স্বর্ণের দাম বিশ্ববাজারে কমলেও বাংলাদেশে বিপরীত চিত্র দেখা যাচ্ছে। বিশ্ববাজারে দাম কমার মধ্যেই দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়েছে। এ দাম বাড়ার পেছনে স্থানীয় বাজারে তেজাবী স্বর্ণের (পাকা স্বর্ণ) দাম বাড়াকে কারণ হিসেবে দেখিয়েছে স্বর্ণের বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
সর্বশেষ গত ২২ আগস্ট সব ধরনের স্বর্ণের দাম বাড়ায় বাজুস। সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেট প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম এক হাজার ২২৫ টাকা বাড়িয়ে ৮৩ হাজার ২৮১ টাকা করা হয়।
এদিকে, ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ১৬৬ টাকা বাড়িয়ে ৭৯ হাজার ৪৯০ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯৯২ টাকা বাড়িয়ে ৬৮ হাজার ১১৮ টাকা ও সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯৩৩ টাকা বাড়িয়ে ৫৬ হাজার ২২০ টাকা করা হয়।
বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটি ২১ আগস্ট বৈঠক করে এ দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। দাম বাড়ানোর কারণ হিসেবে বাজুসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবী স্বর্ণের দাম বেড়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতি স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করেছে।
দেশের বাজারে যখন এ দাম বাড়ানো হয়, তার আগে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে বড় পতন হয়। এক সপ্তাহে বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ৫৫ ডলার বা ৩ শতাংশ কমে। আর দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ানোর পরও বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম কমেছে।
দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ানোর পর গত এক সপ্তাহে বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম কমেছে দশমিক ৬০ শতাংশ বা ১০ দশমিক ৪৯ ডলার। এর মাধ্যমে টানা দুই সপ্তাহের পতনে বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম কমেছে ৬৫ ডলারের ওপরে।
স্বর্ণের পাশাপাশি গত সপ্তাহে কমেছে রুপা ও প্লাটিনামের দাম। গত এক সপ্তাহে রুপার দাম দশমকি ৮০ শতাংশ কমেছে। এতে প্রতি আউন্সের রুপার দাম ১৮ দশমিক ৮৭ ডলারে নেমে এসেছে। প্লাটিনামের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে কমেছে ৩ দশমিক ৬২ শতাংশ। এতে প্রতি আউন্স প্লাটিনামের দাম দাঁড়িয়েছে ৮৬৩ দশমিক ৫০ ডলার।
বাংলাদেশে স্বর্ণের দাম নির্ধারণের ভিত্তি সম্পর্কে জানতে চাইলে বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান এম এ হান্নান আজাদ বলেন, ‘দেশের স্বর্ণের দামের ওপর বিশ্ববাজারের পরিস্থিতির প্রভাব রয়েছে। তবে আমাদের মূলত নির্ভর করতে হয় স্থানীয় বাজারের ওপর। তাঁতিবাজারসহ স্থানীয় যেসব জায়গায় পাকা স্বর্ণ পাওয়া যায়, তার ওপরেই মূলত আমাদের বাজারনির্ভর করে।’
তিনি বলেন, ‘সরকার আমাদের স্বর্ণ দেয় না। আবার আমদানির ক্ষেত্রে যেসব নীতিমালা আছে, তাতে বৈধভাবে বাইরে থেকে খুব বেশি স্বর্ণ আমদানি করা যায় না। মূলত স্থানীয় বাজারে পাকা স্বর্ণের দাম বাড়লে আমরাও দাম বাড়িয়ে থাকি। একইভাবে পাকা স্বর্ণের দাম কমলে আমরা দাম কমায়।’