এবার বন্যা শুরুর আগেই অসময়ে কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র নদে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। এ নদী ভাঙনে প্রতিদিনই নিস্ব হচ্ছে নদী পাড়ের শত শত পরিবার। বিশেষ করে সদরের বেশ কয়েকটি এলাকায় তীব্র নদী ভাঙন এখন চলছে। ইতোমধ্যেই এ এলকাায় অন্তত অর্ধশতাধিক বসতভিটে নদীগর্ভে গেছে।
সম্প্রতি সরেজমিনে জানা যায়, সদর উপজেলার চরভগবতীপুর এলাকায় ব্রহ্মপুত্রের ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। এ এলাকার স্থানীয় কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্য প্রকল্প সমন্বয়কারী রাশেদুল ইসলাম বলেন, গত কয়েকদিন ধরে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে অনেক জমি বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। আমাদের কমিউনিটি ক্লিনিকটি ভাঙনের মুখে। যেকোন সময়ে এটি নদীগর্ভে চলে যাবে। এরই মধ্যে ক্লিনিকটির স্থাপনা নিলামে ডাকা হয়েছিল। সরকারি শিডিউল অনুযায়ী মূল্য না উঠায় বিক্রি করা সম্ভব হয়নি। এখন যে অবস্থা যেকোন মুহূর্তে ক্লিনিকটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।
সদর উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, অনেক চেষ্টা করেও ক্লিনিকটি রক্ষা করা যাচ্ছেনা। আবার কবে ওই চরে ক্লিনিকের স্থাপনা হবে তাও জানি না। তবে অস্থায়ীভাবে চিকিৎসা সেবা দেয়া হবে বলে জানান তিনি। যাত্রাপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর মিয়া বলেন, নদী ভাঙনে চরভগবতীপুরের প্রায় ৩৬টি বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এখানকার মানুষজন ঘর বাড়ি হারিয়ে নিস্ব হয়ে যাচ্ছে। তবে যারা ইতোমধ্যেই বসতভিটা হারিয়েছেন সেসব পরিবারের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। তবে সদর উপজেলা প্রশাসন থেকে তালিকা জমা দিলে সহায়তা কার্যক্রম করা সম্ভব হবে।
এদিকে, বসতভিটার পাশাপাশি সদর উপজেলার আর্থিক সহায়তায় নবনির্মিত নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় চরভগবতীপুর হাইস্কুলটি ব্রহ্মপুত্রের কড়াল গ্রাসে গেছে। সেইসাথে একটি কমিউনিটি ক্লিনিক সেটাও ভাঙনের মুখে। চরের মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় নির্মিত এ ক্লিনিকটি নদীগর্ভে বিলীন হলে মারাত্মকভাবে স্বাস্থসেবা বিঘ্নিত হবে। সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রাসেদুল হাসান জানান, ব্রহ্মপুত্র নদ অসময়ে ভাঙছে যা অত্যন্ত কষ্টদায়ক। মানুষের বসতি, স্থাপনা ও চরভগবতীপুর বিদ্যালয়সহ অন্যান্য ফসলী জমি নদীগর্ভে চলে গেছে। আমরা বিকল্পভাবে বিদ্যালয়টি চালুর উদ্যোগ নিয়েছি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন নদীভাঙনের কথা স্বীকার করে বলেন, বর্তমানে উজানের ঢলে ব্রহ্মপুত্র নদে পানি কিছুটা বাড়ছে। তাই চরাঞ্চলে নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। তবে ভগবতীপুরে চরের ভাঙন প্রতিরোধে অস্থায়ী কার্যক্রমের জন্য প্রায় সাড়ে ৭ কোটি টাকার প্রকল্পের প্রস্তাব প্রেরণ করা হয়েছে।