আগামীকাল মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন একাডেমিতে অনুষ্ঠিতব্য বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য কৌশলগত সংলাপে যোগ দিতে আজ ঢাকায় আসছেন দেশটির কমনওয়েলথ এবং ডেভেলপমেন্ট অফিসের পার্মানেন্ট আন্ডার সেক্রেটারি স্যার ফিলিপ বার্টন। সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকায় পৌঁছানোর করা রয়েছে তার।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ঢাকার ব্রিটিশ হাইকমিশন থেকে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এবারের সংলাপে নিজ নিজ দেশের নেতৃত্ব দেবেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব (সিনিয়র সচিব) মাসুদ বিন মোমেন ও ব্রিটিশ আন্ডার সেক্রেটারি ফিলিপ বার্টন। এই সংলাপে বন্দিবিনিময় ও পারস্পরিক আইনি সহায়তা চুক্তি, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সহযোগিতা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, প্রতিরক্ষা, উন্নয়ন সহায়তা, সুশাসন, মানবাধিকার, রোহিঙ্গা সংকট, শান্তিরক্ষা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবসহ বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয় গুরুত্ব পাবে। নির্বাচনের আগে সংলাপটি হতে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে, এতে অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন এবং মানবাধিকার নিয়েও কথা বলবে যুক্তরাজ্য।
প্রায় দুই বছর পর ঢাকা লন্ডন কৌশলগত সংলাপ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর আগে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে লন্ডনে চতুর্থ অংশীদারত্ব সংলাপে অনুষ্ঠিত হয়। ওই সংলাপে এক দেশে বসে অন্য দেশের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে সম্মত হয়েছিল। পাশাপাশি বন্দিবিনিময় ও পারস্পরিক আইনি সহায়তা চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়েও ঢাকা-লন্ডন একমত।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানায়, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলাসহ একাধিক মামলায় দণ্ডিত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রায় দেড় দশক ধরে লন্ডনে অবস্থান করছেন। তাকে দেশে ফেরত পাঠাতে ব্রিটিশ সরকারকে আনুষ্ঠানিক চিঠি দিয়েছিল সরকার। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী আসামি চৌধুরী মঈনুদ্দীন পলাতক থাকায় তার দণ্ড কার্যকর করা যায়নি। তিনি যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন বলে ধারণা বাংলাদেশের। এছাড়াও যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কিছু নাগরিক সেখানে বসে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। বন্দিবিনিময় ও পারস্পরিক আইনি সহায়তা চুক্তি সই হলে সাজাপ্রাপ্ত অপরাধী এবং দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে জড়িত ব্যক্তিদের এনে বিচারের মুখোমুখি করা সম্ভব হবে।
এদিকে গত রোববার ঢাকার ব্রিটিশ হাইকমিশন এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, কৌশলগত সংলাপে যোগ দিতে ঢাকায় আসছেন পররাষ্ট্র সচিব পদমর্যাদার এই ব্রিটিশ কর্মকর্তা। এ সংলাপে দু’দেশের ঐতিহাসিক সম্পর্কের ওপর ভিত্তি করে দ্বিপক্ষীয় একটি আধুনিক অর্থনৈতিক, বাণিজ্য ও নিরাপত্তা অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার অঙ্গীকারের প্রতিফলন হবে। এতে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক, অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক ও উন্নয়নমূলক অংশীদারিত্ব এবং রোহিঙ্গা সংকটসহ অন্যান্য আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিষয় আলোচনা হবে। সেই সঙ্গে এই সংলাপ দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং কপ-২৮ ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় সহায়তা বৃদ্ধির সুযোগ সৃষ্টি করবে। সংলাপে যুক্তরাজ্যের শক্তিশালী অর্থনৈতিক উন্নয়ন বিনিয়োগ প্রস্তাব তুলে ধরা হবে। এছাড়াও ঢাকা সফরে ফিলিপ বার্টন রাজনীতিবিদ, নাগরিক সমাজ, ব্যবসায়ী ও তরুণ নেতৃত্বের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন।