ঈদের দিন বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানোর সময় দুর্ঘটনায় ২১৬ জন আহত হয়ে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (নিটোর) বা পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে ৯৬ জনের অবস্থা গুরুতর। অস্ত্রোপচারের পর তাদের হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বাকি ১২০ প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েই বাসায় ফিরতে পেরেছেন।
ঈদের দ্বিতীয় দিন রোববার (২৩ এপ্রিল) দুপুর ২টা পর্যন্ত হাত-পা ভাঙা ১০৫ জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে ৩৫ জনের অবস্থা গুরুতর। তারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। রোববার দুপুরে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (নিটোর) ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, পঙ্গু হাসপাতালে হঠাৎ রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। এ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দুই পা ভেঙে কাতরাচ্ছেন সাভারের আশুলিয়ার হাবিবুল ইসলাম (২১) নামে এক তরুণ। ঈদে বন্ধুদের সঙ্গে মোটরসাইকেল নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছিলেন তিনি। রাস্তায় অন্য একটি মোটরসাইকেলকে ওভারটেক করতে গিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ডান পা ভেঙে কাতরাচ্ছেন নরসিংদী সদরের আলমগীর হোসোন। তার ডান পা ভেঙে গেছে। পাশাপাশি পায়ের গোড়ালিতে গুরুতর জখ হয়েছে।
জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, ঈদের দিন ২১৬ জন রোগী হাত-পা ভাঙা রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে ৯৬ জনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি রেখে তাদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া ঈদের দ্বিতীয় দিন আজ রোববার দুপুর ২টা পর্যন্ত নতুন ১০৫ জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে ৩৫ জনের অবস্থা গুরুতর।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্মরত হৃদয় হোসেন বলেন, ‘আমরা যাদের পা ব্যান্ডেজ করছি, অধিকাংশ ইয়াং (বয়সে তরুণ)। কীভাবে দুর্ঘটনা ঘটেছে, জানতে চাইলে জানায়, বন্ধুদের নিয়ে বাইকে ঘুরতে বেরিয়ে এমন অবস্থা হয়েছে। শনিবার ঈদের দিন অনেক রোগী ছিল। রোববারও রোগীর চাপ আছে। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে এখানে রোগী আসেন। অনেকে গ্রাম এলাকা থেকে রওনা দেয়, এখনো (দুপুর ২টা) তারা হয়তো এসে পৌঁছাতে পারেনি। আজ সন্ধ্যা ও রাতে রোগী আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।’
এদিকে, ঈদের দিনে শনিবার (২২ এপ্রিল) সারাদেশে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে নেত্রকোনার কলমাকান্দায় দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে তিনজন নিহত হন। এছাড়া বগুড়ায় তিনজন, বরিশালে একজন, দিনাজপুরে একজন, গাজীপুরে একজন, মাদারীপুরে একজন, ফরিদপুরে একজন ও মেহেরপুরে এক শিশু নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এসব দুর্ঘটনায় অনেকে আহত হয়েছেন।
অন্যদিকে ঈদের দ্বিতীয় দিন রোববার (২৩ এপ্রিল) বিকেল ৩টা পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী- পিরোজপুর ও জামালপুরে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় দুজন নিহত হয়েছেন। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহতদের অধিকাংশই বয়সে তরুণ।