বেনাপোল প্রতিনিধি : বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় পেঁয়াজের আমদানি থাকলেও খোলাবাজারে কমেনি দাম। ৪০ টাকায় আমদানি করা পেঁয়াজ, বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। একহাত বদলে বেড়ে যাচ্ছে কেজিতে ১০ টাকা। এতে চাহিদামতো পণ্য কিনতে না পেরে বেকায়দায় পড়েছেন ক্রেতারা। তবে বাজারের আড়তদার ও ব্যবসায়ীদের দাবি, তারা খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে ৪১ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন। গত এক মাসে এ বন্দর দিয়ে দুই হাজার ৪৭২ মে.টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে।
সাধারণ ক্রেতাদের অভিযোগ, বিক্রেতারা একেক জন একেক রকম দাম নিচ্ছেন। এতে বেকায়দায় পড়েছেন সাধারণ ক্রেতারা। বাজার কমিটি বা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ না বাড়ালে এটি নিয়ন্ত্রণে আসবে না বলে জানান তারা।
ক্রেতারা বলছেন, এমনিতেই কাজ নেই। এরমধ্যে বর্তমান সময়ে অন্যায় করে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়ালে কীভাবে বাঁচা যায়। জানা যায়, করোনাভাইরাসের কারণে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে প্রায় আড়াই মাস ধরে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ ছিল। কিছু দিন হলো এ বন্দরের রেল ও স্থলপথে প্রচুর পরিমাণে বিভিন্ন ধরনের খাদ্য দ্রব্যসহ পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। তবে আমদানি বাড়লেও খোলাবাজারে কোনোভাবেই কমছে না মূল্য। বাজার কমিটি বা প্রশাসনের তেমন কোনও নিয়ন্ত্রণ না থাকায় খুশিমতো সাধারণ ক্রেতাদের ঠকাচ্ছেন বিক্রেতারা।
পেঁয়াজ আমদানিকারক শেখ এন্টারপ্রাইজের মালিক মাহাবুব রহমান ডলার বলেন, প্রতি মে.টন পেঁয়াজ ভারত থেকে ৩৫৫ ডলার মূল্যে আমদানি করা হয়েছে। অন্যান্য খরচ রয়েছে কেজিতে আড়াই টাকার মতো। আড়তদারদের কাছে তারা বিক্রি করছেন কেজিতে ৪১-৪২ টাকা দরে।
পেঁয়াজ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান খুলনার হামিদ এন্টারপ্রাইজের বেনাপোলের প্রতিনিধি দিপু বলেন, আগে পেঁয়াজ আমদানি হতো প্রতি মে.টন ১৫৫ ডলারে। ভারতের পেঁয়াজ উৎপাদন এলাকায় বন্যা হওয়ায় পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সে কারণে ভারত সরকার পেঁয়াজের রফতানি মূল্য ১৫৫ ডলার থেকে বাড়িয়ে ৩৫৫ ডলার নির্ধারণ করেছে। অর্থ্যাৎ দ্বিগুনের বেশি দামে পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে। এ কারণে দামও বেড়েছে। এ মূল্য সামনের দিনগুলোতে আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
খুচরা পেঁয়াজ বিক্রেতা রাশেদ বলেন, কেনার পর অনেক পেঁয়াজ নষ্ট হয় তাই একটু বেশি দামে বিক্রয় করতে হয়।
তবে পেঁয়াজসহ অন্যান্য পণ্যের আমদানিতে খুশি পরিবহনকারী ট্রাক চালকেরা। করোনার কারণে এতদিন তারা পণ্য পরিবহন করতে না পেরে অসহায় অবস্থায় পড়েছিলেন।
বেনাপোল উদ্ভিদ সংগনিরোধের উপ-সহকারী কর্মকর্তা হেমন্ত কুমার সরকার বলেন, শনিবার (১২ সেপ্টেম্বর) মাত্র ১৮৫ মে. টন পেঁয়াজ ভারত থেকে আমদানি হয়েছে। দিন দিন পেঁয়াজ আমদানি কমে আসছে। কারণ পেঁয়াজ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জানা গেছে যেখান থেকে পেঁয়াজ আমদানি করা হয়, সে অঞ্চলে বন্যা হয়েছে। এ জন্য ভারত সরকার ১৫৫ ডলার থেকে ৩৫৫ ডলার মূল্যে বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানি করছে। গত ১২ আগস্ট থেকে ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে বেনাপোল বন্দরে দুই হাজার ৪৭২ মে.টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। এছাড়া এ বন্দর দিয়ে অন্যান্য পণ্যের পাশাপাশি মাছ, মরিচ, টমেটো, পানপাতা, আনার ও আপেলসহ বিভিন্ন ধরনের খাদ্যদ্রব্য আমদানি হয়।