1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৮ অপরাহ্ন

‘বাঙালি জাতির ইতিহাসে ১৫ আগস্ট এক কলঙ্কজনক অধ্যায়’

রিপোর্টার
  • আপডেট : রবিবার, ১৫ আগস্ট, ২০২১

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, আজ জাতীয় শোক দিবস। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাতবার্ষিকী। বাঙালি জাতির ইতিহাসে ১৫ আগস্ট এক কলঙ্কজনক অধ্যায়।

আজ রবিবার (১৫ আগস্ট) জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে এ কথা বলেন তিনি।

আবদুল হামিদ বলেন, ১৯৭৫ সালের এদিনে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাবিরোধী ষড়যন্ত্রকারীদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে ঘাতকচক্রের নির্মম বুলেটের আঘাতে ধানমন্ডির নিজ বাসভবনে শাহাদাতবরণ করেন অবিসংবাদিত নেতা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। একই সঙ্গে শহিদ হন বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব, পুত্র শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শিশুপুত্র শেখ রাসেলসহ অনেক নিকটাত্মীয়। এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা কেবল দেশের ইতিহাসে নয়, পৃথিবীর ইতিহাসেও বিরল। আমি শোকাহত চিত্তে তাদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি এবং পরম করুণাময় আল্লাহর দরবারে সকল শহিদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ১৯৪৮ সালে ভাষার দাবিতে গঠিত সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্বসহ ১৯৫২-এর মহান ভাষা আন্দোলন, ’৫৪ এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ’৫৮ এর সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, ’৬২ এর শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলন, ’৬৬ এর ৬-দফা, ’৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান ও ’৭০ এর নির্বাচনসহ বাঙালির মুক্তি ও অধিকার আদায়ে পরিচালিত প্রতিটি গণতান্ত্রিক ও স্বাধিকার আন্দোলনে বঙ্গবন্ধু নেতৃত্ব দেন। এজন্য তাকে বারবার কারাবরণ করতে হয়।

তিনি বলেন, বাঙালির অধিকারের প্রশ্নে বঙ্গবন্ধু ছিলেন আপসহীন। ফাঁসির মঞ্চেও তিনি বাংলা ও বাঙালির জয়গান গেয়েছেন। দীর্ঘ চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে এই মহান নেতা ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ তৎকালীন পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে রেসকোর্স ময়দানে লাখো জনতার উদ্দেশে বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করেন ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’, যা ছিল মূলত স্বাধীনতারই ডাক। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন এবং তারই নেতৃত্বে দীর্ঘ ৯ মাস সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা বিজয় অর্জন করি। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ আজ অভিন্ন সত্তায় পরিণত হয়েছে। ঘাতকচক্র জাতির পিতাকে হত্যা করলেও তার নীতি ও আদর্শকে মুছে ফেলতে পারেনি। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন জাতির পিতার নাম এ দেশের লাখো-কোটি বাঙালির অন্তরে চির অমলিন, অক্ষয় হয়ে থাকবে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, তরুণ বয়স থেকেই বঙ্গবন্ধুর চিন্তা-চেতনায় ছিল জনগণের কল্যাণ। ১৯৪৩ সালের অবিভক্ত বাংলার দুর্ভিক্ষ, ১৯৪৭-এ দেশভাগের সময় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ও ১৯৭০ এর প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়সহ দেশ ও জনগণের যে কোনো সঙ্কটকালে বঙ্গবন্ধু সবসময় তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। একবিংশ শতাব্দীতে এসে আজ আমরা আরেও একটি দুঃসময়ের মুখোমুখি দাঁড়িয়েছি। বাংলাদেশসহ গোটাবিশ্ব আজ করোনা মহামারির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে। বাংলাদেশ সরকার করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের পাশাপাশি দেশবাসীকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। নিজে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে এবং অন্যরাও যাতে মেনে চলে সে বিষয়ে উদ্যোগী হতে হবে। সময় এসেছে বঙ্গবন্ধুর নীতি-আদর্শ ও জীবনী থেকে শিক্ষা নিয়ে দেশবাসীর সঙ্কটময় এ মুহূর্তে তাদের পাশে দাঁড়ানোর। আর এটাই হবে মুজিববর্ষে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর একটি উত্তম প্রয়াস।

আবদুল হামিদ আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু রাজনৈতিক স্বাধীনতার পাশাপাশি জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনের লক্ষ্যে সারাজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত ‘সোনার বাংলা’ প্রতিষ্ঠাই ছিল তার স্বপ্ন। তাই আমাদের দায়িত্ব হবে জ্ঞান-গরিমায় সমৃদ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধুর অসম্পূর্ণ কাজকে সম্পূর্ণ করে বাংলাদেশকে একটি সুখী ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করা। তাহলেই চিরঞ্জীব এই মহান নেতার প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা হবে। বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে একটি মধ্য-আয়ের দেশে পরিণত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ‘রূপকল্প-২০২১’ এর সফল বাস্তবায়ন সুসম্পন্ন হতে চলেছে। ২০৪১ সালে দেশকে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করতে ‘রূপকল্প ২০৪১’ এর বাস্তবায়নে বিশাল কর্মযজ্ঞ চলছে। এসব কর্মসূচি বাস্তবায়নে আমি দলমত নির্বিশেষে সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানাই। আসুন, জাতীয় শোক দিবসে আমরা জাতির পিতাকে হারানোর শোককে শক্তিতে রূপান্তর করি এবং তার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে আত্মনিয়োগ করি।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি