বিএনপি নেতারা করোনার টিকা নিয়ে সমালোচনার পর এখন নিজেরাই ভ্যাকসিন নিচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে শুক্রবার (৬ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর খিলক্ষেতে ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে এ কথা বলেন মন্ত্রী। করোনা মহামারিতে জনগণের পাশে না দাঁড়িয়ে বিএনপি অযথা সমালোচনা করে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এ সময় হাছান মাহমুদ বলেন, এই করোনার টিকা নিতে বিএনপি অনেক সমালোচনা করেছে। তারা বলেছে এই টিকা নিলে স্বাস্থ্যের অনেক ক্ষতি হতে পারে। তাচ্ছিল্য করে বলেছে, এটা ভারতের টিকা, এটা নেওয়া যাবে না। এতো কিছু বলে ঠিকই গোপনে টিকা নিয়ে নিলেন।
এ সময় মন্ত্রী আরও বলেন, মির্জা ফখরুলও টিকা নিয়েছেন। অনেকে প্রকাশ্যেই টিকা নিয়েছেন। রিজভী সাহেব তো চুপিচুপিই টিকা নিয়েছেন। সমালোচনা করে গিয়ে টিকা নিলেন। একেই বলে গাধা জল ঘোলা করে খায়।
এদিকে করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে শনিবার (০৭ আগস্ট) থেকে শুরু হতে যাওয়া ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পেইনে ৩২ লাখ মানুষকে টিকা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সিটি করপোরেশন, ইউনিয়ন-ওয়ার্ড ও বিভিন্ন অঞ্চলভেদে ৭ আগস্ট থেকে ১২ আগস্ট পর্যন্ত পাঁচ দিন চলবে এ ক্যাম্পেইন।
শুক্রবার (০৬ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টায় মহাখালীর বিসিপিএস প্রাঙ্গণে দেশব্যাপী কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পেইন নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম।
তিনি বলেন, ৭ আগস্ট থেকে ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগণকে ভ্যাকসিনেশনের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। ক্যাম্পেইনে সারা দেশের ৪৬০০টি ইউনিয়নে, ১০৫৪টি পৌরসভায় এবং সিটি করপোরশেন এলাকার ৪৩৩টি ওয়ার্ডে ৩২৭০৬ জন টিকাদানকারী এবং ৪৮৪৫৯ জন স্বেচ্ছাসেবীর মাধ্যমে একযোগে কোভিড-১৯ টিকা দেওয়া হবে।
খুরশীদ আলম বলেন, ১৮ বছর বয়সীদের অনেকের আইডি কার্ড নেই। এতে বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে। তাই বয়স ১৮ না করে ২৫ নির্ধারণ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে যারা আগে রেজিস্ট্রেশন করেছেন তারা যেখানে কেন্দ্র নির্ধারণ করেছেন সেখানে টিকা নেবে। ক্যাম্পেইনের টিকাদান আলাদাভাবে পরিচালিত হবে।
তিনি আরও বলেন, যে কোনো ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম সুনির্দিষ্টভাবে প্রদানে পরিকল্পনা করা সম্ভব হয় না। আমরা আমাদের সক্ষমতা অনুযায়ী পরিকল্পনা তৈরি করেছি। দেশে টিকার ঘাটতি থাকলেও সবাইকে টিকা প্রদানে সরকার বদ্ধপরিকর। এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৯৯ হাজারের অধিক মানুষকে প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য মহাপরিচালক বলেন, কোভ্যাক্সসহ বিভিন্ন টিকা উৎপাদনকারীদের সঙ্গে কথা হয়েছে। দেশেও টিকা উৎপাদনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। নেতিবাচক চিন্তা ও কুসংস্কার পরিহার করে টিকা গ্রহণের মাধ্যমে করোনা প্রতিরোধে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান করছি।
ক্যাম্পেইনের উদ্দেশ্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, টিকাকে কেন্দ্র করে সারাবিশ্বেই রাজনীতি রয়েছে। ইতোমধ্যেই টিকা প্রদানের পরিমাণ বেড়েছে। গত দশদিনে ৩০ লাখ টিকা দেওয়া হয়েছে। বড় আকারে ভ্যাকসিন ক্যাম্পেইন না করতে পারলে বিরাট জনগোষ্ঠীকে কাভার করা যাবে না। এটা আমাদের কাছে একটি পাইলট প্রোজেক্ট। এ থেকে আমরা শিক্ষা গ্রহণ করব।