তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে গিয়ে এখন ইঁদুরের গর্তে ঢুকে গেছে। তাদের নেতারা গর্তের মধ্য থেকে একটু একটু করে মুখ তুলে নতুন নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে।
শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে একটি আঞ্চলিক গণমাধ্যমের বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, যারা গাড়িতে চোরাগুপ্তা হামলা চালিয়ে মানুষ মারে, স্কুল এবং মানুষের বাড়ি-ঘর পোড়ায়, জীবন্ত ৩২জন সাংবাদিককে পিটিয়ে আহত করে তারা দেশের শত্রু, মানবতার শত্রু। বিএনপির নেতা-কর্মীরা সংবাদের গাড়িতে আগুন দেয়। এই রাষ্ট্র-সমাজ ও সাংবাদিকদের শত্রু বিএনপি, এদের প্রতিহত করতে হবে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ২০১৩ থেকে ১৫ সাল পর্যন্ত দেশকে ধ্বংস করার জন্য বায়তুল মোকাররমে আগুন দিয়েছে, পবিত্র কোরআনে পুড়িয়েছে ও শত শত মানুষকে আগুনে ঝলসে দিয়েছে। সাড়ে তিন হাজার গাড়ি ও বহু ট্রেন-লঞ্চে আগুন দিয়েছিল। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সেই অগ্নিসন্ত্রাসদের মোকাবিলা করে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। ১৮ সালেও একই চেষ্টা হয়েছিল, কিন্তু তাদের সেই চেষ্টা সফল হয়নি। এখন এবার তারা দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেছ। আমার বিশ্বাস এবারও তারা সফল হবে না।
তিনি বলেন, বর্তমানে দেশের চিত্র বদলে গেছে, গত ১৫ বছরে মানুষের মাথাপিছু আয় ৬শ’ ডলার থেকে বেড়ে ১৫শ’ ডলার ছুঁই ছুঁই। মানব উন্নয়ন, সামাজিক, অর্থনৈতিক সহ সমস্ত সূচকে আমরা পাকিস্তানকে পেছনে ফেলেছি। এখন পাকিস্তান আমাদের দিকে তাকিয়ে হায় হুতাশ করে। আমরা মানব উন্নয়ন, সামাজিক ও স্বাস্থ্য সূচকে ভারতকেও পেছনে ফেলেছি। এমনকি মাথাপিছু আয়ের ক্ষেত্রে ভারতকে আমরা অতিক্রম করেছি।
হাছান মাহমুদ বলেন, নদীর তলদেশ দিয়ে টানেল মানুষ স্বপ্নেও ভাবেনি। কক্সবাজার পর্যন্ত ট্রেন যাবে, মানুষ গল্প ও কেচ্ছা শুনেছে। ১৩৩ বছর আগে ব্রিটিশ আমলে পরিকল্পনা হয়েছিল। যখন আমরা ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করি তখনও মানুষ ভেবেছে এটি আগের মতোই মন ভুলানো গল্প। ট্রেন যে কক্সবাজার যাবে সেটা ভাবেনি। আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে ট্রেন ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে কক্সবাজার যাবে।
মন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রামে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মিত হয়েছে। আকাশ থেকে শহর চেনা যায় না, পল্লী কবি জসীম উদ্দীনের গ্রাম আর খুঁজে পাওয়া যায় না, এটি এখন বাস্তবতা। গরু দিয়ে হালচাষ করা এখন আমাদের কবিতায় আছে গল্পে, কিন্তু বাস্তবে সেটি আর নেই। গত দশ বছরে কৃষির যে যান্ত্রিকিকরণ হয়েছে সেটি অভাবনীয়। মানুষ গরু বা মহিষ দিয়ে এখন কদাচিৎ চাষ করে। মেশিনের একদিক দিয়ে ধান কাটা হয় আরেক দিক দিয়ে বের হয়। এগুলো আগে আমরা সিনেমায় দেখেছি, অন্য দেশের ডক্যুমেন্টারিতে দেখেছি, এখন এটি বাংলাদেশেও হচ্ছে।
সাপ্তাহিক চাটগাঁর সংবাদ পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক নুরুল আবছার চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, সাবেক রাষ্ট্রদূত এস এম আবুল কালাম, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি চৌধুরী ফরিদ, সাধারণ সম্পাদক দেব দুলাল ভৌমিক, আমীর উদ্দিন চৌধুরী, প্রফেসর মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন-এর শিক্ষক প্রফেসর মইনুল ইসলাম প্রমুখ।