২০২০ সালের অলিম্পিক গেমস সামনে রেখে জাপানের তৈরি মোবাইল মসজিদ বিশ্বকে চমকে দিয়েছে। এ নিয়ে বাংলাদেশের প্রায় সব পত্রিকায় খবর ছাপা হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ এই মসজিদে আছে অজু ও নামাজের পূর্ণ ব্যবস্থা।
২৫ টনি ট্রাককে কাস্টমাইজ করে বানানো ৪৮ বর্গমিটারের এই পোর্টেবল মসজিদে নামাজ পড়তে পারবে প্রায় ৫০ জন মুসল্লি। এটা বানাতে খরচ হয়েছে ৯০ হাজার ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৭৬ লাখ ১৭ হাজার ৫০০ টাকা। কিন্তু এটিই বিশ্বের প্রথম পোর্টেবল মসজিদ নয়।
২০১৭ সালের ২৭ এপ্রিল দুবাইয়ের বিখ্যাত সেভেন স্টার হোটেল বুরজ আল আরবে প্রথমবারের মতো উদ্বোধন হয় বিশ্বের প্রথম পোর্টেবল মসজিদের, যা খুব সহজেই স্থানান্তরযোগ্য। রাজকীয় এই পোর্টেবল মসজিদের ৭৫ শতাংশই তৈরি করা হয়েছে বিশুদ্ধ আম্বর পাথর দিয়ে। আম্বর পাথর হলো তৈলস্ফটিক ও সুগন্ধিজাতীয় মহামূল্য পাথর। বর্ণের দিক থেকে হালকা হলুদ থেকে শুরু করে বাদামি, লাল, সাদাটে, এমনকি নীল, কালো, সবুজাভ ও ধবধবে সাদা হয়। খাঁটি আম্বর পাথরগুলো স্বচ্ছ উজ্জ্বল ও মধুর মতো হলুদ বর্ণের। সূর্য কিংবা বাতির আলোতে এগুলো বড় চমৎকার দেখায় এবং শিশিরবিন্দুর মতো চকচক করে। পাশাপাশি ইসলামী ভাবধারা ফুটিয়ে তোলার জন্য মসজিদের দেয়ালে অঙ্কিত আরবি ক্যালিগ্রাফি এর সৌন্দর্য আরো বৃদ্ধি করেছে। দরজায় উৎকৃষ্ট কাঠের কারুকাজ। সোনালি হাতলগুলো যেন এই মসজিদকে দিয়েছে ভিন্ন রূপ। ইসলামী নির্মাণশৈলীর আমেজ ধরে রাখতে ছোট এই মসজিদেও দেওয়া হয়েছে গম্বুজ। আকারে খুব বড় না হলেও গম্বুজটিই যেন মসজিদের সৌন্দর্যকে পূর্ণতা দিয়েছে। নিচে ব্যবহার করা হয়েছে অত্যাধুনিক আম্বর টাইলস। তার ওপর রাজকীয় কার্পেট।
এত কিছু জেনে মনে হতে পারে, মসজিদটি হয়তো অনেক বড়। কিন্তু না, মসজিদটি মাত্র ২৬ বর্গমিটারের। তাদের ওয়েবসাইটের তথ্য মতে, সেখানে নামাজ আদায় করতে পারবে মাত্র দুজন মুসল্লি। এর পরের তথ্যটি জেনে আরো আশ্চর্য হবেন! মাত্র দুজন মুসল্লির নামাজের উপযোগী এই মসজিদটি সেটআপ করে দিতে আম্বর পাম কম্পানির সময় লাগে মাত্র পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা। খরচ হয় এক মিলিয়ন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৮৪ কোটি টাকা।
এটি মূলত তৈরি করা হয়েছে বিশ্বের নামি-দামি বিলাসবহুল হোটেল, ভিআইপি টার্মিনাল ইত্যাদির জন্য। দুবাইয়ে অবস্থিত বিশ্বের অন্যতম জেটেক্স ভিআইপি টার্মিনালে আম্বর পামের তৈরি এই বিশেষ মসজিদটি শোভা পেয়েছে। ধারণা করা হয়, এটিই বিশ্বের সবচেয়ে বিলাসবহুল মসজিদ; যদিও ইসলামে এ ধরনের বিলাসবহুল মসজিদে নামাজের কোনো বিশেষ ফজিলত নেই।