প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আজকে ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়েছে। আগামীকে স্মার্ট বাংলাদেশ হবে। সেই বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবে আজকের শিশুরা। তাদের সেভাবেই গড়ে তোলা হবে।
আজ বুধবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শেখ রাসেল দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাস্তবায়নাধীন ১০টি প্রকল্প উদ্বোধন এবং ৭টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন সরকারপ্রধান।
‘শেখ রাসেল দীপ্তিময়, নির্ভীক নির্মল দুর্জয়’ প্রতিপাদ্যে দেশে তৃতীয়বারের মতো পালন করা হচ্ছে শেখ রাসেল দিবস।
প্রতিটি স্কুলে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের শিশুরা তাড়াতাড়ি সবকিছু শেখে। আমরা বৃদ্ধরা শিখতে গেলে কোথায় বোতাম টিপতে হবে সেটা নিয়ে চিন্তা করতে হয়, আর ওরা কিন্তু ভেতর থেকে শিখে ফেলে।
নিজের নাতনির কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমার চার বছরের নাতনি আমাকে শিখায় যে, তুমি এটা (কম্পিউটার) টিপতে থাকো, টিপতে টিপতে পেরে যাবা। আর মোবাইল ফোনের পিন নম্বরটা, শুনলে অবাক হবেন, তারা গেম খেলবে এ কারণে আমি তাদেরকে পিন দেব না। আমি লুকিয়ে পিন দিচ্ছি, আর আমার চশমার রিফ্লেকশন থেকে আমার নাতি সে নম্বর নিয়ে নিয়েছে। আমাকে বলে আমি জেনে গেছি তুমি কী কর। এরা এতো স্মার্ট। আমাদের এই ছোট্ট সোনামণিরা আমার স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট সৈনিক হবে। এটাই তো আমি চাই।’
দেশকে এগিয়ে নিতে নতুন প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সরকারপ্রধান জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ, ও মাদক থেকে শিশুদের দূরে থাকার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুদ্ধ কখনো শান্তি বয়ে আনে না। যুদ্ধ বন্ধ করেন, অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধ করেন। আমরা যুদ্ধ চাই না। অস্ত্র প্রতিযাগিতায় যে ব্যয় হয় তা শিশুদের খাদ্য, স্বাস্থ্য ও বাসস্থানের জন্য ব্যয় করা হোক আমরা এটা চাই।
তিনি বলেন, আমরা চাই আমাদের শিশুরা আরও উন্নত হবে। আজকের বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশ। আজ থেকে ১৪ বছর আগের বাংলাদেশ কেমন ছিল? ’৯৬ সালে সরকারে এসে ডিজিটাল সিস্টেমের ব্যবস্থা করেছি, ইন্টারনেটের ব্যবস্থা করেছি। ২০০৯-এর পর থেকে আজ পর্যন্ত ডিজিটাল বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলেছি। আমরা শান্তি চাই, আমরা দেশের উন্নতি চাই।
সরকারপ্রধান বলেন, আমাদের শিশুরা লেখাপড়া শিখবে। এখানে অনেক শিশুরা রয়েছে, তোমরা গুরুজনের কথা মেনে চলবে, বাবা-মায়ের কথা মেনে চলবে। তোমরা লেখাপড়া শিখবে। একটা কথা মনে রাখবে, ধনসম্পদ কিছু থাকবে না, শুধু শিক্ষাটা থাকবে। শিক্ষাটাই মূল শক্তি।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের ছেলে-মেয়েদের ছোটবেলা থেকে একটা কথাই শিখিয়েছি, টাকা-পয়সা, সম্পদ আমরা কিছুই রেখে দিতে পারব না, তোমাদের লেখাপড়া শিখতে হবে, তারা বিশ্বের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি নিয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের শিশুরা কিন্তু তাড়াতাড়ি শেখে। আমরা বৃদ্ধরা শিখতে গেলে কোথায় বোতাম টিপতে হবে সেটা নিয়ে চিন্তা করতে হয়, আর ওরা কিন্তু ভেতর থেকে শিখে ফেলে।
শেখ হাসিনা বলেন, ধর্ম-বর্ণ সবাইকে মানুষ হিসেবে দেখতে হবে। আর কেউ যদি বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন হয়, কেউ যদি পঙ্গু হয়, আমরা তো ছোটবেলায় শিখেছি, অন্ধ অন্ধ বলিও না, পঙ্গুকে পঙ্গু বলিও না। বরং তাদের সাহায্য করো। আমাদের শিশুদের সেভাবেই মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে।