ক্যারিয়ারে লিওনেল মেসি খেলেছেন ৯০০ এর বেশি ম্যাচ। এর মাঝে কেবল ৮ বার প্রথমার্ধের আগেই মাঠ ছেড়ে উঠে গিয়েছেন তিনি। ২০১৮ সালের অক্টোবরের পর এমন ঘটনা আর ঘটেনি। তবে টরোন্টো এফসির বিপক্ষে সেটাই হলো। অস্বস্তি নিয়ে মাঠ ছেড়েছেন লিও। পরে সাইডবেঞ্চ থেকে উঠে একেবারে ড্রেসিংরুমেই চলে গেলেন। ফুটবল প্রতিভার জন্য ভিনগ্রহের খেলোয়াড় বললেও মেসি যে রক্তে মাংসের মানুষ তারই যেন নমুনা ছিল আজকের ম্যাচ।
তবে, মেসির থাকাটাই যে দলের জন্য বড় কিছু সেটা আরও একবার প্রমাণিত হল আজ। আগের ম্যাচেই আটালান্টা এফসির বিপক্ষে ৫-২ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছিল ইন্টার মায়ামি। সেদিনও মাঠে ছিলেন না মেসি। আজ ফিরলেন। খেললেন মোটে ৩৭ মিনিট। তবে অতটুকেই যেন জয়ের প্রেরণা দিয়ে গিয়েছেন এই আর্জেন্টাইন খুদে জাদুকর। টরোন্টোর বিপক্ষে মায়ামির জয় এসেছে ৪-০ গোলে।
মায়ামির ঘরের মাঠ ড্রাইভ পিংক স্টেডিয়ামের ম্যাচটা অবশ্য বিশেষ কিছু ছিল দুজনের জন্য। টরোন্টোর ভিক্টর ভাস্কেজ আর মায়ামির লিওনেল মেসি ছিলেন শৈশবের বন্ধু। বার্সেলোনা একাডেমি থেকে ফুটবল দীক্ষা নিয়েছিলেন দুজনে। ২০১১ সালের পর থেকে একসাথে মাঠ ভাগাভাগি করা হয়নি দুই বন্ধুর। আজ আবার এক হবার কথা ছিল দুজনের। তবে ম্যাচের ১২ মিনিটেই ইনজুরিতে পড়ে মাঠ ছাড়েন ভাস্কেজ। আর ৩৭ মিনিটে মেসিও ছেড়েছেন মাঠ।
তবে এসবের বাইরে মায়ামির সময় কেটেছে ভালই। আর্জেন্টিনা থেকে উড়িয়ে আনা ফাকুন্দো ফারিয়াস আরও একবার ত্রাতা হয়েছেন প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে। ডান প্রান্ত থেকে ক্রস বল গ্রিপে আনতে ব্যর্থ হয়েছিলেন প্রতিপক্ষ গোলরক্ষক। ভেসে আসা সেই বলে জোরালো ভলিতে গোলের খাতা খোলেন ফারিয়াস।
অবশ্য তারও আগে ম্যাচে এগিয়ে যাবার প্রথম সুযোগ পেয়েছিল টরোন্টো। স্ট্রাইকার ডিআন্দ্রে কারের প্রথম প্রচেষ্টা ফিরিয়েছেন মায়ামি গোলরক্ষক ড্রেক ক্যালেন্ডার। ফিরতি প্রচেষ্টা ফেরত আসে গোলবার থেকে। পুরো ম্যাচে এটাই একমাত্র না তাদের জন্য। ম্যাচের ৮২ মিনিটে আরও একবার বল ফিরে আসে গোলবার থেকে।
তবে তার আগেই টরোন্টোকে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করেছিলেন রবার্ট টেইলর। মেসির বদলি হিসেবে মাঠে নেমেছিলেন। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই করলেন দারুণ এক গোল। সেই গোলে মেসিকেই যেন স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন তিনি। বল পেয়ে ডিবক্সের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে গিয়েছেন। ডিফেন্ডারদের মাঝে ফাঁকা জায়গা দিয়ে বল পাঠিয়েছেন জালে। দারুণ সেই গোলটা নিশ্চয়ই পরে বহুবার দেখতে চাইবেন এই তরুণ।
ম্যাচের তৃতীয় গোল পেয়েছেন বেঞ্জামিন ক্রেমাশ্চি। সেটাও ওই টেইলরের বাড়ানো বলে। আর খেলা শেষের ঠিক আগে চতুর্থ গোলটাও করেছেন সেই টেইলরই। চিপ করা বল দখলে নিয়ে জোরালো শটে টরোন্টোর গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন তিনি। মায়ামি ম্যাচ শেষ করে ৪-০ গোলের বড় জয় দিয়ে।