★ নির্বাচন ঘিরে দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য সরকার বিরোধীদের অর্থায়ন করছে মাসুদ। ★ টেক্সটাইল মিলের ছদ্মবেশে দুই যুগ ধরে করছে অর্থপাচার। ★ পাকিস্তান হাইকমিশন ও আইএসআইয়ের সাথে নিয়মিত যোগাযোগের অভিযোগ। ★ কোন উদ্দেশ্যে শ্রম আইন লংঘন করে শত শত পাকিস্তানি কে বাংলাদেশে রাখছেন আগবানি?
অনুসন্ধানী প্রতিবেদনঃ
টেক্সটাইল মিলের ছদ্মবেশে, একজন বিদেশী ব্যবসায়ী ত্রিশ বছরে ধরে অর্থ পাচারের সাথে জড়িত। দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য সাজা প্রাপ্ত আসামী বিএনপি’র সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান কে করে চলছে অর্থায়ন। নির্বাচনকে সামনে রেখে এ অপতৎপরতা বেড়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছে অনেকেই। আন্দোলনের নামে জন-ভোগান্তিকর কর্মসূচি দিয়ে ইতিমধ্যে মাঠে রয়েছে বিএনপি সহ আওয়ামী বিরোধী নানান সংগঠন। ২০১৪ এর জ্বালাও পোড়াও আন্দোলনের মতো দেশকে আবার অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করছে কিছু গোষ্ঠি। কিন্তু তাদের অর্থায়ন করছে কারা? এ প্রশ্ন সকল শান্তিপ্রিয় মানুষের মতো খোদ প্রধানমন্ত্রীর মাঝেও রয়েছে। বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বলছেন দেশ বিরোধীদের কারা অর্থায়ন করছে তা যেন খুঁজে বের করা হয়। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায় পাকিস্তানি বংশভূত ব্যবসায়ী মাসুদ দাউদ আগবানি ও তার এসসিএস টেক্সটাইল মিল লিমিটেড এবং এসসিএস টাওয়াল কোম্পানি বিভিন্ন সময় বিএনপি ও তারেক রহমানকে অর্থায়ন করে চলছে। শুধু তাই নয়, তিনি ইতিমধ্যেই বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করেছেন এদেশের বিরুদ্ধে অসৎ কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য মাসুদ ঢাকায় আইএসআই এবং পাকিস্তান হাইকমিশনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখছে এবং তাদের পৃষ্ঠপোষকতাও করছে।” বাংলাদেশের একটি গোয়েন্দা সংস্থার অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। এদিকে মাসুদ একটি বেআইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই প্রতিবেদনের যথাযথ পদক্ষেপকে অকার্যকর করার চেষ্টা করছে। তবে বাংলাদেশের আরেকটি গোয়েন্দা সংস্থা সূত্র জানায় ইতিমধ্যেই মাসুদের বিশেষ করে তারেক রহমানের সংযোগের অভিযোগের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে বলে সূত্র জানায়।আরও জানা যায় গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাসুদ নারায়ণগঞ্জে এসিএস টেক্সটাইল (বাংলাদেশ) লিমিটেড এবং এসিএস টাওয়েল লিমিটেড নামে দুটি টেক্সটাইল মিল প্রতিষ্ঠা করেছে, যেগুলো বাংলাদেশবিরোধী কার্যকলাপ ও অর্থ পাচারে ব্যবহৃত হচ্ছে। তিনি উভয় প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি)। মাসুদ তার দুটি কোম্পানির মাধ্যমে মানি লন্ডারিংসহ বাংলাদেশে ‘পাকিস্তানি উপস্থিতি’ শক্তিশালী করার প্রচেষ্টায় জড়িত বলেও অভিযোগ করা হয়েছে। এমনকি অবৈধ গ্যাস সংযোগ ব্যবহার, কর ফাঁকি এবং কোম্পানিগুলোতে উর্দু ভাষার প্রচার। পাকিস্তানি পুরুষ শ্রমিকদের দ্বারা বাংলাদেশি নারী কর্মীদের