বার্সেলোনার হয়ে ১৭টা বছর টানা খেলেছেন মেসি। ৭৭৮টা ম্যাচ খেলে ৬৭২ গোল করেছেন আর্জেন্টিনার মহাতারকা। এখনও ক্লাবের সমর্থকরা ভুলতে পারেনি তাঁকে। প্যারিস সাঁজা ঘুরে এখন ইন্টার মায়ামিতে খেলছেন মেসি। এই মেসির ফুটবল বিশ্বে যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০০০ সালে। বার্সেলোনার মারিয়া মিনগুয়েলা ট্যালেন্ট স্কাউটের দায়িত্বে ছিলেন। তিনিই খুঁজে বের করেছিলেন প্রতিভাবান মেসিকে। শুধু খুঁজে বের করা নয়, বার্সেলোনায় মেসির উত্থানের পিছনেও রয়েছে তাঁর অনেক অবদান।
আর্জেন্টাইন অধিনায়কের বয়স তখন ১৩ বছর। মেসি পরিবারের সঙ্গে গিয়েছিলেন বার্সেলোনায়। সঙ্গে ছিলেন দুই আর্জেন্টাইন প্রতিনিধি ফাবিয়ান সোলদিনি ও মার্তিন মনতেরো এবং স্পেনের প্রতিনিধি হোরাশিও গ্যাগিওলি। সেখানে ট্রায়ালে সবাইকে চমকে দেন মেসি। বার্সেলোনার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট হুয়ান গাসপার্তে মেসির সঙ্গে তাড়াহুড়া করে চুক্তি করতে চাননি। কিন্তু গ্যাগিওলি প্রচ্ছন্ন হুমকি দিয়ে জানালেন, দ্রুত চুক্তি না হলে অন্য ক্লাবে মেসিকে নিয়ে যাবেন, এমনকি হতে পারে তা রিয়াল মাদ্রিদও।
ওই ঘটনার তিন মাস পর ১৪ ডিসেম্বরের কথা। পম্পেইয়া দেল মন্তেইচ ক্লাবে বার্সার সাবেক ফুটবলার ও টেকনিক্যাল সেক্রেটারি কার্লোস রেক্সাসের সঙ্গে টেনিস খেলছিলেন গ্যাগিওলি। খেলা শেষে ক্লাবের ক্যাফেটেরিয়ায় লাঞ্চ করতে বসেছিলেন। তখন তাদের সঙ্গে যোগ দিলেন ফুটবলারদে এজেন্ট হোসে মারিয়া মিনগুয়েলা যিনি বার্সেলোনায় নিয়মিতই খেলোয়াড় জোগান দেন। মেসি যে দারুণ এক প্রতিভা তা রেক্সাসকে বোঝাতে সক্ষম হলেন মিনগুয়েলা ও গ্যাগিওলি।
আর তাদের কথায় আবিষ্ট হয়ে তখনই চারকোনা এক টুকরো ন্যাপকিন কাগজ নেন রেক্সিস। লিখলেন, ‘১৪ ডিসেম্বর, ২০০০ সালে বার্সেলোনায় মিনগুয়েলা, হোরাশিও এবং বার্সার টেকনিক্যাল সেক্রেটারি কার্লোস রেক্সাসের উপস্থিতিতে কিছু বিষয়ে অমত থাকা সত্ত্বেও একটি নির্দিষ্ট অঙ্কে খেলোয়াড় লিওনেল মেসির দায়িত্ব নেওয়া হলো।’
আর এই কথার নিচে সাক্ষর করেছিলেন রেক্সাস, মিনগুয়েলা ও গ্যাগিওলি। এর সপ্তাহখানেক পর নোটারির মাধ্যমে সে চুক্তির আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়ার কাজটি সম্পন্ন করেন রেক্সাস ও গ্যাগিওলি। সেই থেকে এখন পর্যন্ত মেসির চুক্তির ন্যাপকিন পেপারটি যত্ন সহকারেই সংরক্ষণ করা হয়েছিল। অবশেষে সেটা নিলামে উঠতে যাচ্ছে। আগামী ১৮ মার্চ থেকে ২৭ মার্চ ঐতিহ্যবাহী ব্রিটিশ নিলাম হাউজ বোনহামসে অনুষ্ঠিত হবে মেসির ন্যাপকিন পেপারের নিলাম।
কিছুদিন আগে কাতার বিশ্বকাপে যে জার্সি পরে খেলেছিলেন মেসি, তা নিলামে উঠেছিল। বিপুল অর্থে বিক্রি হয়েছে ৬টা জার্সি। ন্যাপকিন চুক্তির দাম আরও বেশি হতে পারে, এমনই মনে করছে ফুটবল বিশ্ব।