বিএনপি ও জামায়াতকে বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গি সংগঠন হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ।
শনিবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে ২৩, বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে যুবলীগের বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। দেশবিরোধী বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে দেশব্যাপী বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অব্যাহত রেখেছে যুবলীগ।
বিক্ষোভ মিছিল শেষে যুবলীগ চেয়ারম্যান সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, জনগণের অধিকার খর্ব করার জন্যই আপনাদের রাজনীতি। জনগণের অধিকার বিচার চাওয়া, আপনারা সেই বিচারের অধিকার জনগণকে দিতে চান না। জনগণের অধিকার গণতন্ত্র, আপনারা সেটা হনন করবেন মাগুরা টাইপের নির্বাচন করে অথবা মিলিটারি শাসন, কারফিউ-ইমারজেন্সি দিয়ে মানুষকে শাসন করবেন। আপনাদের প্রত্যেকটা কাজই এদেশের জনগণের বিরুদ্ধে।
তিনি বলেন, আমি নিজেইতো একজন ভুক্তভোগী। আপনারাইতো ইনডেমনিটি আইন করে আমার বাবা-মায়ের হত্যার বিচারের পথ রুদ্ধ করেছিলেন, জাতির পিতার পরিবারের হত্যার বিচারের পথ রুদ্ধ করেছিলেন। সুতরাং আপনাদের কপাল ভাল যে, যুদ্ধপরাধীদের সাথে জোট করার পরও এদেশে এখনো রাজনীতি করার সুযোগ পাচ্ছেন।
শেখ পরশ বলেন, আসলে বিএনপি জনগণের ভোটের অধিকার আদায়ের রাজনীতি করে না। জনগণকে ভীত-সস্ত্রস্ত করে ক্ষমতায় যেতে চায়। ১০ ডিসেম্বর সমাবেশের ব্যাপারে তাদের যে কুমতলব ছিল সেটার প্রমাণ পাওয়া গেছে। বাংলাদেশকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র সহ্য করা হবে না। ’৭৫ পরবর্তী স্বপ্ন ভুলে যান, ২০০১ এর স্বপ্ন ভুলে যান। সেসব দিন চলে গেছে। এখন আওয়ামী লীগ এমন একটা সংগঠন যে সংগঠনকে সারা পৃথিবীর মানুষ সমীহ করে।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ এদেশের স্বাধীনতা দিয়েছে, আর আজকের আওয়ামী লীগ সরকার এদেশে অর্থনৈতিক মুক্তি দিয়েছে। আমরা উন্নয়নের শিখরে চলে গেছি এবং আমরাই যে কোন মূল্যে এই উন্নয়নের ধারা সমুন্নত ও অব্যাহত রাখবো। গণতন্ত্রের নামে সন্ত্রাসতন্ত্র বন্ধ করেন। গণতন্ত্রের নামে অরাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধ করেন। গণতন্ত্রের নামে আপনারা এখন বিধ্বংসী আচরণ করেছেন, সন্ত্রাসী আচরণ করে প্রমাণ করেছেন যে আপনারা কোনো রাজনৈতিক দলই না। আবারও প্রমাণ করেছেন আপনারা একটা বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গি সংগঠন।
যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, শেখ হাসিনা এখন যেটা বলে সেটাই হয়। শেখ হাসিনা বিদেশি প্রভুদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে বলেছিলেন পদ্মা সেতু হবে, হয়েছে। শেখ হাসিনার সাথে পাল্লা দিয়ে আপনাদের ওই মাথা দিয়ে জঙ্গিবাদ ছাড়া আর কিছু বের হবে না। পক্ষান্তরে বঙ্গবন্ধুকন্যার মাথা থেকে দেশের উন্নয়নমূলক রাজনীতি ছাড়া নেতিবাচক কিছু বের হবে না। আমরা যারা সত্যের ওপর ভর করে দাঁড়িয়ে রয়েছি আমাদের শক্তি অনেক বেশি। আপনারা মানবিকভাবে দুর্বল। তাই আপনারা এখন চোরাপথ দিয়ে ক্ষমতায় যেতে চান। মানসিক শক্তি থাকলে অপেক্ষা করুন, বাংলাদেশের জনগণের কাছে মাফ চান। গণতন্ত্রের নায়ক শেখ হাসিনা। আপনাদের যদি ক্ষমতায় যেতে ইচ্ছা করে তাহলে আরও এক বছর অপেক্ষা করুন, নির্বাচন আসুক। সঠিক পদ্ধতিতে নির্বাচন করুন। তারপর ক্ষমতায় এসে দেখিয়ে দেন আপনাদের দক্ষতা এবং সক্ষমতা।
এসময় যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, বিএনপি ইতিবাচক রাজনীতিতে বিশ্বাসী না। অতীতে তারা আন্দোলনের নামে অগ্নিসন্ত্রাস করেছে, গনগণের জানমাল-সম্পদ বিনষ্ট করেছে, মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে। গত কয়েকদিন ধরে আবারও তারা ধ্বংসলীলায় মেতে উঠেছে। রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নির্দেশে আমরা শান্তিপূর্ণ অবস্থান করছি। যদি এই ফ্যাসিবাদী জামায়াত-বিএনপি আবারও জনগণের জানমাল-সম্পদ বিনষ্ট করে অশান্তি সৃষ্টি করে তাহলে যুবলীগ ঘরে বসে থাকবে না। জনগণের জানমাল-সম্পদ রক্ষার্থে রাজপথে তাদের প্রতিহত করা হবে।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাড. মামুনুর রশীদ, মঞ্জুর আলম শাহীন, মো. রফিকুল ইসলাম, মো. নবী নেওয়াজ, ড. সাজ্জাদ হায়দার লিটন, তাজউদ্দিন আহমেদ, মো. জসিম মাতুব্বর, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. রফিকুল আলম জোয়ার্দার সৈকত, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মাজহারুল ইসলাম, ডা. হেলাল উদ্দিন, মো. সাইফুর রহমান সোহাগসহ কেন্দ্রীয় মহানগর ও বিভিন্ন ওয়ার্ড যুবলীগের নেতারা।