মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে বিতর্কিত ও অবমাননাকর মন্তব্য করায় তেলেঙ্গানার বিজেপি বিধায়ক টি. রাজা সিংকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
হায়দরাবাদের সাউথ জোনের পুলিশ উপকমিশনার পি সাই চৈতন্য বলেন, ধর্মীয় বিশ্বাসকে অবমাননাসংক্রান্ত আইনের ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, মহানবী সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্যের ভিডিও প্রকাশের পর বিধায়ককে গ্রেপ্তারের দাবিতে সোমবার রাতে শহরের পুলিশ কমিশনার সিভি আনন্দের কার্যালয় এবং হায়দরাবাদের অন্যান্য অংশে তীব্র বিক্ষোভ শুরু হয়।
বিক্ষোভকারীরা বলেন, সিং সম্প্রদায়ের অনুভূতিতে আঘাত করেছেন এবং তাকে অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন। পরে তাকে হেফাজতে নিয়ে কয়েকটি থানায় পাঠানো হয়।
গোসামহলের বিধায়ক রাজা সিং গত শুক্রবার একটি ধর্মীয় কৌতূকের অনুষ্ঠান বানচাল করে দেন। সঞ্চালক মনোয়ার ফারুকীর অনুষ্ঠান ভেঙে দিতে অর্ধশত নেতাকর্মী নিয়ে সেখানে হামলা চালান তিনি।
এর আগে ইসলাম ধর্মের নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্যের জেরে গত ৯ জুন বিজেপি মুখপাত্র নূপুর শর্মা এবং অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়।
দিল্লি বিজেপির মিডিয়া ইউনিটের বহিষ্কৃত প্রধান নবীন কুমার জিন্দাল, সাংবাদিক সাবা নকভি, হিন্দু মহাসভার আধিকারিক পূজা শাকুন পান্ডে, রাজস্থানের মওলানা মুফতি নাদিম এবং পিস পার্টির প্রধান মুখপাত্র শাদাব চৌহানসহ আটজনের বিরুদ্ধে এফআইআর নথিভুক্ত করে দিল্লি পুলিশের বিশেষ সেল।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাদের পোস্টগুলো ভারতে প্রধান দুটি ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টি করতে পারে এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করতে পারে বলে উল্লেখ করে দিল্লি পুলিশের বিশেষ সেল।
গত ৯ জুন মহানবীকে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করার দায়ে বিজেপি নেতা হর্ষিত শ্রীবাস্তবকে গ্রেপ্তার করে দেশটির উত্তর প্রদেশের কানপুর পুলিশ। তিনি টুইটারে মহানবীকে নিয়ে অবমাননাকর পোস্ট করেন।
হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে বিজেপি মুখপাত্র নূপুর শর্মা ও নবীন জিন্দালের অবমাননাকর মন্তব্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া আসে মধ্যপ্রাচ্যের সব দেশ থেকে। নিজ দেশেও হয় আন্দোলন, প্রতিবাদ।
সেই আগুন নেভাতে জুন মাসের শেষের দিকে যখন হিমশিম খেতে হয়েছে মোদি সরকার ও তার দলকে, এমন সময় তুরস্ক ও মালয়েশিয়ার কিছুটা নীরবতা তাদের দেয় সান্ত্বনা।
তবে এর বাইরেও ভারতের শ্রমবাজারের বড় একটা অংশ থাকে যেসব দেশে তার মধ্যে সৌদি আরব, ওমান, বাহরাইন, জর্ডান ও লিবিয়ায় প্রতিবাদ করা হয়।
বাদ যায়নি আফগানিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান এবং ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা কাতার, কুয়েত ও ইরানও। সেসব দেশেরও ক্ষোভ সামলাতে হয়েছে ভারতকে।
এসব দেশে ভারতের বিরুদ্ধে বিক্ষোভও হয়। মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কিছু সংবাদমাধ্যম এবং পশ্চিমা সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, সেসব দেশে ভারতীয় পণ্য বর্জনের ঘোষণাও দেন মুসলমানরা।