বিয়ের পর বিদায়ের সব প্রস্তুতি শেষ। এখন শুধু বউয়ের শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার পালা। ঠিক সেই সময় বিয়েতে যৌতুকের ১০ লাখ টাকাসহ ক্ষতিপূরণের অঙ্গীকার করে বউকে তালাক দেন বর। রোববার রাতে নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের কয়ামিস্ত্রিপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্বজনরা জানান, এক বছর আগে দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার চম্পাতলী মাস্টারপাড়া এলাকার অমূল্য চন্দ্র রায়ের ছেলে নিতাইচন্দ্র রায়ের (২৩) সঙ্গে তুলশীচন্দ্র রায়ের মেয়ে জয়ত্রী রানী রায়ের আশীর্বাদ ও রেজিস্ট্রিতে বিয়ে হয়।
সরকারি চাকরিতে টাকা লাগবে বলে জামাই নিতাইচন্দ্রের বাবা যৌতুক হিসেবে মেয়ের বাবার কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা নেন। ছেলে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড ডিফেন্সে ফায়ার ফাইটার হিসেবে যোগদানও করেন।
এদিকে হাসি-খুশি এবং আনন্দ চিত্তে মেয়েকে বিদায় দেওয়ার প্রস্তুতি নেন পরিবারের লোকজন। পণ্ডিত ডেকে রোববার বিদায়ের দিন-তারিখ ও লগ্ন ঠিক করা হয়। সম্পন্ন করা হয় কেনাকাটাও।
ঠিক আগের দিন সন্ধ্যায় মেয়ের বাবার মোবাইল ফোনে একটি কল আসে। অপর পক্ষ থেকে বলা হয়, ছেলে প্রতারক। সে এক সপ্তাহ আগে লালমনিরহাটে তার পছন্দের এক মেয়েকে কোর্টে বিয়ে করেছে। এই কথা শুনে মুহূর্তে বিয়েবাড়ির পরিবেশ গুমোট হয়ে শোকের ছায়া নেমে আসে। মেয়ের বাবাসহ আত্মীয়স্বজন যান জামাইয়ের বাড়িতে। সেখানে মোবাইল ফোনে আসা বিয়ের খবরের সত্যতা পাওয়া যায়। এ খবরে মেয়ের বাবাসহ পরিবারের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।
রোববার রাতেই জামাইকে জোর করে তুলে নিয়ে আসেন মেয়ের বাড়িতে। সেখানে মেয়ে বিদায়ের আয়োজিত আসরে যৌতুকের ১০ লাখ টাকাসহ ক্ষতিপূরণের অঙ্গীকার করে বউকে তালাক দেন বর। এর পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
১৩, ১৪, ১৫নং ওয়ার্ড নারী কাউন্সিলর রুবিনা বেগম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, বরের আরেকটি বিয়ের খবরের সত্যতা পাওয়া যায়। বর প্রতারক হওয়ায় কনে বিদায়ের আয়োজিত আসরে যৌতুকের ১০ লাখ টাকাসহ ক্ষতি পূরণের অঙ্গীকার করে বউকে তালাক দেন বর।