বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠতে ব্যর্থ হলেও বাবর-রিজওয়ানদের পারফরম্যান্সে গর্বিত পাকিস্তানের ক্রিকেটপ্রেমীরা।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান থেকে পিসিবি চেয়ারম্যান রমিজ রাজা সবাই বাবর আজমের অধিনায়কত্ব নিয়ে ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।
তবে সেই স্রোতের উল্টো গতিতে হাল টানলেন ভারতের সাবেক পেসার জহির খান। তার মতে, বাবর আজমের অধিনায়কত্বে ভুল ছিল। সেটা না করলে রোববার ফাইনালে পাকিস্তানকেই পেত নিউজিল্যান্ড।
গত ১১ নভেম্বর দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় সেমিফাইনালে শাহিন আফ্রিদির করা ১৯তম ওভারে ম্যাথু ওয়েডের ক্যাচ ফেলে দেওয়াকে হারের কারণ হিসেবে দেখছেন ক্রিকেটবোদ্ধারা। এজন্য হাসান আলিকে দুষছেন তারা। অনেকে তিন ছক্কা হজম করা শাহিনকেও দাঁড় করাচ্ছেন কাঠগড়ায়।
কিন্তু জহির খান বলছেন ভিন্ন কথা। হারের পেছনে হারিস কিংবা শাহিন নন, বাবরেরই অধিনায়কত্বের ভুল বেশি চোখে পড়ছে এ সাবেক ভারতীয় তারকার।
ক্রিকেটবিষয়ক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজের ইউটিউব চ্যানেলে জহির বলেন, ‘আমার মনে হয়েছে, বাবরের উচিত ছিল শাহিন শাহ আফ্রিদিকে ১৭ ও ১৯তম ওভারে বোলিংয়ে আনা। ওই জায়গাতেই ভুল হয়ে গেছে বাবরের। বোলার হিসেব করে ওভার বাঁচিয়ে রাখা, সেগুলো কীভাবে কাজে লাগাবে, সেটি ঠিক করায় ভুল হয়েছে।,’
জহির খানের মতে, শাহিনের তৃতীয় ওভারটা আগেভাগেই (১৫তম ওভারে) করিয়ে ফেলেছেন বাবর।
তিনি ব্যাখ্যা দেন, ‘১৩ ওভারের পর হারিস রউফকে দিয়ে বল করাল বাবর। এরপর শাহিনকে একটু আগেভাগেই নিয়ে আসে সে। ও যদি শাহিনকে একটু পরে আনত, মাঝে হাসানকে দিয়ে বোলিং করিয়ে নিত, তাহলে ম্যাচটার গতিপথ হয়তো বদলে যেত। কারণ, তখন ওর হাতে ম্যাচের শেষ দিকে ওর মূল বোলারের (শাহিন) ১২টি বল বাকি থাকত।’
এ সময় জহিরের যুক্তিকে খণ্ডন করতে চেষ্টা করেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত সাবেক ভারতীয় অলরাউন্ডার জাদেজা। ওয়েড ও স্টয়নিস জুটি ভাঙতেই বাবর ১৫তম ওভারে শাহিনকে আনেন বলে জানান তিনি।
পাল্টা জবাবে জহির বলেন, ‘পাঁচ উইকেট পড়ে গিয়েছিল, তার মানে আপনি জানতেন, এই দুজন শেষ পর্যন্ত ব্যাট করাই অস্ট্রেলিয়ার জয়ের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি রাখার একমাত্র উপায়। তার মানে ওরা কোনোভাবে পাল্টা আঘাত করতে চাইলে সেটা ইনিংসের শেষের দিকেই করবে। যেটা ওয়েড করেছে।’
প্রসঙ্গত, মোহাম্মদ রিজওয়ানের পর ফখর জামানের দারুণ অর্ধশতকে অস্ট্রেলিয়াকে ১৭৭ রানের লক্ষ্য দেয় পাকিস্তান। তাড়া করতে নেমে একপর্যায়ে ৯৬ রানেই প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যানকে হারায় অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু এরপর মার্কাস স্টয়নিস ও ম্যাথু ওয়েডের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ানো অস্ট্রেলিয়া শেষ পর্যন্ত ম্যাচটা ৬ বল হাতে রেখেই জেতে ৫ উইকেটে।
শাহিন আফ্রিদির করা ১৯তম ওভারের তৃতীয় বলে হারিসের হাত থেকে ওয়েডের ক্যাচ পড়ে যায়, এরপর টানা তিন বলে তিন ছক্কা মেরে অস্ট্রেলিয়াকে জিতিয়ে দেন ওয়েড।