বিশ্বব্যাপী সামরিক ব্যয় সর্বকালের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। জানা গেছে, গত বছর সারাবিশ্বে সামরিক ব্যয় ছিল ২ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন ডলার।
সোমবার শান্তি প্রতিষ্ঠায় নিবেদিত আন্তর্জাতিক সংগঠন স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (সিপ্রি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করেছে। সংগঠনটি ১৯৪৯ সাল থেকে সামরিক ব্যয় নিরীক্ষণ করছে।
সংস্থাটির বার্ষিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২৩ সালে এই ব্যয় বৈশ্বিক মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ২.৩ শতাংশ হয়ে গেছে, যা আগের বছর (২০২২) ছিল ২.২ শতাংশ।
এর অর্থ হল পৃথিবীর প্রতিটি পুরুষ, নারী এবং শিশুকে গত বছর সামরিক ব্যয়ের জন্য গড়ে ৩০৬ ডলার কর আরোপ করা হয়েছিল। স্নায়ুযুদ্ধের পরে এটিই সর্বোচ্চ হার।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ব্যয় সব দেশে সমানভাবে বাড়েনি। মাত্র ডজন খানিক দেশে এই ব্যয় ভয়াবহ মাত্রায় বেড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র ৯১৬ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করে এই তালিকার শীর্ষে রয়েছে। এককভাবে বিশ্বের সামরিক ব্যয়ের সর্বোচ্চ ৩৭ শতাংশের জন্য দায়ী বিশ্বের শক্তিধর এই দেশটি। ২৯৬ বিলিয়ন ডলার খরচ করে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে চীন। তৃতীয় ও চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে রাশিয়া (১০৯ বিলিয়ন ডলার) ও ভারত (৮৩.৬ বিলিয়ন ডলার)।
গত বছর ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর দেশটির সামরিক ব্যয় রেকর্ড ২৪ শতাংশ বেড়ে হয়েছে সাড়ে ২৭ বিলিয়ন ডলার, যা দেশটির জিডিপির ৫ দশমিক ৩ শতাংশের সমান।
সৌদি আরবের সামরিক ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। গোটা মধ্যপ্রাচ্যের সামরিক ব্যয় বৃদ্ধির ৯ শতাংশের জন্য দায়ী এই দুই দেশ।
ইউক্রেন যুদ্ধের পর রুশ আতঙ্কে পোল্যান্ড, ফিনল্যান্ডের সামরিক ব্যয় উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। তবে জার্মানির সামরিক ব্যয় কমেছে।
এর আগের বছর ২০২২ সালে বিশ্বের সামরিক ব্যয় ছিল ২ দশমিক ২৪ ট্রিলিয়ন ডলার। সেই বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ শুরু হলে ইউরোপজুড়ে সামরিক ব্যয়ে মারাত্মকভাবে বাড়তে থাকে, জানিয়েছে সিপ্রি। তারা জানায়, বেশিরভাগই রাশিয়া এবং ইউক্রেনের যুদ্ধের জন্য বেড়েছে। তবে পূর্ব ইউরোপের বেশ কিছু দেশ রুশ হুমকির প্রতিক্রিয়ায় সামরিক ব্যয় বাড়িয়েছে। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, আল জাজিরা