আগামী ১ ফেব্রুয়ারি মোদী সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদের চতুর্থ বাজেট ঘোষণা করতে চলেছেন ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। ওমিক্রন সংক্রমণের জেরে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ায় নতুন সংকটের মধ্যেই এ বাজেট ঘোষণা করবেন তিনি। তার ওপর ফেব্রুয়ারিতেই রয়েছে উত্তর প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচন, আর ২০২৪ সালে আসছে জাতীয় নির্বাচনের পরীক্ষা। ফলে অনেক হিসাব-নিকাশ করে এবারের বাজেট ঘোষণা করতে হচ্ছে মোদী সরকারকে।
ওমিক্রন ঠেকাতে সাম্প্রতিক বিধিনিষেধের কারণে চলতি অর্থবছরে ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আগের অনুমানের চেয়ে কিছুটা কম হতে পারে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। তবুও প্রথম পূর্বাভাসের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এ বছর ভারতে প্রায় ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে বলে আশা করছে সংস্থাটি। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এর হার দাঁড়াতে পারে ৭ দশমিক ১ শতাংশ।
নতুন অর্থবছরে ভারত সরকার ব্যয় বাড়াবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা দেশটির সামগ্রিক অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এটি বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়তা করবে। আইএমএফের ফার্স্ট ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর (এফডিএমডি) গীতা গোপীনাথও এমনটিই মনে করেন।
নতুন বাজেটে ভারত সরকার সম্পদ নগদীকরণ কর্মসূচির পাশাপাশি অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ অব্যাহত রাখবে বলে আশা করছেন তিনি। সম্প্রতি ব্লুমবার্গ-কুইন্টকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আইএমএফের এ অর্থনীতিবিদ বলেছেন, ভারত সরকারের উচিত অসম অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের বিষয়টি মাথায় রেখে গ্রামীণ কর্মসংস্থানে পর্যাপ্ত অর্থায়ন ও মার্চ মাসের পরেও বিনামূল্যে খাদ্য কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়া।
সম্প্রতি ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার বিনামূল্যে খাদ্য কর্মসূচি ‘প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ আন্না যোজনা’র মেয়াদ ২০২২ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে।
গীতা গোপীনাথ আশা করেন, নতুন বাজেটে ভারত সরকার স্বাস্থ্যসেবা ব্যয়ে আরও বেশি মনোযোগ দেবে ও শিক্ষাখাতে ব্যয় বাড়াবে। তার মতে, মোদী সরকারের উচিত রাজস্ব ঘাটতির জন্য একটি বিশ্বাসযোগ্য মধ্যমেয়াদী লক্ষ্যের কথা বলা, যা যুক্তরাষ্ট্রের মতো উন্নত অর্থনীতিগুলো সুদের হার বাড়ানোর মুহূর্তেও খরচ সীমিত রাখতে সাহায্য করবে।
আইএমএফের এফডিএমডি আরও বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র সুদের হার বাড়ানোর পাশাপাশি ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার প্রভাবে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি ভারতের মতো উদীয়মান অর্থনীতিগুলোর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সূত্র: দ্য ইকোনমিক টাইমস