বগুড়ার কলেজছাত্রী নাজনীন আক্তারের বস্তাবন্দী লাশ বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বাটাজোরের একটি ধান ক্ষেত থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বাটাজোরের কাটা গাছতলা খাল সংলগ্ন ধানক্ষেত থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার বগুড়া সদর থানা পুলিশ স্থানীয় থানা পুলিশের সহায়তায় তার লাশ উদ্ধারে দিনভর অভিযান চালিয়ে ব্যর্থ হয়ে ফেরত যায়। ওই অভিযানে স্ত্রী নাজনীন হত্যার অভিযোগে গ্রেফতারকৃত বগুড়া জাহাঙ্গীরাবাদ সেনানিবাসের ঝাড়ুদার সাকিব হোসেন হাওলাদারও উপস্থিত ছিল। তখন সাকিবের ভাড়া বাসার পিছনের একটি সেফটিক ট্যাংকির ভেতর থেকে একটি ওড়না ও দু’টি নখ পাওয়া গিয়েছিল। তারা চলে যাওয়ার পরদিন গতকাল তার লাশটি উদ্ধার হলো।
বগুড়া সদরের সাবগ্রাম এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী আব্দুল লতিফের মেয়ে এবং বগুড়ার গাবতলি সৈয়দ আহম্মেদ কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী ছিল নাজনীন আক্তার। সাকিব বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার নতুন চরজাহাপুর গ্রামের করিম হাওলাদারের ছেলে।
পুলিশ ও স্বজনরা জানায়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচয় ও প্রেমের সূত্র ধরে গত বছর পহেলা অক্টোবর ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে নাজনীনকে বিয়ে করে সাকিব। পরে গত ২৪ মে তার বাবার অসুস্থতার কথা বলে তাকে বগুড়া থেকে বরিশালে নিয়ে আসে। কিন্তু এরপর থেকেই তাদের মুঠোফোন বন্ধ ছিল। এই ঘটনায় নাজনীনের বাবা আব্দুল লতিফ গত ২৬ মে বগুড়া সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
পরে পুলিশ সাকিবকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে নাজনীনকে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বাটাজোর ইউনিয়নের হরহর গ্রামে তার বাবার ভাড়া বাসায় নিয়ে রশি দিয়ে গলায় ফাঁস ও বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে লাশ ফেলে দেয়ার কথা স্বীকার করে। নিজেকে অবস্থা সম্পন্ন পরিবারের ছেলে পরিচয় দিয়ে তাকে বিয়ে করলেও বাড়িতে আসার পর তাদের ঘর ও আর্থিক দুরবস্থা দেখে ঝগড়ার এক পর্যায়ে রাগের মাথায় তাকে হত্যা করে বলেও স্বীকার করে সে।
গৌরনদী থানার ওসি মো. আফজাল হোসেন জানান, নাজনীন আক্তারের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে তার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এদিকে বগুড়া সদর থানায় দায়ের হওয়া সাধারণ ডায়রির সূত্র ধরে ওই (বগুড়া সদর) থানায়ই নাজনীন হত্যা মামলা দায়ের হবে বলে জানিয়েছেন গৌরনদী থানার ওসি।