মুজিবুর রহমান সুজন, বিজয়নগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া ) প্রতিনিধিঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার প্রাণকেন্দ্র আমতলী বাজারের সমস্যা নিয়ে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় জলাবদ্ধতা, যানজট, ড্রেনের ডাকনা সহ বিভিন্ন সমস্যার লেখালেখি হলেও বর্তমানে ভিন্ন কারণে মাছ বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে মাছ ব্যবসায়ীরা। মাছ বাজারে ব্যবহৃত পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টির কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন মাছ বাজারের ক্রেতা বিক্রেতারা। সৃষ্ট সমস্যা নিয়ে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন বাজার কমিটির সহ সাধারণ সম্পাদক আজিজুল হক (দুলাল) ও এক মাছের আরদ্দার দানিচ মিয়া (সাবেক মেম্বার) এর পর থেকে মাছ বিক্রি বন্ধ করে দেন সকল ব্যবসায়ীরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায় ২৪শে ডিসেম্বর রবিবার বিকালে বাজার কমিটির সহ সাধারণ সম্পাদক দুলাল মিয়া ও মাছ বাজারের ব্যবসায়ী দানিচ মিয়া, জমাট হওয়া পানি ছেড়ে দেওয়া কে কেন্দ্র করে কথা কাটাকাটি হয়। কথা কাটাকাটিকে কেন্দ্র করে পরদিন ২৫শে ডিসেম্বর সোমবার থেকে সকল মাছ ব্যবসায়ী আমতলী বাজারে মাছ বিক্রি বন্ধ করে দেন।
সূত্র আরও জানায়, আমতলী মাছ বাজারে ব্যবহৃত পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভাল না থাকায় কয়েক মাস ধরে পানি লেগে আছে। এতে মাছ ব্যবসায়ীর পাশাপাশি ক্রেতারা ও সমস্যায় ভুগছেন। নোংরা পানির ভয়ে মাছ বাজারে ঢুকতে পারছেননা সাধারণ ক্রেতারা। সম্প্রতি ব্যবহৃত পানি নিষ্কাশনে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বাজার পরিচালনা কমিটি।
এ বিষয়ে বাজার কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক দুলাল মিয়ার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি বাজার পরিচালনা কমিটির সহ সাধারণ সম্পাদক। গতকাল আরদ্দার দানিচ মিয়ার সাথে সামান্য বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। বিষয়টা ছিল মাছ বাজারে পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টির কারণে মাছ কিনতে আসা ক্রেতাদের সমস্যা হচ্ছে। সৃষ্ট সমস্যা সমাধানে আমরা উদ্যোগ গ্রহণ করি। বাজারের পশ্চিমে রাস্তার পাশের একটি ড্রেন পরিষ্কার করার কাজ করতেছি। মাছ ব্যবসায়ী সকলকে আপাতত ড্রেনে পানি ছাড়ার জন্য নিষেধ করেছিলাম। আমাদের নিষেধ অমান্য করে মাছ ব্যবসায়ী দানিচ মিয়া পানি গুলো ছেড়ে দেওয়ায় ড্রেনের কাজের ক্ষতি হয়েছে।
বিষয়টি দানিচ মিয়াকে জিজ্ঞেস করতে গেলে, সকল ব্যবসায়ী রাগান্বিত হয়ে আমাকে হামলা করার হুমকি দেন। পাশাপাশি আমার কাছে ২ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেন। এ নিয়ে আমি থানায় অভিযোগ করেছি। আমরা বাজার কমিটির সদস্য হয়েও তাদের বিভিন্ন অনৈতিক কার্যকলাপে বাধা দিয়ে টিকে থাকতে পারিনি। তারা ব্যবসায়ীদের সাথে বিভিন্ন সময় অশোভন আচরণ করে। মাছ ব্যবসায়ী মনির ও অন্যরা মাছের খালি ড্রাম চলাচলের সড়কে রাখে। এতে মাছ কিনতে আসা সাধারণ ক্রেতা ও অন্য ব্যবসায়ীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এমনকি প্রতিদিন সন্ধ্যায় প্রধান সড়কে রাস্তায় শাড়ি বেঁধে বসে মাছ বিক্রয় করেন। এ নিয়ে আমরা গত দুই বছর আগেও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর অভিযোগ করিয়াছি, তাতেও কোন ফল-পরশু হয়নি।
মাছ বাজারে দুইটা পানির সামবারসেবল মোটর লাগিয়ে অনবরত পানি উত্তোলন করে। বিনা প্রয়োজনে অতিরিক্ত পানি ব্যবহার করে মাছ বাজারে মানুষ চলাচলের সড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। তাদের মতাদর্শিক মাছ ব্যবসায়ীদের সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকে। মাছ বাজারে রীতিমতো সিন্ডিকেট করে রেখেছে। আমরা সিন্ডিকেট ভাঙ্গার চেষ্টা করেও সফল হয়নি। আমরা তাদেরকে মাছ বিক্রি করার জন্য নিষেধ করিনি। তারা নিজে থেকেই এ সমস্যা সৃষ্টি করেছে। তর্ক বিতর্কের সমস্যা আমরা বসেই সমাধান করতে পারতাম।
এ বিষয়ে আদ্দার দানিচ মিয়ার কাছে সৃষ্ট সমস্যার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন এর সাথে কথা বলে পরে জানাব।
বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুবাইয়া আফরোজ বলেন, বিষয়টা আমার জানা নেই, খোঁজখবর নিয়ে দেখতেছি।