বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ নাকি আইপিএল- এর মধ্যে কোনটি খেলবে দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটাররা? এমন একটি কঠিন প্রশ্নের মুখোমুখি হওয়ার পর প্রোটিয়া ক্রিকেটাররা জানিয়েছিল আইপিএলের চেয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষেই সিরিজে অংশ নেবে তারা।
সে কারণে, আইপিএলের চুক্তিভূক্ত আটজন ক্রিকেটারকে নিয়েই বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডে স্কোয়াড ঘোষণা করেছিল ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে, আইপিএলের চুক্তিভূক্ত ক্রিকেটাররা শুধু ওয়ানডে সিরিজই খেলবেন, টেস্ট সিরিজ নয়। ওয়ানডে সিরিজ খেলেই তারা আইপিএল খেলতে চলে যাবেন।
আজ কিছুক্ষণ আগে (মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে) এমনই এক সংবাদ জানিয়েছে ইএসপিএন ক্রিকইনফো। জনপ্রিয় ক্রিকেট ওয়েবসাইটটি খবর জানিয়েছে, টেস্ট সিরিজে দক্ষিণ আফ্রিকা অন্তত তাদের প্রথম সারির পেস অ্যাটাককেই পাচ্ছে না।
কাগিসো রাবাদা, লুঙ্গি এনগিদি, মার্কো জানসেন কিংবা অ্যানরিখ নরকিয়া- এ চারজনের একজনকেও পাওয়া যাবে না ২ ম্যাচের টেস্ট সিরিজে। রাবাদা এবং এনগিদি চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন দিল্লি ক্যাপিটালসের সঙ্গে। আর গতবছর শেষ দিকে ঘরের মাঠে ভারতকে গুঁড়িয়ে দেয়া পেসার মার্কো জানসেন আইপিএলে খেলবেন সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে।
এছাড়া অ্যানরিখ নরকিয়া আইপিএলে চুক্তিবদ্ধ হলেও তিনি কোনোটাই খেলতে পারবেন না। কারণ তিনি রয়েছেন ইনজুরিতে। গত বছর জুলাইতে সর্বশেষ প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেছিলেন তিনি। এই পেসারও ছিলেন দিল্লি ক্যাপিটালসে। কিন্তু ইনজুরি তাকে আইপিএলও খেলতে দেবে না।
মূলতঃ আইপিএল নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট বোর্ড এবং ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআইয়ের মধ্যে একটি চুক্তি রয়েছে। আইপিএলের সময় দক্ষিণ আফ্রিকা কোনো সিরিজ আয়োজন করবে না কিংবা খেলতে যাবে না এবং তাদের খেলোয়াড়দের বিনা শর্তে নো অবজেকশন সার্টিফিকেট বা এনওসি দিতে হবে।
দক্ষিণ আফ্রিকা সেটাই মেনে আসছিল। তবে, এবারের অবস্থাটা ভিন্ন। এবার আইপিএল অনুষ্ঠিত হবে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে (৫৯ দিনের)। একই সঙ্গে প্রোটিয়াদের সামনে চলে আসে বাংলাদেশ সিরিজও। এ কারণে কিছুদিন আগেই ক্রিকেট সাউথ আফ্রিকা ক্রিকেটারদের ওপর ছেড়ে দিয়েছিল, তারা বাংলাদেশ সিরিজ খেলবে নাকি আইপিএল খেলবে- এ সিদ্ধান্ত তারাই নেবে।
কিন্তু টেস্ট অধিনায়ক ডিন এলগার মন্তব্য করেন, এটা ক্রিকেটারদের সামনে বড় এক নৈতিকতার প্রশ্ন। তাদের উচিৎ হবে জাতীয় দলের হয়ে খেলা। সে হিসেবে ক্রিকেটাররা নিজেদেরকে ওয়ানডে সিরিজের জন্য অ্যাভেইলেবল করলেও টেস্টের জন্য করতে পারছে না।
১৮ মার্চ শুরু হয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ শেষ হবে ২৩ মার্চ। মাঝে দ্বিতীয় ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হবে ২০ মার্চ। আর আইপিএল শুরু হবে ২৬ মার্চ থেকে। সুতরাং, রাবাদা-এনগিদিরা ওয়ানডে পুরোপুরি খেলে গেলেও তাদের জন্য আইপিএল খেলতে বড় সমস্যা হবে না।
রাবাদা-এনগিদি এবং জানসেনরা না থাকলে বাংলাদেশের বিপক্ষে দলে সুযোগ পেয়ে যেতে পারেন লুথো সিমাপালা এবং লিজাড উইলিয়ামস। সঙ্গে জেনুইন স্পিনার কেশভ মাহারাজ তো রয়েছেনই।
তবে জানা যাচ্ছে, প্রধান কোচ মার্ক বাউচার আইপিএলের চুক্তিভূক্ত ক্রিকেটারদের, যারা টেস্ট স্পেশালিস্ট, তাদেরকে বোঝানোর চেষ্টা করছেন আইপিএলের চেয়ে জাতীয় দলের খেলাকে প্রাধান্য দিতে। বাউচার যদি সক্ষম হন, তাহলে রাবাদা-এনগিদিদের অন্তত প্রথম টেস্ট খেলতে দেখা যেতে পারে।