অভিবাসন নীতি নিয়ে বিরোধের জেরে ভেঙে গেছে নেদারল্যান্ডসের জোট সরকার। ফলে দেশটিতে নতুন করে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করতে হবে।
গতকাল শুক্রবার শরণার্থী সমস্যার মোকাবিলা করতে বৈঠক ডেকেছিল সরকার। কিন্তু শরিক দলগুলির মধ্যে মতবিরোধের জেরে নেদারল্যান্ডস সরকার ভেঙে গেল।
বৈঠক শেষে দেশটির প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট জানান, শরিক দলের মধ্যে মতবিরোধ আর সামাল দেওয়া যাচ্ছে না। তাই সরকার টিকিয়ে রাখা আর সম্ভব হয়। খুব তাড়াতাড়ি প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ দিবেন জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের নভেম্বর মাসেই নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল নেদারল্যান্ডসে।
নেদারল্যান্ডসে শরণার্থীদের সংখ্যা কমিয়ে আনার প্রস্তাব দিয়েছিল প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটের রক্ষণশীল ভিভিডি পার্টি। কিন্তু এতে চার দলীয় জোটের দুই দল তা মানতে অস্বীকৃতি জানালে এ ঘটনা ঘটে।
সবচেয়ে বেশিদিন ধরে নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব সামলেছেন মার্ক রুট। কিন্তু সাম্প্রতিককালে শরণার্থী সমস্যা তুঙ্গে উঠেছে সেদেশে। রুটের সিদ্ধান্ত ছিল, শরণার্থীদেরকে তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া যাবে না। গত বছরই নেদারল্যান্ডসের শরণার্থী শিবিরের মাত্রাতিরিক্ত ভিড় নিয়ে প্রচুর বিতর্ক হয়েছিল। সেই কারণেই শরণার্থীদের দেশে ঢোকা নিয়ে কড়াকড়ি বাড়ানোর পক্ষে প্রস্তাব করেন নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী।
কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর এই নীতি মানতে নারাজ সরকারের শরিক দলগুলি। শুক্রবারের বৈঠকেই সরকারের শরিক চার দলের মধ্যে বিরোধ তুঙ্গে ওঠে। বৈঠক শেষ হওয়ার পরেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের সরকারে কোনও পক্ষই একমত হতে পারছেন না। তাই সরকার ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যেই আমি রাজার কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেব।”
জানা গেছে, শনিবারই রাজার সঙ্গে দেখা করে সরকারিভাবে পদত্যাগপত্র জমা দেবেন নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসেই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন মার্ক রুট। তবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায় সরকার গঠন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অচলাবস্থা ছিল দেশটিতে। পরে দর কষাকষির পরে চার দলের সমর্থনে সরকার গঠন করা হয়। আচমকাই সরকার পড়ে যাওয়ার ফলে আপাতত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের হাতে দেশটির দায়িত্ব থাকবে। নভেম্বর মাসের আগে ভোট করানো সম্ভব নয় বলেই জানিয়ে দিয়েছে দেশটির নির্বাচন কমিশন।
সূত্র : বিবিসি।