খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, এই মুহূর্তে চালের জাতীয় মজুত ২০ লাখ টনের বেশি। স্বাভাবিক অবস্থায় এই মজুত ১০ লাখ টন থাকে। তারপরও প্রতি সপ্তাহে চালের মূল্য বাড়ছে যা কাঙ্ক্ষিত নয়। এর কারণ খতিয়ে দেখতে আমরা মাঠ পর্যায়ের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। মাঠ পর্যায়ের সঠিক তথ্য আমাদের পরিকল্পনা গ্রহণে কাজে লাগবে।
তিনি আরও বলেন, প্রয়োজন হলে চাল আমদানি করা হবে। সেটি ১০ শতাংশ শুল্কহারে আমদানি করা হবে। বোরোতে বাম্পার ফলন হয়েছে, আমনেও হয়েছে। তারপরও চালের দাম বাড়ছে, যা হাস্যকর।
সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ‘অবৈধ মজুতদারি রোধে করণীয় ও বাজার তদারকি সংক্রান্ত মতবিনিময় সভা’র প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
খাদ্য কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, মিলের স্টক ভেরিফিকেশন করতে হবে। কতটুকু ক্রাসিং হলো, কতটুকু সরবরাহ হলো তা সপ্তাহান্তে নিয়মিত রিপোর্ট করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, মিল মালিক, ব্যবসায়ী ও আড়ৎদারদের মুনাফা কম করে দেশের মানুষের প্রতি মানবিক হতে হবে। কারা ধান চাল মজুত করছে? আপনারা যদি জেনে থাকেন কার কাছে অবৈধ মজুত আছে তার তথ্য দিন। তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করুন- ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ সময় মিল মালিকদের পক্ষে নিরদ বরণ সাহা বলেন, বাজারে সব পণ্যের দাম বাড়ছে। উৎপাদন খরচ বাড়ছে, পরিবহন ব্যয়ও বাড়ছে। চার হাত বদল হয়ে চালের দাম বাড়লেও মোকামে চালের দাম খুব বেশি বাড়েনি। খুচরা বিক্রেতারা চালের দাম বেশি বাড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, করোনাকালে অনেক অলস অর্থ তৈরি হয়েছে। এসব অর্থ দিয়ে ধান চাল কিনে মজুত করে রাখা হচ্ছে। বন্ধ অনেক মিলে চাল কিনে রাখা হচ্ছে। আমরা চাই অবৈধ মজুতদারির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
বেলাল হোসেন নামের এক মিল মালিক বলেন, অপরিকল্পিত মজুতের কারণে চালের দাম বাড়ছে। ধান চালের ব্যবসার অভিজ্ঞতা না থাকায় তারা ধান চাল নষ্ট করে ফেলে যা জাতীয় সম্পদের অপচয়।
এরফান গ্রুপের মালিক বলেন, গত তিন মাসে মিল গেটে চালের দাম বাড়েনি। আড়ৎদাররা চালের দাম বাড়ায়। নতুন নতুন ব্যবসায়ী গ্রুপ ধান চালের ব্যবসায় যুক্ত হচ্ছে, তারাও চালের দাম বাড়াচ্ছে।
রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার জি এস এম জাফরউল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে রাজশাহী ৩ আসনের সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোসাম্মৎ নাজমানারা খানুম, খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. সাখাওয়াত হোসেন, রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মো. আব্দুল বাতেন, জেলা প্রশাসক, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অনিল কুমার সরকার, জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল, আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও বগুড়া জেলার খাদ্য নিয়ন্ত্রক বক্তব্য দেন।