নিজস্ব প্রতিবেদক
সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার রফিক উল আর নেই (ইন্নালিল্লাহি…রাজিউন)। আদ-দ্বীন হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় শনিবার (২৪ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। আদ-দ্বীন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মহাসচিব ডা. নাহিদ ইয়াসমীন এ তথ্য জানিয়েছেন।
ডা. নাহিদ বলেন, ‘আমরা তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলছি। আদ-দ্বীন হাসপাতাল প্রাঙ্গনে তার প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর লাশ তার পল্টনে তার বাসায় নিয়ে যাওয়া হবে। সেখান থেকে জানাজার জন্য লাশ নেওয়া হবে বায়তুল মোকাররমে। পরে বাদ জোহার তার দীর্ঘদিনের কর্মস্থল সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে লাশ নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে জানাজা শেষে বিকালে বনানী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে। ’
শুক্রবার (২৩ অক্টোবর) ডা. নাহিদ বলেছিলেন, ‘মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) রাতে তাকে ভেন্টিলেশনে নেওয়ার পর যে সংকটাপন্ন অবস্থাতে ছিলেন তিনি, এখনও সেভাবেই আছেন। তার অবস্থার কোনও পরিবর্তন বা উন্নতি হয়নি।’
গত ১৫ অক্টোবর ব্যারিস্টার রফিক উল হককে ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর গত ২০ অক্টোবর রাতে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, ব্যারিস্টার রফিক উল হকের জন্ম ১৯৩৫ সালের ২ নভেম্বর কলকাতার সুবর্ণপুর গ্রামে। ১৯৫৫ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক, ১৯৫৭ সালে দর্শন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। ১৯৫৮ সালে এলএলবি পাশ করেন। ১৯৬২ সালে যুক্তরাজ্য থেকে বার অ্যাট ল সম্পন্ন করেন। ১৯৬৫ সালে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হিসেবে এবং ১৯৭৩ সালে আপিল বিভাগে আইনজীবী হিসেবে আইন পেশা শুরু করেন।
বর্ণাঢ্য জীবনে আইন পেশায় দীর্ঘ প্রায় ৬০ বছর পার করেছেন তিনি। বিগত সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে মুক্ত করতে আইনি লড়াই করেন তিনি। দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও ভাবমূর্তি রক্ষায় বরাবরই সোচ্চার রফিক উল হক। দেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক ও আইনি বিষয় নিয়ে সরকারকে সহযোগিতা করেছেন বর্ষীয়ান এই আইনজীবী।
১৯৯০ সালের ৭ এপ্রিল থেকে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন রফিক উল হক। এসময়ে তিনি কোনও সম্মানী নেননি। পেশাগত জীবনে তিনি কখনও কোনও রাজনৈতিক দল করেননি। তবে নানা সময়ে রাজনীতিবিদরা সবসময় তাকে পাশে পেয়েছেন।