নুরুল ইসলাম নাহিদ, কালিয়াকৈর প্রতিনিধি: গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বন বিভাগের জমিতে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনায় যৌথবাহিনীর সহযোগিতায় উচ্ছেদ করা হয়েছে। বুধবার (২৩ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টা থেকে উপজেলার সফিপুর বোর্ডমিল পাশার গেট এলাকায় এ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে বন বিভাগ। অভিযান চালিয়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে ৬ একর বন ভূমি উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত জমির আনুমানিক মুল্য প্রায় ৫০ কোটি টাকা বলে জানিয়েছেন অভিযানের নেতৃত্বে থাকা নির্বাহী হাকিম ও কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউসার আহমেদ ।
বন বিভাগ সূত্র জানায়, গত ৫ আগস্ট থেকে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার পুর্বচান্দরা পাশা গেট এলাকায় স্থানীয় প্রভাবশালী লোকের, নাম ভাঙিয়ে স্থানীয় ভূমি দস্যুরা বনের গাছ কেটে বন বিভাগের জমিতে কয়েকশত অবৈধ স্থাপনা গড়ে তোলে। বন বিভাগের কর্মীরা একাধিকবার তাদের বাধা দিলেও তারা অবৈধ স্থাপনা গড়ে তোলা থেকে বিরত থাকেনি। বন বিভাগের লোকজন অবৈধ এ সকল স্থাপনা নির্মাণে বাধা দিতে গেলে বন বিভাগের কর্মীদের ওপর হামলার ঘটনাও ঘটেছে। হামলার ঘটনায় কালিয়াকৈর বন বিভাগের কর্মীরা কালিয়াকৈর থানায় একাধিক মামলাও করেছে। এছাড়া অবৈধ দখলে থেকে নিজ নিজ উদ্যোগে স্থাপনা সরিয়ে নিতে বন বিভাগের পক্ষ থেকে এক সপ্তাহ আগে থেকে মাইকিং করা হয় । মাইকিং বিষয়ে কোন কর্ণপাত করেনি দখলদাররা ।
বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকা বন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাউসার আহমেদের সহযোগিতায় যৌথ বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকা বন বিভাগের চারটি রেঞ্জের ২৫টি বিটের ৮০ জন বন কর্মকর্তাকে সঙ্গে নিয়ে উপজেলার পুর্ব চান্দরা পাশা গেট এলাকায় এ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়। এ সময় বন বিভাগের কর্মীরা বনের জমিতে গড়ে উঠা ৩ শতাধিক অবৈধ স্থাপনা ভেকু দিয়ে ঘুড়িয়ে দেয়। অভিযানে বন কর্মীদের সাথে সেনাবাহিনীর সদস্য , র্যাব ও পুলিশের বিপুল সংখ্যক সদস্য উপস্থিত ছিলেন ।
চন্দ্রা রেঞ্জ কর্মকর্তা মনিরুল করিম বলেন আমরা বারবার নিষেধ করা সত্ত্বেও ভূমি দস্যরা আমাদের কথা শোনেনি, এবং আমাদের স্টাফদের কে ভূমি দস্যরা টাকা-পয়সার প্রলোভন দেখায়, আমরা ভূমিদস্যদের কোন প্রকার প্রস্তাবে রাজি হই নাই, ভূমিদস্যুতের বলে দিয়েছি আপনারা অবৈধভাবে সরকারি বোনের জায়গা দখল করা থেকে বিরত থাকেন। আমাদের অভিযান শুরু হয়েছে এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বনের জায়গা উদ্ধার করা পর্যন্ত। আমরা সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করব।
ঢাকা বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষণ রেজাউল আলম বলেন, ৫ আগস্ট এরপর স্থানীয় ভূমি দস্যুরা বনের জমিতে অবৈধ স্থাপনা গড়ে তোলে। কালিয়াকৈরে দায়িত্বপ্রাপ্ত বন কর্মকর্তারা তাদের একাধিক বাধা দিলেও তারা বনের জমিতে অবৈধ স্থাপনা গড়ে তোলার কাজ চালিয়ে যায় এমনকি বন বিভাগের কর্মীদের উপরও হামলা চালায় কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সহযোগিতায় যৌথ বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে বিকাল পর্যন্ত এ উচ্ছেদ কার্যক্রম চালানো হয়।
কালিয়াকৈর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাওসার আহমেদ জানান, বন বিভাগের সুপারিশে যৌথবাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে বনের জমিতে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনায় উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে। এতে ছয় একর জমি উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত আনুমানিক মুল্য প্রায় ৫০ থেকে ৬০ কোটি টাকা । পর্যায়ক্রমে বনের জমিতে গড়ে ওঠা সব অবৈধ স্থাপনায় উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে