সিরাজদিখান (মুন্সিগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ সিরাজদিখান উপজেলার চিত্রকোটের মোক্তার হোসেন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী আমলে অবৈধ উপায়ে কোটি টাকার সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলে। এসব রক্ষায় ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ায় এলাকা ছাড়া হয়েছে।
জানা যায়, গত ৫ আগস্ট ছাত্র আন্দোলনের মুখে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে ফ্যাসিবাদের দোসর নিষিদ্ধ সংগঠন সাবেক ছাত্রলীগের ক্যাডার মোহাম্মদ মোক্তার হোসেন। এখনও বহু চেষ্টা করে এলাকায় ফিরে আসতে পারেনি সংক্ষুব্ধ ছাত্র ও এলাকার সাধারণ মানুষের ভয়ে। কারণ গত ১৫ বছর ধরে এলাকার সাধারণ মানুষ তার দ্বারা অত্যাচারিত হয়ে আসছে। বহু নিরীহ মানুষকে মারধর করার মত একাধিক মামলা অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ছাত্র জনতার আন্দোলনে ঘোর বিরোধিতা করেছে। এমনকি তার ফেসবুক আইডিতে উস্কানি মূলক অনেক লেখালেখি করেছে। তাই স্থানীয় জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে গত ৫ আগস্ট তার বাড়িঘর ভাংচুর করতে আসলে এ খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক পালিয়ে যায়।
এ বিষয়ে এলাকাবাসী জানান, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের ক্যাডার হওয়ায় কেউ মুখ খোলতে সাহস পেতো না। এমনকি দৈনিক সংগ্রামের সাংবাদিক রিয়াজ মাহমুদ মান্নানকেও হামলা করেছিলো। আবার সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে মামলা করে ভয়ে এলাকা ছাড়া। দলীয় প্রভাব খাটিয়ে আজ কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছে। পুলিশের সাথে জোগ সাজোশ করে সে ইউনিয়নের বিএনপি, হেফাজতে ইসলাম, জামায়াতে ইসলাম সহ নিরীহ মানুষ কে শান্তিতে ঘুমাতে দেয়নি। শীঘ্রই তাকে আইনের আওতায় আনা জরুরি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক সৌরভ মাঝি বলেন, কুখ্যাত মোক্তার ভুলে গিয়েছিলো সে নিজেও একজন সাবেক ছাত্র। এদেশের সৃষ্টি থেকে শুরু করে প্রতিটি বাকে বাকে ছাত্র সমাজের যুগান্তকারী ভূমিকা রয়েছে। অথচ এই কুখ্যাত আওয়ামী দালাল শিক্ষার্থীদের ন্যায়সঙ্গত সংগ্রাম কে তুচ্ছতাচ্ছল্য করেছে। একে অনতিবিলম্বে গ্রেফতার করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক সংগঠক সম্পা বলেন মোক্তার ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে ১৭ জুলাই আন্দোলনকারীদের আহাম্মক বলে পোস্ট দেয়। আমাদের কাছে স্ক্রিনশুট আছে। এবিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে দ্রুতই।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক ইয়ামিন বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে এই কুলাঙ্গার ছাত্রজনতার বিরুদ্ধে ফেইসবুকে স্ট্যাটাসসহ সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করে। ফ্যাসিবাদের ফয়দা লুটে কোটি কোটি টাকার গাড়ি, বাড়ি, ফ্ল্যাট, ফেক্টরিসহ অবৈধ সম্পদ গড়েছে। এই ফ্যাসিস্টদের আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক রাতুল হাসান শান্ত বলেন, বিষয়টি এসপি সাহেব ও ইউএনও সাহেবের নলেজে দিয়েছি। সকলে মিলে ওকে মব জাস্টিস থেকে বাচিয়ে আইনের আওতায় আনা হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক আরাফাত প্রিতম বলেন, ওকে এরেস্ট করার জন্য ছাত্র সমাজের পাশে থাকবো।
এ বিষয়ে সিরাজদিখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, নতুন আসায় আমি মোক্তারের কারখানা, গাড়ি, বাড়ি ও ফ্ল্যাটের বিষয়ে জানিনা। খতিয়ে দেখে উপরমহলে জানাবো। ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ায় পলাতক মোক্তারের বাড়িতে কারা হামলা করেছে তাও জানিনা।
সিরাজদিখান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে পোস্ট দিয়েছে বিষয়টি জানি। তার যে মার্বেল ফেক্টরি আছে তা জানতাম না। তার দূর্নীতির বিষয়টি দুদক দেখবে। এটি আমাদের বিষয় না।