ভোলা প্রতিনিধি : ভোলায় চোরাই গরুর মাংস সহ চোর চক্রের সদস্য মোঃ ইউসুফ (৪০) কে এলাকাবাসী হাতে নাতে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন। ইউসুফ পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের করম আলী ব্যাপারী বাড়ির বাসিন্দা মোঃ সিরাজ এর ছেলে ।
সোমবার (১১ নভেম্বর) ভোর রাত ৩ টা ৪৫ মিনিটের সময় গরুর মালিক নুরুল ইসলাম গরু না দেখে খোজা খোজি করার একপর্যায়ে ইউসুফের অটোটি থেকে রক্ত পড়তে দেখে স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ নুরু ও রাসেল। তার গাড়িতে কিসের রক্ত জিজ্ঞেস করলে সে সঠিক উত্তর দিতে না পারায় তারা গাড়ি তল্লাশি করে গরুর মাংস, পেটি ও পায়া দেখতে পায় তারা। পরবর্তীতে তাদের ডাক চিৎকারে স্থানীয় লোকজন ছুটে এসে ইউসুফকে আটক করে। পুলিশ কে জানালে পুলিশ এসে তাকে থানায় নিয়ে যায়।
গরুর মালিক নুরুল ইসলাম বলেন, আমি ২ সপ্তাহ আগে ১ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়ে ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা দিয়ে চরমোনাই থেকে এ গরুটি কিনে আনি। গরুটি এনে ৬ হাজার টাকার চিকিৎসা ও করেছি। গভীর রাতে গরুর গলার শিকল ভেঙ্গে গরুটি চুরি করে নিয়ে যায়। আমি আমার গরুটি চাই।
নুরুল ইসলাম এর ছোট ভাই বলেন, আমরা গরু না পেয়ে খোঁজ করতেছি এ সময় দেখি একটি সিএনজি থেকে রক্ত পড়ছে। তখন আমি সেই সিএনজি দাঁড়াতে বললে সেটি আমাকে বারি দিয়ে ফেলে দিয়ে চলে যায়। পিছনে দেখি আটো রিক্সাটি থেকে রক্ত পড়ছে। তখন আটোটি দাঁড় করিয়ে দেখি গরুর মাংস, পেটি ও পায়া চালক ইউসুফ লুঙ্গি দিয়ে ডেকে রাখছে। তখন আমরা তাকে আটক করি। তার দেওয়া তথ্য মতে মিরাজ এর শশুরের ঘরের দরজায় গিয়ে দেখি সেখানে রক্ত।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, এই ইউসুফ অত্র এলাকার সকল গরু চুরির ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত। এদের বড় একটি সিন্ডিকেট রয়েছে এই সিন্ডিকেটের মূল হোতা সাবেক ইউপি মেম্বার ইকবাল হাওলাদার। ইকবাল হাওলাদার নেতৃত্বে পূর্ব ইলিশা ও পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়ন জুড়ে গরু চুরির একটি বিশাল সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। ইউসুফের ফোনে গতকাল রাত আটটা থেকে তাকে আটক করা পর্যন্ত ইকবাল হাওলাদারের ৪৮টি কল রয়েছে। ইউসুফকে আটক করার পর ইকবাল হাওলাদার তাৎক্ষণিক এসে ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে ইউসুফকে ছাড়িয়ে নিয়ে যেতে চেয়েছিল, কিন্তু আমরা তা হতে দেইনি।
একই এলাকার বাসিন্দা মোঃ আলমগীর হোসেন জানান, গত ২০ দিন আমার একটি গরু চুরি করে নিয়ে যায়। কামাল হোসেন বলেন আমার একটি গরু ১ মাস আগে নিয়ে গেছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইউসুফের কাছে জানতে চাইলে সে বলেন, ভোর রাত্রে আমার গাড়িতে পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের ফরাজী বাড়ির কালু রাড়ির ছেলে মিরাজ আমার গাড়িতে এ গুলো উঠিয়ে দিয়ে আমাকে বলেছে ইউনিয়ন পরিষদের সামনে একজন বসে আছে তাকে দিতে।
অভিযোগের বিষয়ে ইকবাল হাওলাদার এর কাছে জানতে চাইলে, তিনি দূরে আছেন পরে কথা বলবেন বলে মোবাইল ফোনটি কেটে দেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ হাসনাইন পারভেজ বলেন, গরুর মাংস, পেটি ও পায়া সহ একজন কে আটক করে পুলিশ কে জানালে পুলিশের একটি টিম আটককৃত ইউসুফ কে থানায় নিয়ে আসা হয়। এ বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন।