আন্তর্জাতিক ডেস্ক : নতুন কৃষি আইনের প্রতিবাদে বিক্ষোভরত কৃষকেরা ভারত জুড়ে অবরোধ বা বনধ ডেকেছেন। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় বেলা ১১টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত এই অবরোধ চলবে। এই সময়ে বন্ধ থাকবে পরিবহন সেবা, অফিস ও দোকানপাট। এছাড়া কৃষকেরা মহাসড়ক ও টোল প্লাজা অবরোধ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে কৃষকেরা অ্যাম্বুলেন্সের মতো জরুরি সেবা নির্বিঘ্নে চলতে দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। ভারতীয় সম্প্রচারমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
নতুন কৃষি আইনের প্রতিবাদে দিল্লি ঘেরাও কর্মসূচিতে কৃষকের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। দিল্লির সীমান্ত জুড়ে ইতোমধ্যে অবস্থান নিয়েছে লাখ লাখ কৃষক। সরকার কৃষি পণ্যের সর্বনিম্ন মূল্য নিয়ে বারবার মৌখিক আশ্বাস দিলেও তা মানতে রাজি নয় কৃষকেরা। এমন প্রেক্ষাপটে শনিবার উভয় পক্ষের পঞ্চম দফার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে সরকার কৃষকদের লিখিতভাবে আইন সংশোধনের প্রস্তাব দেয়। তবে তা মানতে রাজি নয় কৃষকেরা। তাদের দাবি নতুন কৃষি আইন বাতিল করতে হবে।
কৃষকদের ডাকা মঙ্গলবারের ভারত বনধ কর্মসূচিতে সমর্থন দিয়েছে অন্তত ১৫টি বিরোধী রাজনৈতিক দল। ব্যাংক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে তারা কৃষকদের আন্দোলনে সংহতি জানালেও বনধ কর্মসূচিতে শামিল হবে না। কালো ব্যাচ পরে দায়িত্ব পালন করবে তারা। তবে কমঘণ্টা শুরুর আগে এবং পরে বিক্ষোভ করারও ঘোষণা দিয়েছে তারা। এছাড়া প্রায় সব বাণিজ্যিক পরিবহন ও ট্রাক ইউনিয়নও অবরোধ কর্মসূচিতে সমর্থন জানিয়েছে।
দিল্লিতে অবস্থান নেওয়া কৃষকদের বড় অংশই হরিয়ানা ও রাজস্থান রাজ্যের। কৃষকদের অবরোধ কর্মসূচিতে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে দিল্লি ও হরিয়ানা পুলিশ আলাদাভাবে ভ্রমণ সতর্কতা জারি করেছে। এছাড়া কৃষক আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া কংগ্রেস শাসিত পাঞ্জাব পুরোপুরি অচল হয়ে পড়বে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, মোদি সরকার সম্প্রতি কৃষি আইনে বদল করে করপোরেট চাষ ও কৃষকদের কাছ থেকে যত খুশি ফসল কেনার অনমুতি দিয়েছে। করপোরেশনগুলি কৃষকদের আগাম টাকা দিয়ে কী চাষ করতে হবে সেটাও বলে দিতে পারবে। কৃষকদের ধারণা, এর ফলে তাদের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হবে। তারা শেষ পর্যন্ত করপোরেশনের দাসে পরিণত হবেন। সুবিধা হবে বড় সংস্থাগুলির। কয়েক বছরের মধ্যে কৃষিতে তাদের মনোপলি প্রতিষ্ঠা হবে।