কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা গ্রুপকে দেওয়া ঋণসুবিধা কোনোভাবেই আর ব্যাংকের মূলধনের ২৫ শতাংশের বেশি হতে পারবে না। এ ছাড়া অতিরিক্ত খেলাপি ঋণ থাকলে বড় অঙ্কের ঋণ দেওয়ার ক্ষমতাও হ্রাস করা হয়েছে। এমনই কিছু কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে বড় অঙ্কের ঋণ দিলে সেটা আর ঠিকমতো ফেরত পাওয়া যায় না।
তাদের কাছে এক প্রকার জিম্মি হয়ে থাকে ব্যাংকগুলো। এমন পরিস্থিতি এড়াতেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এমন বিধি-নিষেধ প্রয়োগের সিদ্ধান্ত।
রোববার (১৬ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ’ নতুন এই বিধি-নিষেধসংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠিয়েছে। আগামী ১ এপ্রিল থেকে সব নির্দেশনা কার্যকর হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রদত্ত নতুন বিধি-নিষেধে যা বলা আছে-
১. কোনো ব্যাংকের ৩ শতাংশের বেশি থেকে ৫ শতাংশের কম খেলাপি ঋণ থাকলে ওই ব্যাংক তাদের মোট ঋণের ৪৬ শতাংশ বড় ঋণ দিতে পারবে। এ ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোর ঋণ বিতরণের ক্ষমতা ১০ শতাংশ কমানো হয়েছে। আগের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী মোট ঋণের ৫ শতাংশ পর্যন্ত খেলাপি ঋণ থাকলে ৫৬ শতাংশ বড় অঙ্কের ঋণ দিতে পারত।
২. পাঁচ শতাংশের বেশি থেকে ১০ শতাংশের কম খেলাপি ঋণ থাকলে মোট ঋণের ৪২ শতাংশ বড় অঙ্কের ঋণ দিতে পারবে ব্যাংকগুলো। যেখানে আগে এই ক্ষেত্রে বড় অঙ্কের ঋণ দেওয়া যেত ৫২ শতাংশ।
৩. ১০ শতাংশের বেশি থেকে ১৫ শতাংশের কম খেলাপি ঋণ থাকলে ৩৮ শতাংশ বড় অঙ্কের ঋণ দিতে পারবে। আগে এ ক্ষেত্রে ৪৮ শতাংশ বড় অঙ্কের ঋণ দেওয়া যেত।
৪. ১৫ শতাংশের বেশি থেকে ২০ শতাংশের কম খেলাপি ঋণ থাকলে ৩৪ শতাংশ বড় অঙ্কের ঋণ দেওয়া যাবে। আগের নিয়মে যা দেওয়া যেত ৪৪ শতাংশ।
৫. নতুন নিয়মে ২০ শতাংশের বেশি খেলাপি ঋণ থাকলে ৩০ শতাংশ বড় অঙ্কের ঋণ দেওয়া যাবে। আগের নিয়মে এ ক্ষেত্রে ৪০ শতাংশ বড় অঙ্কের ঋণ দেওয়া যেত।
এ ছাড়া আগের নিয়মে কোনো ব্যাংকের মূলধনের ২০ শতাংশের পরিবর্তে এখন থেকে বড় অঙ্কের ঋণ দেওয়া যাবে ১০ শতাংশ। একক কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা গ্রুপকে প্রদত্ত ঋণসুবিধা কোনোভাবেই ব্যাংকের মূলধনের ২৫ শতাংশের বেশি হতে পারবে না বলেও নির্দেশনায় উল্লেখ আছে, যা আগে ছিল ৩৫ শতাংশ।