ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্থদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হেলেনা পারভীন বলেন, খবর পেয়ে ওই এলাকা পরিদর্শন করেছি। মশাল জ্বালাতে ৫১ জন কৃষককে পাঁচ লিটার করে কেরোসিন তেল দিয়ে আসছি। বন্যহাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকাও করা হচ্ছে।