যৌন হয়রানির অভিযোগও রয়েছে। এছাড়া মাসুদের বিভিন্ন রাষ্ট্রদ্রোহের বিষয়ও উঠে এসেছে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে গুণগত মান, উৎপাদন এবং বৈদ্যুতিক লাইনে দক্ষ জনশক্তির উপস্থিতি সত্ত্বেও, পাকিস্তানি নাগরিকরা এসব বিভাগে নিযুক্ত রয়েছেন। অনেক পাকিস্তানি প্রায় দশ বছর ধরে উভয় প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন। বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (বিআইডিএ) নিয়ম অনুযায়ী কোনো বিদেশি শ্রমিকের এ দেশের কোম্পানিতে পাঁচ বছরের বেশি কাজ করার সুযোগ না থাকলেও এসিএস টেক্সটাইলে অবৈধ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পাঁচ বছরের বেশি কাজ করেছেন পাকিস্তানি শ্রমিকরা। যদি একজন পাকিস্তানি এসিএস টেক্সটাইলের একজন কর্মী হিসেবে পাঁচ বছর অতিবাহিত করেন, তাহলে আবার একই শ্রমিকের কাগজপত্র এসিএস টাওয়াএল এর চাকরির ধারক হিসেবে জমা দেওয়া হবে এবং এই বর্তমান কোম্পানির ঠিকানায় ওয়ার্ক পারমিট সহ নথিপত্রও আপডেট করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে ওই ব্যক্তিরা আগের পদবীতে একই ভবনে একই ভবনে কর্মরত আছেন। এক্ষেত্রে তারা বিডা কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে মোটা অঙ্কের টাকা দেয়। কোম্পানি দুটি শতভাগ রপ্তানিমুখী এবং বন্ড কোম্পানি হলেও বন্ডের শুল্কমুক্ত ভাইস-কেমিক্যাল আমদানি করে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করা হয়। এছাড়া স্থানীয় কিছু টেক্সটাইল মিলের (ক্লাসিক্যাল হোমস) পণ্য এসব কারখানায় রং করে ছাপানো হয়, যা বেআইনি। এই অভিযোগের ভিত্তিতে শুল্ক কর্তৃপক্ষ গত ৪ ডিসেম্বর ২০১৯ কোম্পানিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে। মাসুদের বিরুদ্ধে প্রায়ই হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে টাকা পাঠানোর অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে কোনো পণ্য ক্রেতা প্রত্যাখ্যান করলে জরিমানার টাকা হুন্ডির মাধ্যমে পাঠানো হয় বলেও গোয়েন্দা তদন্তে উঠে এসেছে। মাসুদ হুন্ডির মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন, যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার এবং সুইডেনের মালমোতে নিয়মিত মিলিয়ন ডলার পাঠাতেন বলেও জানা গেছে। হুন্ডির টাকায় সম্প্রতি তিনি কানাডার টরন্টোতে একটি বাড়ি কিনেছেন বলেও জানা গেছে। তিতাস গ্যাস কোম্পানির অনুমোদন ছাড়াই মাসুদের কারখানায় অবৈধ গ্যাস সংযোগ রয়েছে বলেও গোয়েন্দা প্রতিবেদনে জানা গেছে। এছাড়া রাতে ইটিপি (এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট) চালানো হয় না এবং কারখানার বর্জ্য সরাসরি পার্শ্ববর্তী জলাশয়ে ফেলা হয়। অন্যদিকে, অভিযোগ সম্পর্কে, দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি মাসুদের সাথে তার মতামতের জন্য যোগাযোগ করেছিল কিন্তু তিনি এই স্পর্শকাতর বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। পাকিস্তানি বংশভূত এই মাসুদ দাউদ আকবানির নানান অপতৎপরতা অনিয়ম নিয়ে দৈনিক জাতীয় অর্থনীতির অনুসন্ধান চলমান রয়েছে। যা পরবর্তী প্রতিবেদনে বিস্তারিত আকারে তুলে ধরা হবে।